আন্তর্জাতিক ডেস্ক
করোনাভাইরাস মহামারির মধ্যে বহু সংখ্যক অতিথি নিয়ে পার্টির আয়োজন করেছিলেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। যুক্তরাজ্যের প্রথম লকডাউনের মধ্যে আয়োজিত সেই পার্টিতে শতাধিক অতিথি আমন্ত্রিত ছিলেন এবং যার যার মদ তাকেই আনতে অতিথিদের প্রতি আহ্বান জানানো হয়েছিল।
সম্প্রতি সেই পার্টির অতিথিদের কাছে পাঠানো ইমেইল ফাঁসের ঘটনায় চাঞ্চল্যকর এই তথ্য সামনে আসে। আর এতেই বিতর্কের মধ্যে পড়েছেন ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন। মঙ্গলবার (১১ জানুয়ারি) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে সংবাদমাধ্যম বিবিসি ও ডয়চে ভেলে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, করোনা মহামারির কারণে আরোপ করা লকডাউনের মধ্যে আয়োজিত পার্টির যে ঘটনাটি নিয়ে বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে সেটি ২০২০ সালের মে মাসের। যুক্তরাজ্যজুড়ে সেসময় লকডাউন চলছে। সংক্রমণ রুখতে জনসমাবেশ ও পার্টিসহ সবকিছুর ওপরই নিষেধাজ্ঞা জারি ছিল। সেই বছর ২০ মে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটে ৪০ জনকে নিয়ে গার্ডেন পার্টি করেছিলেন বরিস জনসন।
সম্প্রচারমাধ্যম আইটিভি জানিয়েছে, ইমেইলের মাধ্যমে আমন্ত্রণ জানানো হয় অতিথিদের। সেই ইমেল তারা দেখেছে। ‘ব্রিং ইয়োর ওন অ্যালকোহল’ (নিজের মদ নিজে আনো) গার্ডেন পার্টির আয়োজন করেছিলেন জনসন।
অবশ্য করোনা সংক্রমণ রুখতে ব্রিটিশ সরকারের নিয়ম অনুযায়ী সে সময় সর্বোচ্চ মাত্র দু’জন বাড়িতে মিলিত হতে পারতেন। বার, রেস্তোরাঁ সব বন্ধ। আর সেই সময়েই কি না জনসন এই পার্টি করেন।
প্রধানমন্ত্রী জনসনের প্রিন্সিপাল প্রাইভেট সেক্রেটারি মার্টিন রেনল্ডস এই ইমেইল ১০০ জনেরও বেশি কর্মীকে পাঠিয়েছিলেন। সেই ইমেইলে বলা হয়েছিল, ‘ভয়ংকর ব্যস্ত সময়ের পর সুন্দর আবহাওয়ার সুযোগ নিন। আমরা সামাজিক দূরত্ব মেনে ১০ নম্বরের বাগানে সন্ধ্যায় জড়ো হবো। দয়া করে ৬টার সময় আসবেন এবং নিজের মদ নিজে নিয়ে আসবেন।’
আইটিভি জানিয়েছে, অতিথিদের সবাই সেদিন উপস্থিত না হলেও জনসন তার স্ত্রীসহ মোট ৪০ জনকে নিয়ে সেদিন পার্টি করেছিলেন।
অবশ্য জনসনের বিরুদ্ধে লকডাউনের বিধিভঙ্গের অভিযোগ নতুন নয়। ২০২০ সালে তিনি ১০ ডাউনিং স্ট্রিটে একাধিক পার্টি করেছেন বলে অভিযোগ। একজন উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তা এরকম পাঁচটি পার্টির অভিযোগ নিয়ে তদন্ত করছেন।
এদিকে করোনা বিধি লঙ্ঘন করে স্ত্রীকে সঙ্গে নিয়ে তিনি কোনো পার্টি করেছিলেন কি না, সোমবার সাংবাদিকরা এমন প্রশ্ন করলেও এর কোনো জবাব দেননি বরিস জনসন। তবে বিরোধী দলগুলো জনসনের তীব্র সমালোচনা করেছে। বিরোধী দল লেবার পার্টি ও স্কটিশ ন্যাশনাল পার্টির নেতারা বরিসের তীব্র সমালোচনা করেছেন।
বিএসডি/এসএ