ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার শিকার হয়েছেন বলে অভিযোগ তুলেছেন ঢাকাই সিনেমার জনপ্রিয় নায়িকা পরীমণি। আজ রোববার রাতে নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এ ব্যাপারে দীর্ঘ স্ট্যাটাস দেন। পরে রাত সাড়ে ১০টার দিকে বনানীর নিজ বাসায় এ ব্যাপারে সংবাদ সম্মেলন করেন। এ সময় নাসির উদ্দিন মাহমুদ নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগ করেন তিনি। এ ঘটনার সঠিক বিচার দাবি করেছেন এই চিত্রনায়িকা।
সংবাদ সম্মেলনে পরীমণি বলেন, ‘বুধবার রাতে উত্তরার বোট ক্লাবে ঘটনাটি ঘটে। নাসির উদ্দিন নামে একজন তাকে নেশাজাতীয় কিছু খাইয়ে এ ঘটনা ঘটাতে চেয়েছিলেন।’ সাংবাদিকরা নাসির উদ্দিন মাহমুদের পরিচয় জানতে চাইলে পরীমনি বলেন, ‘সে পরিচয় দিছে সে নাকি বেনজীর আহমেদ’র (পুলিশ মহাপরিদর্শক) বন্ধু ভাই, কাছের মানুষ। সে বারবার এটাও আমাকে বলছিল, যখন আমাকে গায়ে হাত তুলছিল…।’
পরীমণি বলেন, ‘আমার সাথে যা হয়েছে আমি এর বিচার চাই। আমি সুইসাইড করার মতো মেয়ে নই। কিন্তু কোনো কারণে আমি যদি মারা যাই, ধরে নেবেন আমাকে মারা হয়েছে।’ এই অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে মামলা করবেন কিনা- এমন প্রশ্নের জবাবে পরীমণি বলেন, ‘কে নেবে মামলা, আমার মামলা কে নেবে? তাকে কেউ এ ব্যাপারে হুমকি দিচ্ছে কিনা- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমার কোনো সিকিউরিটি নেই। আমি ভয় পাচ্ছি।’
এর আগে রোববার রাত ৮টার দিকে ধর্ষণ ও হত্যার অভিযোগ তুলে পরীমণি তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে দীর্ঘ স্ট্যাটাস দেন। ফেসবুক পেজে তিনি লিখেন-
বরাবর,
মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
আমি পরীমণি। এই দেশের একজন বাধ্যগত নাগরিক। আমার পেশা চলচ্চিত্র।
আমি শারীরিক নির্যাতনের শিকার হয়েছি।
আমাকে রেপ এবং হত্যা করার চেষ্টা করা হয়েছে।
আমি এর বিচার চাই।
এই বিচার কই চাইবো আমি? কোথায় চাইবো? কে করবে সঠিক বিচার? আমি খুঁজে পাইনি গত চার দিন ধরে। থানা থেকে শুরু করে আমাদের চলচ্চিত্রবন্ধু, আমি কাউকে পাই না মা।
যাদেরকে পেয়েছি সবাই শুধু ঘটনা বিস্তারিত জেনে, দেখছি বলে চুপ হয়ে যায়!
আমি মেয়ে, আমি নায়িকা, তার আগে আমি মানুষ। আমি চুপ করে থাকতে পারি না। আজ আমার সাথে যা হয়েছে তা যদি আমি কেবল মেয়ে বলে, লোকে কি বলবে এই গেলানো বাক্য মেনে নিয়ে চুপ হয়ে যাই, তাহলে অনেকের মত (যাদের অনেক নাম এক্ষুণি মনে পড়ে গেল) তাদের মত আমিও কেবল তাদের দল ভারী করতে চলেছি হয়তো।
আফসোস ছাড়া কারোর কি করবার থাকবে তখন!
আমি তাদের মত চুপ কি করে থাকতে পারি মা?
আমি তো আপনাকে দেখিনি চুপ থেকে কোনো অন্যায় মেনে নিতে!
আমার মা যখন মারা যান তখন আমার বয়স আড়াই বছর। এতদিনে কখনো আমার এক মুহূর্ত মাকে খুব দরকার এখন,
মনে হয়নি এটা। আজ মনে হচ্ছে , ভীষণ রকম মনে হচ্ছে মাকে দরকার, একটু শক্ত করে জড়িয়ে ধরার জন্যে দরকার।
আমার আপনাকে দরকার মা। আমার এখন বেঁচে থাকার জন্যে আপনাকে দরকার মা।
মা আমি বাচঁতে চাই।
আমাকে বাঁচিয়ে নাও মা।’