নিজস্ব প্রতিবেদক:
নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে সার্চ কমিটি প্রস্তুত করার জন্য নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলসমূহের সঙ্গে রাষ্ট্রপতির সংলাপের উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছেন আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
একইসঙ্গে তিনি আমন্ত্রিত রাজনৈতিক দলগুলোকে এই সংলাপে অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে একটি নিরপেক্ষ, শক্তিশালী ও কার্যকর নির্বাচন কমিশন গঠনে দায়িত্বশীল ভূমিকা পালনের জন্য সবার প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
মঙ্গলবার বিকালে গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
বিবৃতিতে ওবায়দুল কাদের বলেন, আগামী ফেব্রুয়ারি মাসে বর্তমান নির্বাচন কমিশনের মেয়াদ শেষ হবে। আওয়ামী লীগ সংবিধান সম্মতভাবে একটি স্বাধীন ও কার্যকর নির্বাচন কমিশন গঠনে রাষ্ট্রপতির উদ্যোগকে সহায়তা প্রদান করতে বদ্ধপরিকর এবং অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর সংবিধান ও আইনসম্মত ভূমিকা প্রত্যাশা করে।
তিনি বলেন, রাষ্ট্রপতি ইতোমধ্যে একটি নিরপেক্ষ নির্বাচন কমিশন গঠনের লক্ষ্যে আইনসম্মতভাবে সার্চ কমিটি গঠনের জন্য নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলের সঙ্গে ধারাবাহিক সংলাপ শুরু করেছেন। আমাদের পবিত্র সংবিধানের বিধান অনুযায়ী রাষ্ট্রপতিকে এ লক্ষ্যে ক্ষমতা অর্পণ করা হয়েছে। আমরা দেখেছি, রাষ্ট্রপতি ইতোপূর্বে ২০১২ এবং ২০১৭ সালে সংবিধানের প্রদত্ত ক্ষমতাবলে কর্তব্য পালন করেছেন এবং যথাযথভাবে নির্বাচন কমিশন গঠন করেছেন। নির্বাচন কমিশন গঠন নিয়ে রাষ্ট্রপতি এবারও সব রাজনৈতিক দল এবং সংশ্লিষ্টদের মতামত গ্রহণের শুভ উদ্যোগ গ্রহণ করেছেন। আওয়ামী লীগ রাষ্ট্রপতির এই মহতী উদ্যোগকে স্বাগত এবং সমর্থন জানায়।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক বলেন, আজকে রাষ্ট্রপতি যখন নিবন্ধিত সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা শুরুর একটি গণতান্ত্রিক ও সাংবিধানিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে চলেছেন। ঠিক সেই মুহূর্তে দেশের চিহ্নিত রাজনৈতিক অপশক্তি চিরাচরিতভাবে দেশের প্রচলিত গণতান্ত্রিক রীতি ও সংবিধানের বিপরীতে অবস্থান করে দেশের মানুষকে বিভ্রান্ত করার ঘৃণ্য অপচেষ্টায় লিপ্ত রয়েছে। দেশের জনগণ জানে, ত্রিশ লাখ শহিদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত পবিত্র সংবিধানকে হত্যা করেই বিএনপির জন্ম হয়েছিল। বিএনপি কখনো নির্বাচন, সংবিধান ও প্রচলিত গণতান্ত্রিক রীতি-নীতিকে বিশ্বাস করে না। অতীতের ন্যায় তারা চায় হত্যা-ক্যু-ষড়যন্ত্র ও চক্রান্তের মাধ্যমে ক্ষমতা দখল করতে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশের জনগণ ‘সাদেক আলী-আজিজ মার্কা’ নির্বাচন কমিশন গঠনের কথা ভুলে যায়নি। রাজনৈতিক দলের সঙ্গে কোনো প্রকার আলাপ-আলোচনা ব্যতীত সংবিধান ও গণতান্ত্রিক রীতি-নীতি অনুসরণ না করেই তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া তার আজ্ঞাবহ লোক দিয়েই নির্বাচন কমিশন গঠন করেছিল। জনগণ ঘৃণাভরে বিএনপির সেই ষড়যন্ত্র প্রতিহত করে এবং বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বের বাংলার মানুষ ভোটের অধিকার পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করে। বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনা ২০০৯ সালে আইন প্রণয়নের মাধ্যমে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশনকে একটি স্বতন্ত্র ও সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠানে পরিণত করেন।
তিনি আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার আমলেই ২০১২ এবং ২০১৭ সালে সব রাজনৈতিক দলের সঙ্গে আলাপ-আলোচনা করে সবার ঐক্যমতের ভিত্তিতে সংবিধান সম্মতভাবে নির্বাচন কমিশন গঠনের অনন্য নজির স্থাপিত হয়। বিএনপি কখনো সংবিধান, গণতান্ত্রিক রীতি-নীতি ও নির্বাচন প্রক্রিয়ায় বিশ্বাস করে না। বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল প্রকাশ্যে বলেছিলেন- নির্বাচন কমিশন ও নির্বাচন প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করতেই বিএনপি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমরা আশা করি- একটি গ্রহণযোগ্য নির্বাচন কমিশন গঠনের ক্ষেত্রে গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের যে দায়িত্ব ও কর্তব্য রয়েছে বিএনপি তা অনুসরণ করবে। একইসঙ্গে বিভ্রান্তিকর মন্তব্য ও অপপ্রচারের নীতি পরিহার করে গণতান্ত্রিক রীতি-নীতি এবং সুস্থ রাজনীতির ধারায় ফিরে আসবে।
বিএসডি/এসএফ