দৌলতদিয়া ঘাটসংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ফেরিঘাট থেকে প্রায় চার কিলোমিটার পেছনে বাংলাদেশ হ্যাচারির কাছ থেকে ঢাকা-খুলনা মহাসড়ক চার লেনে বিভক্ত। দক্ষিণাঞ্চল থেকে আসা ঢাকামুখী যানবাহন সড়ক বিভাজকের বাঁ পাশ দিয়ে ফেরিঘাটে অগ্রসর হয়। সড়ক বিভাজকের ডান পাশে দক্ষিণাঞ্চলমুখী যানবাহন যাতায়াত করে। ঢাকামুখী যানবাহন সাধারণত দুটি লাইনে বিভক্ত থাকে। ডান পাশের লাইনে সাধারণ বা অপচনশীল পণ্যের গাড়ি থাকে। বাঁ পাশে পচনশীল পণ্যের গাড়ি, যাত্রীবাহী বাসের লাইন থাকে। এই লাইনের গাড়ি অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ফেরিতে ওঠে। পচনশীল পণ্যের গাড়ি বা যাত্রীবাহী বাস আগে পার হওয়ায় সাধারণ পণ্যের গাড়ি দিনের পর দিন রাস্তায় আটকে থাকছে। সকালে একটু কম যানজট থাকে। কিন্তু বিকেলে গাড়ির চাপ বাড়তে থাকে।
আজ দুপুরে দীর্ঘক্ষণ ফেরিঘাট এলাকায় অপেক্ষা করে দেখা যায়, ঢাকামুখী পচনশীল পণ্যের গাড়ি ও যাত্রীবাহী বাসের লাইনে সাধারণ পণ্যের কার্ভাড ভ্যানও রয়েছে। ঢাকামুখী বিভিন্ন গাড়ির এই সারি চার কিলোমিটার ছাড়িয়েছে।
খুলনা থেকে ভুসি বোঝাই করে গত সোমবার সন্ধ্যায় সাভারের উদ্দেশে রওনা করে রাতে গোয়ালন্দ মোড় পৌঁছেন ট্রাকচালক হাবিবুর রহমান। রাত শেষে মঙ্গলবার সকালে ঘাটের উদ্দেশে ছেড়ে দেন। প্রায় ৩০ ঘণ্টা পরও তিনি ফেরির নাগাল পাননি। তিনি ক্ষোভের সঙ্গে বলেন, ‘গোয়ালন্দ মোড় থেকে দালালের মাধ্যমে অনেকে গাড়ি আগে বের করে দেয়। আমি টাকা দিইনি বলে তিন দিন ধরে রাস্তায় আছি। ফেরিতে উঠতে আরও এক দিন চলে যেতে পারে।’
ঢাকামুখী দূরপাল্লার বাসের যাত্রীদেরও ঘণ্টার পর ঘণ্টা অপেক্ষা করতে হচ্ছে। ফেরিঘাট থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার পেছনে আটকে আছেন রাজবাড়ী থেকে আসা একটি পরিবহনের যাত্রী মালেকা বেগম। তিনি ঢাকার একটি পোশাক কারখানায় কাজ করেন। তিনি বলেন, স্বামী ও শিশুসন্তান নিয়ে ঢাকার উদ্দেশে রওনা করেছেন। দীর্ঘক্ষণ বাসে বসে থাকায় বাচ্চা কান্না করছিল। তাই বাস থেকে নেমে বাইরে অপেক্ষা করছেন।
বিআইডব্লিউটিসি আরিচা কার্যালয়ের উপমহাব্যবস্থাপক মো. জিল্লুর রহমান বলেন, দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌপথে আগে যানবাহন ও যাত্রী পারাপারে ছোটবড় মিলে ২০টি ফেরি চলাচল করত। সম্প্রতি চারটি বড় ফেরি যান্ত্রিক ত্রুটিতে বিকল হলে মেরামতের জন্য সেগুলো ডকইয়ার্ডে পাঠানো হয়। বর্তমানে ১৬টির মধ্যে ১৫টি ফেরি চলছে। তিনি আরও বলেন, বড় ফেরির সংকটের কারণে গাড়ি পারাপার ব্যাহত হচ্ছে। সঙ্গে বাড়তি চাপ থাকায় উভয় ঘাটে গাড়ির জট লেগে থাকছে। কবে নাগাদ বড় ফেরিগুলো ডকইয়ার্ড থেকে আসছে, জিজ্ঞাসা করলে তিনি এ বিষয়ে কিছু জানেন না বলে জানান।
বিএসডি/ এলএল