নিজস্ব প্রতিবেদক:
চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের (চসিক) মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেছেন, চট্টগ্রাম নগরীতে যেকোনো উন্নয়ন কাজ করতে হলে চসিকের সঙ্গে সমন্বয় করে করতে হবে। জলাবদ্ধতা নিয়ে যে সংকট এখন বিদ্যমান, তা এই শুকনো মৌসুমেই শেষ করতে হবে। ১৮টি খালে যে কাজগুলো ইতোমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে বলে মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা অবগত করেছে, তা সম্পূর্ণভাবে পানি চলাচলের উপযোগী করতে হবে।
রবিবার সকালে টাইগারপাসস্থ চসিক অস্থায়ী কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে চট্টগ্রাম মহানগরীর জলবদ্ধতা সংক্রান্ত অগ্রগতি পর্যালোচনা সভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।
চসিক প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা মোহাম্মদ শহীদুল আলমের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সভায় বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের চেয়ারম্যান জহুরুল আলম দোভাষ, চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের প্রধান প্রকৌশলী মাহমুদুল হাসান খান, পানি উন্নয়ন বোর্ডের শিবেন্দু খাস্তগীর, মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন সংস্থার প্রকল্প পরিচালক লে: কর্ণেল মো. শাহ আলী, ওয়াসার তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. আরিফুল ইসলাম, সিএমপি’র উপ পুলিশ কমিশনার (ট্রাফিক) মো. তারেক আহম্মেদ।
চসিক মেয়র বলেন, নগরীর প্রকৃতি বিপর্যয়ের প্রধান কারণ হলো অবৈধভাবে পাহাড় কাটা এবং খাল, নালা-নর্দমায় বর্জ্য ফেলা। লক্ষ্য করা যাচ্ছে কর্ণফুলী নদী যেভাবে ভরাট হয়ে যাচ্ছে, তা অব্যাহত থাকলে চট্টগ্রাম বন্দর সম্পূর্ণভাবে অচল হয়ে যাবে। চট্টগ্রাম বন্দর বন্ধ হয়ে যাওয়া মানে পুরো বাংলাদেশ অচল হয়ে যাওয়া। সুতরাং এখন থেকেই এব্যাপারে সর্তকতার সঙ্গে ব্যবস্থা নেয়া আজ সময়ের দাবি। একই সঙ্গে জলাবদ্ধতা নিরসনের জন্য যে ৩৬টি খালগুলোতে প্রকল্প বাস্তবায়নের কাজ হচ্ছে তার বাইরে যে ২১টি খাল রয়েছে তার প্রকৃত অবস্থা সম্পর্কে অবগত হয়ে তাতে নতুন প্রকল্প গ্রহণপূর্বক জলাবদ্ধতা সম্পূর্ণ নিরসনে এখনই কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।
তিনি বলেন, বে-টার্মিনালের নির্মাণের যে প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে তাতে নগরীর পানি নিষ্কাশনের ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে হবে। চসিক নগরীতে যে সড়কগুলো নির্মাণ করছে তা দিয়ে ৮-১০টনের বেশি পণ্যবাহী গাড়ী চলাচল করার উপযোগী নয়। তবে বর্তমানে বন্দর কর্তৃপক্ষের ৩০-৪০টনের গাড়ি চলাচল করছে। এতে করে সড়ক সমূহের বেহাল অবস্থার সৃষ্টি হচ্ছে। বন্দরকে বিষয়টি বিবেচনায় নেওয়ার আহবান জানাই।
চউক চেয়ারম্যান জহুরুল আলম দোভাষ বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর সচল রেখে সকল উন্নয়ন কাজ করতে হবে। কর্ণফুলী রক্ষায় পলিথিনের উৎপাদন ও ব্যবহার নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে পরিবেশ অধিদপ্তরকে কঠোর অবস্থান গ্রহণ করতে হবে। ছোট-খাট যে ড্রেনগুলোর কাজ ইতিমধ্যে সম্পন্ন হয়েছে তা চসিককে বুঝে নিতে হবে। এছাড়া যে সুইচ গেইটগুলো চউক ইতিমধ্যে নির্মাণ সম্পন্ন করেছে তা পরিচালনার দায়িত্ব চসিককে গ্রহণ করার নিমিত্তে জনবল নিয়োগ ও প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা নিতে আহ্বান জানাই।
মেগা প্রকল্প বাস্তবায়ন সংস্থার প্রকল্প পরিচালক লে. কর্ণেল মো. শাহ আলী বলেন, বর্তমানে প্রকল্পের ৬০ ভাগ কাজ সম্পন্ন হয়েছে। শুকনো মৌসুমের মধ্যে নগরীর ১৮-২০টি খালের কাজ সম্পূর্ণরূপে শেষ হবে। ৪২টি সীল্টট্রেপ স্থাপনের কাজ চলছে। সব ঝুঁকিপূর্ণ ড্রেনের উপর ¯ø্যাব করা হবে। উন্মুক্ত খালগুলোতে ২ফিট উচ্চতার রেলিং করা হবে। তিনি রাজাখালি, রুবি সিমেন্ট, রামপুর ও ত্রিপুরা খালের কাজ এই বছরের মধ্যে শেষ হবে।
সভায় বক্তব্য রাখেন চসিক সচিব খালেদ মাহমুদ, প্রধান প্রকৌশলী রফিকুল ইসলাম মানিক, চউক সচিব মো. আনোয়ার পাশা, প্রধান প্রকৌশলী কাজী হাসান বিন শামস, বন্দরের সিনিয়র হাইড্রোগ্রাফার মো. নাছির উদ্দিন, জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধি রায়হান মাহবুব, পরিবেশ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মিয়া মাহমুদুল হক। উপস্থিত ছিলেন মেয়রের একান্ত সচিব মুহাম্মদ আবুল হাশেম, তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী মো. কামরুল ইসলাম, মনিরুল হুদা, আবু ছালেহ, সুদীপ বসাক, নির্বাহী প্রকৌশলী বিপ্লব দাশ, ফরহাদুল আলম, রাজীব দাশ, অতিরিক্ত প্রধান হিসাব রক্ষণ কর্মকর্তা হুমায়ুন কবীর চৌধুরী প্রমুখ।
বিএসডি /আইপি