ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে করা চিত্রনায়িকা পরীমনির মামলার প্রধান আসামি নাসির ইউ মাহমুদ, অমিসহ পাঁচজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। আজ সোমবার বেলা তিনটার দিকে তাঁদের উত্তরা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তার বাকি তিনজন হলেন লিপি, সুমি ও স্নিগ্ধা।
পাঁচজনকে গ্রেপ্তারের বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের (উত্তর) যুগ্ম কমিশনার হারুন অর রশিদ।
তিনি জানান, গ্রেফতারদের মধ্যে দুজন হলেন অমি (৪১) ও লিপি। রাজধানীর উত্তরা ১ নম্বর সেক্টরের ১২ নম্বর রোডের ১৩ নম্বর বাসা থেকে তাদের গ্রেফতার করে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশ।
অভিযানে ডিজে পার্টির নামে মাদকসেবন হতো বলে তথ্য মিলেছে। ঘটনাস্থল থেকে মদ, বিয়ার, ইয়াবাসহ বিভিন্ন ধরনের মাদক উদ্ধার করা হয়েছে।
ডিএমপি মিডিয়া অতিরিক্ত উপকমিশনার ইফতেখায়রুল ইসলাম বলেন, গ্রেপ্তারের সময় তাঁদের কাছ থেকে মাদকও জব্দ করা হয়েছে।
এর আগে ঢাকা জেলার পুলিশ সুপার মারুফ হোসেন সরদার বলেন, এ ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের গ্রেপ্তারে ঢাকা জেলা পুলিশের সাভার ঢাকা সার্কেল অফিসের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ও সাভার মডেল থানার ওসির নেতৃত্বে একাধিক টিম অভিযান চালাচ্ছে। যত দ্রুত সম্ভব দোষী ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনা হবে।
পরীমনির করা মামলায় মোট ছয়জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হয়েছে। এর মধ্যে দুজনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। বাকিরা অজ্ঞাতনামা।
চিত্রনায়িকা পরীমনি ধর্ষণচেষ্টা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে ব্যবসায়ী নাসির ইউ মাহমুদ, অমিসহ ছয়জনের বিরুদ্ধে সাভার থানায় মামলা করেন। পুলিশ সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, পরীমনির মামলার ঘটনাটি ঢাকা জেলা পুলিশের পাশাপাশি ঢাকা মহানগর পুলিশের গোয়েন্দা বিভাগও (ডিবি) ছায়া তদন্ত করছে।
অবশ্য চিত্রনায়িকা পরীমনির সাভার থানায় মামলা করা প্রসঙ্গে জানতে চাইলে পুলিশ সদর দপ্তরের এআইজি (মিডিয়া অ্যান্ড পাবলিক রিলেশনস) মো. সোহেল রানা খুদে বার্তায় জানান, তাঁর বিষয়টি যথাযথ গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হয়েছে। আইনি ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
চিত্রনায়িকা পরীমনি গতকাল রোববার রাতে বনানীর নিজ বাসায় সাংবাদিকদের জানান, ১০ জুন রাতে পারিবারিক বন্ধু অমি ও ব্যক্তিগত রূপসজ্জাশিল্পী জিমির সঙ্গে বাইরে বের হন। বন্ধুটি তাঁদের নিয়ে যান আশুলিয়ার একটি ক্লাবে। সেখানে মদ্যপানরত কয়েকজনের সঙ্গে পরীমনির পরিচয় করিয়ে দেন অমি। ওই ব্যক্তিদেরই একজন হঠাৎ জোর করে তাঁর মুখে পানীয়র গ্লাস চেপে ধরেন এবং শ্লীলতাহানির চেষ্টা করেন। এ সময় মারধর করা হয় পরীর সঙ্গে থাকা জিমিকেও।
চিত্রনায়িকা পরীমনির অভিযোগ, ঘটনার পরপরই বনানী থানায় অভিযোগ করতে গিয়েছিলেন তিনি। তবে সে সময় দায়িত্বপ্রাপ্ত কোনো কর্মকর্তা তাঁর অভিযোগ রেকর্ড করেননি। বরং সকালে এসে অভিযোগ করার পরামর্শ দেন। এ সময় পুলিশের সাহায্যে পরীমনি হাসপাতাল পর্যন্ত গিয়েও আতঙ্কবশত চিকিৎসা না নিয়েই বাড়ি ফিরে যান। এ ঘটনায় মারাত্মক ভেঙে পড়েছেন পরীমনি। ভীষণ অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি।
রোববার সন্ধ্যার সময় ফেসবুক পোস্টে পরীমনি অভিযোগ করেন, তাঁকে ধর্ষণ ও হত্যাচেষ্টা করা হয়েছে। ফেসবুক পোস্টে এ অভিযোগ করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কাছে বিচার দাবি করেন পরীমনি।