ভৈরব (কিশোরগঞ্জ) প্রতিনিধি:
কিশোরগঞ্জের ভৈরবে ভুল চিকিৎসায় জুয়েল মিয়া (৩৩) নামের এক ব্যবসায়ীর মৃত্যুর ঘটনায় দুই চিকিৎসক ও তাদের সহকারীকে দুই বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এছাড়া প্রত্যেককে ৫ লাখ টাকা করে জরিমানা, অনাদায়ে এক বছরের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়েছে।
এছাড়া হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোশারফ হোসেন ও পরিচালক হিরন মিয়াকে ৫ লাখ টাকা করে জরিমানা করা হয়। অনাদায়ে দুজনের এক বছরের জেল দিয়েছেন আদালত।
১৩ ডিসেম্বর কিশোরগঞ্জের তৃতীয় অতিরিক্ত জেলা জজ জান্নাতুল ফেরদৌস ইবনে হক এ রায় প্রদান করেন। তবে বিষয়টি বুধবার জানাজানি হয়।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- ডা. মো. কামরুজ্জামান আজাদ, ডা. মো. ইমরান ও তাদের সহকারী গৌরাঙ্গ সাহা।
আদালতে চারজন আসামি উপস্থিত থাকলেও ডা. কামরুজ্জামান আজাদ উপস্থিত ছিলেন না। বিচারক রায় ঘোষণার পর ডাক্তার ইমরান ও তাদের সহকারী গৌরাঙ্গ সাহাকে জেলহাজতে প্রেরণ করেন।
অপর দুই আসামি মোশারফ হোসেন ও হিরন মিয়া এক মাসের মধ্যে তাদের জরিমানার ১০ লাখ টাকা দেওয়ার অঙ্গীকার করে আদালত থেকে ছাড়া পেয়েছেন। আদালত পলাতক ডা. কামরুজ্জামান আজাদের বিরুদ্ধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি করেছেন।
মামলা সূত্রে জানা গেছে, ২০১৯ সালের ৫ জুলাই রাতে ভৈরবের পোলট্রি ব্যবসায়ী মো. জুয়েল মিয়া তার হাতের অপারেশন করতে স্থানীয় ভৈরব ট্রমা অ্যান্ড জেনারেল হাসপাতালে যান। ওই হাসপাতালে সংশ্লিষ্ট এনেস্থেসিয়া ডাক্তার ছাড়া সহকারী গৌরাঙ্গ সাহাকে দিয়ে এনেস্থেসিয়া দেন।
ডাক্তার কামরুজ্জামান আজাদ ৩০ হাজার টাকা চুক্তিতে অপারেশনটি করেছিলেন। অপারেশনের সময় অন্যরা সহযোগিতা করেন। এ সময় এনেস্থেসিয়ার ভুলে জুয়েল মিয়া মারা যান।
পরে জুয়েলের ভগিনীপতি মো. কামাল মিয়া বাদী হয়ে ভৈরব থানায় ৫ জনকে আসামি করে একটি মামলা করেন। পুলিশ ঘটনা তদন্ত করে ৫ জনের বিরুদ্ধে চার্জশিট দেয় আদালতে। আদালতে মামলার বিচার শেষে দীর্ঘ আড়াই বছর পর বিচারক উল্লেখিত রায় প্রদান করেন।
মামলার বাদী ও নিহতের ভগিনীপতি মো. কামাল মিয়া জানান, আদালতের রায়ে আমি ন্যায়বিচার পেয়েছি। নিহত জুয়েলের দুটি সন্তান আছে। মামলার জরিমানার টাকা পেলে তার দুটি শিশু ভালোভাবে বেঁচে থাকতে পারবে।
তিনি বলেন, সেদিন ডাক্তারদের ভুলের কারণে জুয়েল মারা যান।
বিএসডি/এসএফ