প্রথম ইনিংসে অলআউট হয়ে গিয়েছিল, টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষ হতে না হতেই দ্বিতীয় ইনিংসেও ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান ৪ উইকেটে ৮২। এখনো প্রথম ইনিংসে দক্ষিণ আফ্রিকার করা ৩২২ রানের চেয়ে ১৪৩ রানে পিছিয়ে।
সেন্ট লুসিয়া টেস্টের দ্বিতীয় দিন শেষে ড্রেসিংরুমে ফেরার সময় ওয়েস্ট ইন্ডিজ কি তিন দিনের মধ্যেই ইনিংস ব্যবধানে হারের শঙ্কায় পড়ল?
আজ দ্বিতীয় দিনে কুইন্টন ডি ককের অপরাজিত ১৪১ রানের সৌজন্যে ব্যাটিংয়ে দিনটা দক্ষিণ আফ্রিকার হয়েই ছিল। এরপর দুই প্রোটিয়া ফাস্ট বোলার কাগিসো রাবাদা ও আনরাইখ নর্তিয়ে মিলে ওয়েস্ট ইন্ডিজকে আরও ভোগালেন!
দক্ষিণ আফ্রিকার ফাস্ট বোলারদেরই সামলাতে পারছে না ক্যারিবীয়রা! প্রথম ইনিংসে লুঙ্গি এনগিডি ও নর্তিয়ের সামনে ভুগেছেন হোল্ডার-ব্রাফেট-হোপরা। এনগিডি নিয়েছিলেন ৫ উইকেট, নর্তিয়ে ৪টি।
দ্বিতীয় ইনিংসে কাল দ্বিতীয় দিন শেষ হওয়ার আগেই আবারও ক্যারিবীয়দের ভোগাতে হাজির নর্তিয়ে, এবার এখন পর্যন্ত তাঁর সঙ্গী রাবাদা। দুজনে নিয়েছেন দুটি করে উইকেট। ওয়েস্ট ইন্ডিজের হয়ে কাল তৃতীয় দিন শুরু করবেন দুই অপরাজিত ব্যাটসম্যান রোস্টন চেজ (২১*) ও জার্মেইন ব্ল্যাকউড (১০*)।
পঞ্চম উইকেটে চেজ-ব্ল্যাকউড মিলে এরই মধ্যে ৩১ রানের জুটি গড়েছেন, খেলে ফেলেছেন ৭৪ বল। না হলে চতুর্থ উইকেট তো ওয়েস্ট ইন্ডিজ হারিয়েছিল ৫২ রানেই!
দলকে ১২ রানে রেখে পঞ্চম ওভারের দ্বিতীয় বলে ফিরেছেন অধিনায়ক ব্রাফেট (৭), রাবাদার বলে এলবিডব্লু হয়েছেন তিনি। এর ৩৬ বল পর আউট আরেক ওপেনার কাইরন পাওয়েলও (১৪), ইনিও রাবাদার বলে এলবিডব্লু।
এরপর নর্তিয়ের উইকেট নেওয়ার পালা। ১৬তম ওভারের প্রথম বলে তুলে নেন শাই হোপকে (১২), ওয়েস্ট ইন্ডিজের রান তখন ৩ উইকেটে ৩৭। এর ১৫ বল আর ১৪ রান পর আউট হয়ে গেলেন কাইল মেয়ার্স (১২)। মজার ব্যাপার, রাবাদার দুই উইকেটের মতো নর্তিয়ের দুই উইকেটেও বেশ মিল। হোপ আর মেয়ার্স দুজনই আউট হয়েছেন রাবাদার বলে মুল্ডারের হাতে ক্যাচ দিয়ে!
ওয়েস্ট ইন্ডিজের দুর্গতির মাঝে দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ব্যাট হাতে আলো ছড়ালেন কুইন্টন ডি কক। দিন শুরু করেছিলেন ৪ রানে অপরাজিত থেকে, আর দক্ষিণ আফ্রিকা অলআউট হতেই যখন চা বিরতির ডাক পড়ল, ডি কক তখনো অপরাজিত।
৪ উইকেটে ১২৮ রান নিয়ে দিন শুরু করেছিল দক্ষিণ আফ্রিকা, ডি ককের সঙ্গী ছিলেন ৩৪ রানে অপরাজিত রাসি ফন ডার ডুসেন। তিনি আগের দিনের সঙ্গে ১২ রান যোগ করেই ফেরেন দলকে ১৬২ রানে রেখে। এরপর মুল্ডার (২৫ রান) এসে ডি ককের সঙ্গে ষষ্ঠ উইকেটে গড়েন ৫৩ রানের জুটি। বাকি কেউই ডি কককে বেশিক্ষণ সঙ্গ দিতে পারেননি।
অধিনায়কত্বের ভারহীন ডি ককের তাতে সমস্যা খুব বেশি হয়নি। অধিনায়কের ভার নিয়ে আগের চার ম্যাচে ভালো করতে পারেননি, সেই দায়িত্ব চলে যেতেই ডি ককের ব্যাট হাসল। প্রথম সেশনে দেখেশুনেই খেলেছেন, কিন্তু মুল্ডার আউট হওয়ার পর লোয়ার অর্ডার নামতেই ডি কক আক্রমণাত্মক।
মধ্যাহ্নবিরতির পর ফিফটিতে পৌঁছেছিলেন ইনিংসের ৯৮তম বলে। আর ছক্কা মেরে সেঞ্চুরিতে পৌঁছেছেন ১৪৮তম বলে। ক্যারিয়ারের ষষ্ঠ টেস্ট সেঞ্চুরির ইনিংসে ডি ককের চার ১২টি, ছক্কা ৭টি! ফিফটির আগে কোনো ছক্কাই ছিল না, তখন পর্যন্ত চার মেরেছিলেন ৬টি।
মুল্ডার আউট হওয়ার পর বাকি চার উইকেটে দক্ষিণ আফ্রিকা তুলতে পেরেছে ৯৩ রান, এর মধ্যে ডি কক ছাড়া বাকি চার ব্যাটসম্যানের অবদান? ১১ রান। নবম উইকেটে নর্তিয়ের (৭ রান) সঙ্গে ডি কক গড়েছেন ৭৯ রানের জুটি!