নিজস্ব প্রতিবেদক:
প্রকৃতির সৌন্দর্য বাড়ায় যে কটি লতা তার অন্যতম আলোকলতা। একসময় প্রায় সব জায়গায় আলোকলতা দেখা যেত। সব মানুষই এ লতা চেনে। কাঁটাজাতীয় বা বরই গাছ মূলত এর প্রধান আশ্রয় কেন্দ্র। একসময় গ্রামীণ পথের ধারে গাছে গাছে জালের মতো বিস্তার করত আলোকলতা।
এখন বাসযোগ্য আবাস না থাকায় এ লতা প্রকৃতি থেকে হারিয়ে যাচ্ছে। শীতের পাতাঝরা প্রকৃতিতে মোহনীয় সৌন্দর্য ছড়ায় আলোকলতা। ষড়ঋতুর দেশ বাংলাদেশ। প্রতিটি ঋতুই ভিন্ন রূপবৈচিত্র্য নিয়ে হাজির হয় প্রকৃতিতে। পৌষের শিশিরভেজা মৃদু বাতাসে নীলফামারী জেলায় হলুদ রঙের গালিচায় মুগ্ধতা ছড়াচ্ছে আলোকলতা। এমন দৃশ্য চোখে পড়ে কিশোরগঞ্জ উপজেলার মাগুড়া সিংগের গাড়ি পাড়ার হাট সড়কের পাশে। দূর থেকে দেখলে মনে হয় ঝুরি ঝুরি হলদে সুতা ঝুলে আছে। এর ওপর রোদ পড়লে চকচক করে। গ্রামে এখন খুব কমই দেখা যায় এ আলোকলতা। হাকিম মো. মোস্তাফিজুর রহমান সবুজ বলেন, ‘আলোকলতায় ঔষধি গুণ আছে। মোটা লতা পিত্তজনিত রোগে, সরু লতা দূষিত ক্ষতে, ডায়াবেটিস ও জন্ডিস এবং বীজ কৃমি ও পেটের বায়ুনাশে খাওয়ানো হতো। এ ছাড়া পান্ডুরোগ, পক্ষাঘাত, মাংসপেশির ব্যথায় আলোকলতার বহুল ব্যবহার লক্ষণীয়। এটি রক্ত পরিস্কার করে। স্বাদে তিতা এ গাছ পিত্ত, সর্দি-কাশি কমায়। খোসপাঁচড়া নিরাময়েও প্রয়োগ করা যায়। তবে বর্তমানে এর ব্যবহার নেই বললেই চলে।’
কারমাইকেল কলেজের বিএসসির শিক্ষার্থী অন্তরা আক্তার বলেন, ‘আলোকলতা একটি পরজীবী উদ্ভিদ। গাছেই এর জন্ম, গাছেই বেড়ে ওঠা, বংশবিস্তার। কোনো পাতা নেই, লতাই এর দেহ-কান্ড-মূল সব। সোনালি রঙের চিকন লতার মতো বলে এরূপ নামকরণ।’ কৃষি অফিসার হাবিবুর রহমান বলেন, ‘জীবন্ত গাছে জন্ম নিয়ে পরগাছ অবলম্বন করে টিকে থাকে। যে গাছে জন্মায় সে গাছের ডাল ও কান্ড থেকে খাদ্য সংগ্রহ করে। প্রাকৃতিকভাবে বংশবিস্তার করে। পৌষ ও চৈত্রে এ লতা বেড়ে ওঠে এবং জালের মতো বিস্তার ঘটায়। দেশের সর্বত্রই আলোকলতার উপযোগী আবাসস্থল। ফলে নির্ভরশীল গাছে আপনমনে জন্মায় আলোকলতা। এখন আলোকলতার ভরা মৌসুম। জন্ম নিয়ে বেড়ে ওঠার জন্য ডগা উঁকিঝুঁকি দিচ্ছে।
বিএসডি /আইপি