নিজস্ব প্রতিবেদক:
জামালপুরের মেলান্দহে মা-মেয়ে হত্যার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। হত্যাকারী আনোয়ার হোসেনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আনোয়ার প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে স্বীকার করেছে, সে আকলিমা আক্তার স্বপ্নার সঙ্গে শারীরিক সম্পর্ক গড়তে না পেরে তাকে এবং তার মাকে খুন করেছে।
রোববার (৯ জানুয়ারি) রাজধানীর মালিবাগে সিআইডির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে বিশেষ পুলিশ সুপার মুক্তা ধর এসব তথ্য জানিয়েছেন।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার জানিয়েছেন, প্রায় ৫ বছর আগে নারায়ণগঞ্জে অবস্থানকালে স্বপ্নার সঙ্গে আনোয়ারের পরিচয় হয় এবং প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। আনোয়ার হোসেন দীর্ঘদিন ধরে শারীরিক সম্পর্ক গড়ার চেষ্টা করলেও স্বপ্নার অসম্মতির কারণে তা সম্ভব হয়নি। আনোয়ার গত ডিসেম্বরে ২০-২৫ দিন ধরে স্বপ্নার বড় ভাই মো. জহুরুল চৌধুরীর বাড়িতে ভবন নির্মাণের কাজ করছিল। একদিন স্বপ্না আনোয়ারকে ডেকে বলে যে, তার ও মায়ের প্রচণ্ড মাথাব্যথা করছে। আনোয়ারকে ওষুধ আনতে বলে স্বপ্না। কাজ শেষে সন্ধ্যার পর আনোয়ার স্বপ্নাদের বাড়িতে গিয়ে তার সঙ্গে গল্প করতে থাকে। স্বপ্না ও তার মায়ের রাতের খাবার শেষ হলে আনোয়ারের কাছে ওষুধ চায়। আনোয়ার মাথাব্যথার ওষুধের কথা বলে প্রত্যেককে তিনটি করে ঘুমের ট্যাবলেট দেয়। স্বপ্না ও তার মা ওষুধ খেয়ে কিছুক্ষণের মধ্যে একই রুমে ঘুমিয়ে পড়ে। আনোয়ার যৌন কামনা চরিতার্থ করার উদ্দেশ্যে অচেতন স্বপ্নাকে কোলে করে তার মায়ের রুম থেকে পাশের রুমে নিয়ে যাওয়ার একপর্যায়ে সে জেগে যায়। তখন আনোয়ার জোরপূর্বক শারীরিক সম্পর্ক করার চেষ্টা করলে স্বপ্না বাধা দেয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে ধারালো বটি দিয়ে স্বপ্না ও তার মা জয়ফুল বেগমকে গলায় কুপিয়ে হত্যা করে আনোয়ার। পরে দরজা বন্ধ করে পালিয়ে যায় সে।
গত ১ জানুয়ারি জামালপুরের মেলান্দহ উপজেলার গোবিন্দপুর এলাকায় নিজ বাড়ির পৃথক কক্ষ থেকে মা-মেয়ের লাশ উদ্ধার করা হয়।
মা এবং মেয়েকে নিজ ঘরে গলা কেটে হত্যার ঘটনাটি বেশ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি করে। বিভিন্ন গণমাধ্যমে এ বিষয়ে সংবাদ প্রকাশ হলে সিআইডি ছায়া তদন্ত শুরু করে। তদন্তে আনোয়ারের সংশ্লিষ্টতা নিশ্চিত হওয়ার পর তাকে গ্রেপ্তার করা হয়।
বিএসডি /আইপি