নিজস্ব প্রতিবেদক
সাতক্ষীরার শ্যামনগর উপজেলার পদ্মপুকুর ইউনিয়নে এক মেম্বার প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণার পর আরেক প্রার্থীকে বিজয়ী ঘোষণার অভিযোগ উঠেছে। বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হওয়ার পর ফল পাল্টে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ প্রিসাইডিং কর্মকর্তার বিরুদ্ধে।
এ ছাড়া এক প্রার্থীকে জেরো ভোট দেখানো হয়েছে। ওই প্রার্থীর অভিযোগ, আমার নিজের ভোটটি গেল কোথায়?
এসব অভিযোগে শুক্রবার (৩১ ডিসেম্বর) বেলা ১২টায় সাতক্ষীরা প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করেন মোরগ ও তালা প্রতীকের দুই প্রার্থী। এ ছাড়া জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা, উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাসহ সরকারের বিভিন্ন দফতরে অভিযোগ দিয়েছেন তারা।
পদ্মপুকুর ইউনিয়নের ৯ নং ওয়ার্ডের জিএম আহসানউল্লাহ্ আহসান ফুটবল প্রতীক, মো. আমান উল্লাহ্ মোরগ প্রতীক ও সঞ্জয় কুমার মণ্ডল তালা প্রতীক নিয়ে সদস্য পদে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ২৬ ডিসেম্বর পশ্চিম পাতাখালি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মোরগ প্রতীকের প্রার্থী আমান উল্লাহ্ জানান, প্রথমে ঘোষণা করে মোরগ জিতেছে। এ খবর শুনে আমার কর্মীসমর্থকরা মিছিল করতে থাকে। এমন সময় হঠাৎ বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। কিছুক্ষণ পর ঘোষণা করা হয় ফুটবল প্রতীক ৮ ভোট বেশি পেয়ে জিতেছে। তাৎক্ষণিক আমি কেন্দ্রে প্রবেশ করি। গিয়ে দেখি, ৩৯টি ভোট বাতিল করেছে। এর মধ্যে ৩০টি ভোট মোরগ প্রতীকের। কোনো ত্রুটি ছাড়াই মোরগ প্রতীকের ভোট বাতিল করেছে। ফুটবল প্রতীকের মধ্যে দুটি মোরগের ভোট পাওয়া যায়। আমি অভিযোগ জানালে ফল ঘোষণা বন্ধ রেখে প্রিসাইডিং কর্মকর্তা প্রবীর কুমার বলেন, আবার ভোট গণনা করা হবে। এই বলে আমাদের দুই প্রার্থীকে উপজেলা সদরে নিয়ে আসেন। তবে পরে আর ভোট গণনা করেননি। রাতে আমাকে জানিয়ে দেন, যা হবার হয়ে গেছে, আমার কিছু করার নেই।
সদস্য পদপ্রার্থী সজ্ঞয় কুমার মণ্ডল জানান, আমাকে জিরো ভোট দেখানো হয়েছে। আমার ভোটটা কোথায় গেল? আমি এই প্রশ্ন রাখতে চাই।
নির্বাচন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে প্রাপ্ত তথ্যে জানা গেছে, কেন্দ্রটিতে মোট ভোটার সংখ্যা ১৭৫৭। ভোট কাউন্ট হয়েছে ১৪১৭। অনুপুস্থিত ছিল ৩৪০ ভোটার। এর মধ্যে ফুটবল প্রতীক পেয়েছে ৬৯৩, মোরগ পেয়েছে ৬৮৬ ভোট। নষ্ট ও হারিয়ে গেছে ৩৮টি ভোট। তালা প্রতীক জিরো ভোট। সাত ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করেছেন ফুটবল প্রতীকের প্রার্থী।
প্রিসাইডিং কর্মকর্তা প্রবীর কুমার জানান, প্রথমে মোরগ প্রতীক বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে এটা সঠিক নয়। যখন দুই প্রার্থীর ভোট কাছাকাছি ছিল তখন আমি উভয় প্রার্থীর এজেন্টদের ভোটগুলো দেখায়। পরে প্রার্থীরাও আসেন। তখন ফুটবলের মধ্যে একটা মোরগের ভোট পাওয়া যায়। পরে ৮ ভোটের স্থলে ৭ ভোটে বিজয়ী হয় ফুটবল।
তালা প্রতীকের প্রার্থীর নিজ ভোটটি কোথায় গেল এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, কেউ ভোট দেয়নি বলে তিনি পাননি। তার নিজের ভোট কোথায় গেল সেটি আমি কীভাবে বলব?
ঘটনার বিষয়ে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা রবিউল ইসলাম বলেন, প্রার্থী আমার কাছেও অভিযোগ করেছেন। আমি তাকে এ বিষয়ে নির্বাচন ট্রাইব্যুনালে অভিযোগ দেওয়ার কথা জানিয়েছি। সেখানে অভিযোগ দিলে বিষয়টি নিয়ে তারা সমাধান দিতে পারবেন। এখন আমাদের কিছু করার নেই।
এসএ