এক মাস ২০ দিন বন্ধ থাকার পর নিম্ন আদালতে আত্মসমর্পণের প্রজ্ঞাপন জারি হয়েছে গত ২২ মে। ম্যাজিস্ট্রেট ও দায়রা আদালতে আত্মসমর্পণের সুযোগ তৈরি হলেও এখনো আত্মসমর্পণের পথ খুলেনি দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) মামলায়।
বিশেষ করে ২০১৯ সালের জুন মাসের পর দুদকের যেসব মামলা দুদকের সমন্বিত কার্যালয়সমূহে দায়ের হয়েছে সেগুলোতে আত্মসমর্পণ নিয়ে এই জটিলতা তৈরি হয়েছে।
গত ২২ মে সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসনের জারি করা বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, উপযুক্ত বিষয়ে নির্দেশিত হয়ে জানানো যাচ্ছে যে, শারীরিক দূরত্ব অনুসরণ করে ফৌজদারি মামলায় অভিযুক্ত ব্যক্তি/ব্যক্তিরা চিফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট/চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালত এবং নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল, মানবপাচার অপরাধ দমন ট্রাইব্যুনাল ও সাইবার ট্রাইব্যুনালসমূহে আত্মসমর্পণ করতে পারবেন।
তবে, দুদকের মামলায় আমলী আদালত হিসেবে সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালত কাজ করেন। আর বিচারিক আদালত হিসেবে স্পেশাল জজ আদালতসমূহও কাজ করেন।
সুপ্রিম কোর্টের জারি করা প্রজ্ঞাপনে স্পেশাল জজ বা সিনিয়র স্পেশাল জজ আদালতের নাম না থাকায় দুদকের মামলার আসামিরা আত্মসমর্পণ করতে পারছেন না বলে জানা গেছে। এতে অনেক আসামি বিপাকে পড়েছেন৷ বিশেষ করে যারা গ্রেফতার এড়িয়ে আদালতে আত্মসমর্পণ করতে চান তারা পড়েছেন বিপাকে।
সম্প্রতি ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ের মামলায় আসামি হওয়া এক আসামির স্বামী নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ওই প্রতিষ্ঠানে ৮ মাস চাকরি করে দুটি মামলার আসামি হয়েছেন আমার স্ত্রী। হিসাব বিভাগে জুনিয়র অফিসার পদে চাকরি করেছিলেন ইন্টারন্যাশনাল লিজিংয়ে। আরও দুই বছর আগে চাকরি ছেড়ে দিলেও বিনা দোষে আসামি হতে হয়েছে তাকে। আমার স্ত্রী অন্য একটি প্রতিষ্ঠানে এখন চাকরিরত। আত্মসমর্পণের সুযোগ না থাকায় তার বিরুদ্ধে হওয়া মামলায় জামিন নেওয়া যাচ্ছে না। তাই খুব বিপদে আছি।
জানতে চাইলে দুদক কৌশলী মাহমুদ হোসেন জাহাঙ্গীর বলেন, হাজতি আসামিদের ভার্চ্যুয়াল জামিন শুনানি চালু আছে। তবে, আত্মসমর্পণ করে জামিন আবেদনের সুযোগ এখন নেই। এখন সুপ্রিম কোর্ট প্রশাসন সিদ্ধান্ত না দিলে তো আমাদের কিছু করার নেই।
গত ২ এপ্রিল থেকে দ্বিতীয় দফা লকডাউনে বন্ধ হয়ে যায় আদালতের সব বিচার কার্যক্রম। গত ১২ এপ্রিল ভার্চ্যুয়ালি হাজতি আসামিদের জামিন শুনানির সুযোগ দিয়ে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়। এরপর ধাপে ধাপে নালিশি (সিআর) মামলা দায়ের, আপিল ও রিভিশন দায়েরসহ বেশ কয়েকটি ক্ষেত্রে বিচারিক কার্যক্রম শুরু হলেও দুদকের মামলায় এখনো আত্মসমর্পণ করে জামিন চাওয়ার সুযোগ তৈরি হয়নি।