এবার ইউরোর সর্বোচ্চ গোলদাতা কে হবেন?
দশজনকে প্রশ্ন করলে অন্তত পাঁচ-ছয়জনের উত্তরে বেলজিয়ামের স্ট্রাইকার রোমেলু লুকাকুর নাম আসবেই। আর আসবে না-ই বা কেন? জুভেন্টাসের নয় বছরের আধিপত্য ঘুচিয়ে ইন্টারকে ইতালিয়ান লিগ জিততে সাহায্য করেছেন, আছেন দুর্দান্ত ফর্মে। জাতীয় দলের হয়েও গোলবন্যা ছোটাচ্ছেন নিয়মিত। সেই লুকাকুই আজ ইউরোতে ডোবালেন রাশিয়াকে। বোঝালেন, ইউরোর সর্বোচ্চ গোলদাতা হিসেবে যারা তাঁর নাম বলছেন, ভুল কিছু বলছেন না।
ইউরোতে নিজেদের প্রথম ম্যাচে রাশিয়াকে ৩-০ গোলে হারিয়েছে বেলজিয়াম। জোড়া গোল করেছেন এই দীর্ঘদেহী স্ট্রাইকার, বাকি গোলটা ডর্টমুন্ড রাইটব্যাক থমাঁ মনিয়েঁর।
প্রথম থেকেই রাশিয়াকে চেপে ধরে বেলজিয়াম। মাঝমাঠ থেকে উইঙ্গার দ্রিস মের্তেন্সের পাঠানো উড়ন্ত বল ঠিকমতো সামলাতে পারেননি রাশিয়ার রক্ষণভাগের খেলোয়াড়েরা। বল চলে যায় ওঁত পেতে থাকা লুকাকুর কাছে। যে লুকাকু গত কয়েক মৌসুম ধরে গোলের বন্যা বইয়ে দিচ্ছেন, তিনি কী আর এই সুযোগ হেলায় হারান? বেলজিয়ামও দশ মিনিটে ১-০ গোলে এগিয়ে যায়।
গোলের চেয়েও মন ছুঁয়ে যায় গোলের উদযাপন। ডেনমার্ক-ফিনল্যান্ড ম্যাচে আজ জীবনসংশয়ে পড়ে গিয়েছিলেন ড্যানিশ মিডফিল্ডার ক্রিস্টিয়ান এরিকসেন। পরে জানা গেছে, তিনি সুস্থ হয়েছেন মোটামুটি। ফুটবল বিশ্বের সবাই এরিকসেনকে শুভ বার্তা পাঠাচ্ছেন। এরিকসেনের ক্লাব-সতীর্থ লুকাকুও পাঠালেন, তবে একটু অন্যভাবে। গোল করে দৌড়ে ক্যামেরার সামনে গিয়ে বললেন, ‘ক্রিস, ক্রিস… আমি তোমাকে ভালোবাসি!’
২৭ মিনিটে রাশিয়ার দালের কুজায়েভের সঙ্গে সংঘর্ষে আহত হয়ে মাঠ ছাড়েন বেলজিয়ান রাইটব্যাক তিমোথি কাস্তানিয়ে। তাঁর জায়গায় মাঠে নেমেই মনিয়েঁ জানালেন, কাস্তানিয়ের কাছে জায়গা হারালেও তাঁর বুটজোড়ায় মরচে পড়েনি মোটেও।
৩২ মিনিটে থরগান হ্যাজার্ডের মাপা ক্রস আটকাতে গিয়ে বল সামনে থাকা মনিয়েঁর পায়ের কাছে ফেলে দেন রাশিয়ার গোলকিপার আন্তোন শুনিন। গোল করে ব্যবধান বাড়ান মনিয়েঁ।
প্রথমার্ধে লুকাকু, কারাসকো, থরগান বেশ কয়েকটা সুযোগ পেলেও আর ব্যবধান বাড়াতে পারেনি বেলজিয়াম।
দ্বিতীয়ার্ধে অপেক্ষাকৃত আক্রমণাত্মক খেলা শুরু করে রাশিয়া। ওদিকে বেলজিয়াম যেন একটু খোলসে ঢুকে যায়। তা সত্ত্বেও প্রত্যাশিত গোলটা পাচ্ছিল না রাশিয়া।
৮৮ মিনিটে উলটো আরেকটা গোল করে ম্যাচ রাশিয়ার ধরাছোঁয়ার বাইরে নিয়ে যান লুকাকু, মনিয়েঁর সাহায্য থেকেই। এই নিয়ে ২০১৮ বিশ্বকাপের পর বেলজিয়ামের হয়ে ১৯ ম্যাচ খেলে ২২ গোল করা হয়ে গেল লুকাকুর। এমন ফর্মে থাকা স্ট্রাইকার দলে থাকলে বেলজিয়াম ইউরোর স্বপ্ন দেখবে না-ই বা কেন?
দুর্দান্ত এই জয়ের পরেও বন্ধু এরিকসেনকে ভোলেননি লুকাকু, ‘ম্যাচের আগে আমরা অনেক কেঁদেছি। ম্যাচে মনোযোগ দেওয়াই কষ্টকর হয়ে যাচ্ছিল। আমি ওর (এরিকসেন) সঙ্গে কথা বলব। আমি জানলাম ও এখন বিপদমুক্ত। আশা করি ও দ্রুতই সুস্থ হয়ে উঠবে। জয়ের জন্য আমি খুশি। কিন্তু আমার প্রার্থনা ক্রিস্টিয়ানকে ঘিরেই।’