নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজধানীর কাকরাইলে রাজধানীর কাকরাইলে হজ্জ এজেন্সিস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (হাব) এর নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এ নির্বাচনকে বয়কট করেছে হাব গণতান্ত্রিক ঐক্য ফ্রন্ট। ভূয়া ভোটার বাতিল না করে বর্তমান সভাপতির অনুগতকে প্রধান নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ দিয়ে আদালতের সার্টিফাইড কপি ছাড়াই বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অমান্য করে এ নির্বাচন হচ্ছে বলে অভিযোগ তাদের। হাব গণতান্ত্রিক ঐক্য ফ্রন্ট এ নির্বাচন অনুষ্ঠানকে অবৈধ বলে দাবি করেছে ।
এর সঙ্গে তারা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সদ্য নিয়োগকৃত প্রশাসকের নেতৃত্বে ফের সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনেরও দাবি করেছে।
বৃহস্পতিবার (৩০ ডিসেম্বর) সকাল দশটার দিকে রাজধানীর কাকরাইলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে ভোট চলাকালে ঐক্য ফ্রন্টের প্যানেল প্রধান আব্দুস ছোবহান ভুঁইয়া প্রধান নির্বাচন কমিশনারকে চিঠি দিয়ে নির্বাচন বয়কটের ঘোষণা দিয়ে চলে যান। তারা এ বিষয়ে পরবর্তীতে সংবাদ সম্মেলন করে কর্মসূচী জানাবেন বলেও জানান তিনি।
আব্দুস ছোবহান ভুইয়া জানান, ভূয়া ভোটার বাতিল করে নতুন ভোটার তালিকা প্রণয়ন করে ৬ মাসের মধ্যে হাবের নির্বাচন করার জন্য বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব সামাদ আল আজাদকে হাবের প্রশাসক নিয়োগ করেন মন্ত্রণালয়। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা অমান্য করে ভূয়া ভোটার দিয়ে বর্তমান কমিটির সভাপতির কর্মচারীকে নির্বাচন কমিশনার নিয়োগ দিয়ে একটি লোক দেখানো নির্বাচনের আয়োজন করা হয়েছে। আদালতের আদেশের কথা বলা হলেও নির্বাচন অনুষ্ঠানে আদালতের কোনও সার্টিফাইড কপি তারা দেখাতে পারেননি। আমরা এ ধরনের পরিকল্পিত অবৈধ নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করেছি। গণতান্ত্রিক ঐক্যফ্রন্ট এর পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিক নির্বাচন কমিশনারকে চিঠি দেওয়া হলেও তিনি গ্রহণ না করে নির্বাচন চালিয়ে যাচ্ছেন। আমরা এ অবৈধ নির্বাচন মানি না। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনা মোতাবেক প্রশাসকের অধীনে ফের নির্বাচনের দাবি জানাচ্ছি।
তিনি অভিযোগ করেন, বর্তমানে দায়িত্বরত হাব কমিটি দুই বছর মেয়াদ অতিক্রান্ত করে বিভিন্ন অজুহাতে আরো প্রায় এক বছর বেশি দায়িত্ব পালন করে। এই সময়কালে বর্তমান কমিটির ৩ বছরের এজিএম নিয়মিত ও বৈধভাবে না করা, সরকারি নির্দেশনা অমান্য করা, ভোটার তালিকায় হজ এজেন্ট নয় এমন অসংখ্য ব্যক্তি অন্তর্ভুক্তকরণসহ বিভিন্ন অনিয়ম ও আইন অমান্য করার বিষয়ে সরকার তথা বাণিজ্য মন্ত্রণালয়কে অবহিত করা হয়।
হাবের সাবেক এই সভাপতি বলেন, ‘হাবের কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হওয়ার গুরুত্ব ও প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে পরিচালক বাণিজ্য সংগঠন, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের স্মারক নম্বর-২৬:০০,০০০০.১৫৭.৩৩.০১৬ (০২)-৬৩০ তারিখ ২৯ ডিসেম্বর ২০২১ এর মাধ্যমে বাণিজ্য সংগঠন অধ্যাদেশ ১৯৬১ এর ১০ ধারা মোতাবেক বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব সামাদ আল আজাদকে হাবের প্রশাসক নিয়োগ করা হয়। সঠিক ভোটার তালিকা প্রণয়নসহ কার্যনির্বাহী কমিটির নির্বাচন আগামী ৬ মাসের মধ্যে সম্পন্ন করে নির্বাচিত কমিটির নিকট ক্ষমতা হস্তান্তর করার নির্দেশনা জারি করেন। বাণিজ্য সংগঠন অধ্যাদেশ ১৯৬১ এর (3) উপ-ধারা এর অধীনে একজন প্রশাসক নিয়োগের পরে, কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্যরা তাদের নিজ নিজ অফিস/ পদবী শূন্য/ খালি করেছেন বলে গণ্য হবে এবং তাদের আর কোনো কার্যকারিতা থাকবে না। হাবের নির্বাচন সুষ্ঠু ও সঠিকভাবে সম্পন্ন করার জন্য হাবের প্রশাসক আগামী ৬ মাসের মধ্যে সঠিক ভোটার তালিকা প্রণয়ন পূর্বক নির্বাচন কার্যক্রম গ্রহণ করবেন। সুতরাং আজকের লোক দেখানো নির্বাচন সরকারের নির্দেশনা উপেক্ষা করে ভুয়া ভোটার দিয়ে প্রহসনের নির্বাচন৷ বহিরাগত সহস্রাধিক সন্ত্রাসি, মাস্তান ভোট কেন্দ্র দখল করে একজনের ভোট অন্যজন দিচ্ছে এবং ব্যালট বাক্স পূর্ণ করা হচ্ছে। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানাই এবং আমার এই নির্বাচন প্রত্যাখ্যান করছি।
সকাল ৯টা থেকে বিকাল ৫টা পর্যন্ত রাজধানীর কাকরাইলে ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে একটানা ভোট গ্রহণ চলছে। হাব নির্বাচনে দু’টি প্যানেল প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছিল। হাব-এর বর্তমান সভাপতি এম শাহাদাত হোসাইন তসলিম-এর নেতৃত্বাধীন হাব সম্মিলিত ফোরাম এবং হাব-এর সাবেক সভাপতি আবদুস সোবহান ভূঁইয়া’র নেতৃত্বাধীন হাব গণতান্ত্রিক ঐক্য ফ্রন্ট। কিন্তু ভোটগ্রহণের আগেই ঐক্যফ্রন্ট নির্বাচন বয়কট করলো।
বিএসডি/আইপি