আন্তর্জাতিক ডেস্ক
পদত্যাগ করতে চান সুদানের প্রধানমন্ত্রী আবদাল্লাহ হামদক। বুধবার (২২ ডিসেম্বর) যেকোনো সময় পদ ছাড়তে পারেন তিনি। আফ্রিকার এই দেশটির জাতীয় পর্যায়ের বেশ কয়েকজন রাজনীতিক ও বুদ্ধিজীবীকে একথা জানিয়েছেন তিনি।
প্রধানমন্ত্রী আবদাল্লাহ হামদকের ঘনিষ্ঠ দু’টি সূত্র মঙ্গলবার (২১ ডিসেম্বর) এই তথ্য জানিয়েছে বলে এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
এর আগে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা দখলে নেওয়া সুদানের সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহানের সঙ্গে ক্ষমতাচ্যুত বেসামরিক সরকারের রাজনৈতিক চুক্তি স্বাক্ষরের পর আব্দাল্লাহ হামদককে গত ২১ নভেম্বর প্রধানমন্ত্রী পদে পুনর্বহাল করা হয়েছিল। রাজধানী খার্তুমে প্রেসিডেন্ট প্রাসাদে স্বাক্ষরিত ১৪ শর্ত বিশিষ্ট রাজনৈতিক চুক্তি অনুযায়ী তাকে ক্ষমতা ফিরিয়ে দেওয়া হয়।
তবে সামরিক অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর সেনাবাহিনীর সঙ্গে চুক্তি করে ফের ক্ষমতা নেওয়ার পর বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছিলেন আবদাল্লাহ হামদক। যদিও সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহানের সঙ্গে ক্ষমতাচ্যুত বেসামরিক সরকারের চুক্তিতে সুদানের বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দলও অংশ নিয়েছিল।
মূলত রাজনৈতিক চুক্তি করে অভ্যুত্থানকারীদের কাছ থেকে ক্ষমতা গ্রহণের পর থেকেই বিরোধীদের আন্দোলনের মুখে ছিলেন সুদানের প্রধানমন্ত্রী। হামদকের ক্ষমতায় ফেরার সিদ্ধান্ত ও সামরিক নেতৃত্বের বিরুদ্ধে বিক্ষোভের অংশ হিসেবে গত শনিবার প্রেসিডেন্ট প্রাসাদের সামনে বিক্ষোভ করেন হাজার হাজার মানুষ।
গত ২৫ অক্টোবর অভ্যুত্থান ঘটিয়ে ক্ষমতা দখলে নেওয়ার পর দেশটির প্রধানমন্ত্রী আব্দাল্লাহ হামদককে আটক করে সুদানের সেনাবাহিনী। সুদানের সামরিক বাহিনীর প্রধান জেনারেল আবদেল ফাত্তাহ আল-বুরহানের নেতৃত্বে এই ক্ষমতা দখলের পর থেকেই দেশটির হাজার হাজার নাগরিক প্রায় প্রতিদিনই বিক্ষোভে অংশ নেন।
রয়টার্স বলছে, বিক্ষোভে পিছু হটে আবদাল্লাহ হামদকের হাতেই প্রধানমন্ত্রীত্ব ফিরিয়ে দেওয়ার আগে সামরিক বাহিনীর দমন-পীড়নে সুদানে ৪৭ জন নিহত হন। আর গত শনিবার সরকার বিরোধী বিক্ষোভে নিহত হন ২ জন। এছাড়া অভ্যুত্থানবিরোধী বিক্ষোভের সময় সুদানের ১৩ নারী ও মেয়ে গণধর্ষণের শিকার হয়েছিলেন বলে মঙ্গলবার এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে জাতিসংঘ।
প্রধানমন্ত্রী আবদাল্লাহ হামদকের ঘনিষ্ঠ ওই দু’টি সূত্র রয়টার্সকে জানিয়েছেন, সামরিক বাহিনীর সঙ্গে স্বাক্ষরিত চুক্তি কার্যকর এবং সকলের রাজনৈতিক সমর্থন পেলেই কেবল প্রধানমন্ত্রীর পদে থাকতে চান বলে জানিয়েছেন হামদক। কারণ রাজনৈতিক বন্দিদের মুক্তি, মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত এবং হামদককে স্বাধীনভাবে মন্ত্রিসভা গঠনের সুযোগ দিতে ওই চুক্তিতে সামরিক বাহিনীর প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছে।
সূত্রগুলো আরও জানিয়েছে, পদত্যাগের ইচ্ছা প্রকাশের পর সুদানের জাতীয় পর্যায়ের রাজনীতিক ও বুদ্ধিজীবীরা প্রধানমন্ত্রী হামদককে দায়িত্ব চালিয়ে যাওয়ার অনুরোধ জানিয়েছিলেন। তবে হামদক তার পদ ছাড়ার বিষয়টিই জোরালোভাবে পুনর্ব্যাক্ত করেন।
এসএ