নিজস্ব প্রতিবেদক
বিএনপি চেয়ারপারস খালেদা জিয়াকে উন্নত চিকিৎসার জন্য বিদেশে নেওয়ার অনুমতি প্রসঙ্গে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রী আনিসুল হক বলেছেন, সরকার কোনো কাজই আইনের বাইরে করতে পারে না। সরকারের কিছু করার থাকলে সেটাকে আইনের ধারায় এনে করতে হয়। আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে রাজধানীর জাতীয় প্রেসক্লাবে ওকাব (ওভারসিজ করেসপনডেন্টস এসোসিয়েশন বাংলাদেশ) আয়োজিত মিট দ্যা ওকাব অনুষ্ঠানে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি একথা বলেন। ওকাব-এর আহবায়ক কাদির কল্লোল অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন।
খালেদা জিয়ার মুক্তির ব্যাপারে পরিবারের দরখাস্তের কথা উল্লেখ করে আইনমন্ত্রী বলেন, তার আত্মীয়-স্বজন একটা দরখাস্ত করেছিলেন। সেখানে কোনো আইনের ধারার কথা উল্লেখ ছিল না। তারপরও সেই দরখাস্তকে গণ্য করে ফৌজদারি আইনের ৪০১ ধারার বিধান অনুযায়ী সরকার নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়ার দণ্ডাদেশ স্থগিত রেখে শর্তযুক্ত মুক্তি দিয়েছে। শর্ত হলো তিনি বাসায় চিকিৎসা নেবেন, কিন্তু বিদেশ যেতে পারবেন না।
আনিসুল হক বলেন, ১৫ আগস্ট খালেদা জিয়ার জন্মদিন না হলেও সেদিন আনন্দ করে তার জন্মদিন পালন করা হয়। বঙ্গবন্ধুর খুনি লে. কর্নেল আবদুর রশিদকে ১৯৯৬ সালে ভোটার বিহীন নির্বাচনে বিরোধী দলীয় নেতা বানিয়ে ছিলেন খালেদা জিয়া। তার ছোট ছেলে মারা গেলে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সমবেদনা জানাতে বাসায় গেলে তাঁর (প্রধানমন্ত্রীর) মুখের সামনে গেইট বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এতকিছুর পরও তাকে শর্তযুক্ত মুক্তি দেওয়া হয়েছে। তারপরও কেন মানবিকতার প্রশ্ন ওঠে, প্রশ্ন রাখেন আইনমন্ত্রী।
আনিসুল হক বলেন, ১৯৯৬ সালের ভোট আমি ও আপনারা দেখেছেন। হ্যাঁ-না ভোট থেকে শুরু করে অনেক ধরনের ভোট দেখার সুযোগ হয়েছে আমার। ২০১৪ সালে আমি নির্বাচিত হয়েছি। ২০১৮ সালের নির্বাচনে আমার নিজের তোলা ছবি আছে, মানুষ ভোট দিতে গেছেন। আমি দেখাতে পারব। যখন আমি নির্বাচন করেছিলাম জনগণের কাছে আমার বার্তা ছিল, ভোট কেন্দ্রে জান। সেখানে গিয়ে নিজেদের মতামত প্রকাশ করুন। ইউনিয়ন পরিষদের নির্বাচনেও আমরা চেষ্টা করেছি যাতে মানুষ ভোটকেন্দ্রে আসে।
তিনি বলেন, নির্বাচনের কেন্দ্রে মানুষ না আসার কালচার কবে থেকে চালু হয়েছে, এটা আমার মনে করিয়ে দেওয়ার দরকার নেই। ১৯৭৫ এর পরে যেসব নির্বাচন হয়েছে তার যে প্রভাব তা এখনও বাংলাদেশের মানুষের মন থেকে দূর হয়নি। এ কালচার থেকে বেরিয়ে আসার জন্য যা যা করা দরকার এ সরকার করার চেষ্টা করছে। মন্ত্রী বলেন, সরকারের বিভিন্ন পদক্ষেপে কানেক্টিভিটি নেটওয়ার্ক বৃদ্ধি পাওয়ায় জনগণ ভোটের বিষয়ে এখন অনেক বেশি সচেতন হয়েছে।
আইনমন্ত্রী বলেন, কোন দল যদি নির্বাচনে এসে প্রতিদ্বন্দ্বিতা না করে, মানুষ কি তাদেরকে ভোট দেওয়ার জন্য বসে থাকবে। ২০১৮ সালের নির্বাচনে বিএনপি’র কার্যকলাপ আপনারা দেখেছেন। একটি আসন থেকে চারজনকে নমিনেশন দিয়েছিল বিএনপি। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিষয়ে তিনি আবারও বলেন, বাংলাদেশে ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রয়োজন আছে। কিন্তু এও জানি এর কিছু অপব্যবহার ও দুর্ব্যবহার হয়েছে। এটা যাতে বন্ধ হয় সেজন্য পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এখন কোনো সাংবাদিককে মামলা হবার সঙ্গে সঙ্গে গ্রেপ্তার করা হয় না। আগে যাচাই-বাছাই হয়। ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাক-স্বাধীনতা ও সংবাদ মাধ্যমের স্বাধীনতা খর্ব করার জন্য করা হয়নি, বলেন তিনি।
ওকাব টক অনুষ্ঠানে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি (ডিআরইউ) সভাপতি নজরুল ইসলাম মিঠুসহ আরও অনেকে উপস্থিত ছিলেন।
এসএ