জ্যেষ্ঠ প্রতিবেদক
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগকে নাৎসিবাদ ও ফ্যাসিবাদের এক দূষিত মিশ্রণ বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবীর রিজভী।
তিনি দাবি করে বলেন, আওয়ামী শাসনের ছত্রে ছত্রে শুধু পৈশাচিকতা ও বিভীষিকার উপস্থিতি। এরা গুমের কর্মসূচির বৃত্তের মধ্যে ভয়ংকর নাৎসিবাদী পন্থায় অপশাসন চালিয়ে যাচ্ছে। এদের অন্তর্নিহিত লক্ষ্য ও উদ্দেশ্য হচ্ছে দেশ থেকে বিরোধী শক্তিকে নিশ্চিহ্ন করা।
বৃহস্পতিবার (১৩ জানুয়ারি) দুপুরে নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেন তিনি।
দেশের মানুষ স্বৈরাচার সরকারের প্রতি অতিষ্ঠ ও বিক্ষুব্ধ বলে উল্লেখ করেন রিজভী। তিনি বলেন, এই সরকারের হাত থেকে জনগণ মুক্তি চায়, গণতন্ত্র ও ভোটাধিকার ফিরে পেতে চায়। একাত্তরের মতো বর্তমানে আওয়ামী হানাদারদের হাত থেকে পরিত্রাণ পেতে দেশের মানুষ আজ মুক্তি পাগল হয়ে উঠেছে। আমাদের সভা সমাবেশগুলোতে মানুষের ঢল নামছে। ১৪৪ ভেঙে জনস্রোত নেমে আসছে রাজপথে। জনগণের এখন সংশপ্তক অঙ্গীকার, জীবন দিয়ে হলেও এ মাফিয়াদের হটিয়ে দেশের মানুষকে মুক্ত করতে হবে।
বিধিনিষেধের মধ্যে বিএনপির কর্মসূচির চলমান থাকবে কিনা জানতে চাইলে রিজভী বলেন, আমাদের কর্মসূচি চলমান রয়েছে। এই অবস্থা কর্মসূচি চলমান থাকবে কিনা সে বিষয়ে শিগগিরই সিদ্ধান্ত জানানো হবে।
সরকার গণতন্ত্র ও গণতান্ত্রিক সব প্রতিষ্ঠান ধ্বংস করেছে বলে মন্তব্য করে সাবেক এই ছাত্র নেতা বলেন, বিনা নির্বাচনে পার্লামেন্ট, বিচার বিভাগ ও প্রশাসনকে দলীয়করণ করেছে। মানবাধিকার, আইনের শাসন, ন্যায়বিচার ভূলুণ্ঠিত করেছে। দেশকে গুম, খুন, অপহরণ, বন্দুকযুদ্ধ, অবিচার, অনাচার, লুটপাট, টাকা পাচার, দুর্নীতি ও সন্ত্রাসের অন্ধকার রাজত্বে ডুবিয়ে রেখেছে।
তিনি আরও বলেন, বাস্তবে তথাকথিত ওয়ান ইলেভেনের পর পথ হারিয়েছে বাংলাদেশ। জনগণ হারিয়েছে বাক ও ব্যক্তি স্বাধীনতা, গণতন্ত্র, ভোটাধিকার, মানবিক মর্যাদা ও ন্যায়বিচার। কথিত ওয়ান ইলেভেনের মাধ্যমে দেশে গণতন্ত্রের কবর রচনা করা হয়েছে।
নির্বাচন কমিশনসহ গণতন্ত্রের জন্য অপরিহার্য প্রতিটি প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দেওয়া হয়েছে। একজন মাত্র ব্যক্তির অবৈধ ক্ষমতার খায়েশ মেটাতে গিয়ে দেশের আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে লেলিয়ে দেওয়া হয়েছে জনগণের ওপর। এই আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি বিশেষ চক্র গণতন্ত্রকামী মানুষকে গুম, খুন, অপহরণ করতে গিয়ে দেশের জন্য কলঙ্ক বয়ে এনেছে। দেশের অর্থনীতি হুমকির মুখে পড়েছে।
বিশ্বের ১০টিরও বেশি দেশ মনে করে বাংলাদেশে গণতন্ত্র নেই। এমনটা দাবি করে রিজভী বলেন, ক্ষমতা দখল করে মানুষকে শোষণ করে নাম দিয়েছে রোল মডেল। কোন দেশ এই রোল মডেলের কথা বলেছে, অনুসরণ করেছে, তা জনগণ জানতে চায়।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন বিএনপির স্বেচ্ছাসেবক বিষয়ক সম্পাদক মীর সরাফত আলী সপু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবদুস সালাম আজাদ, সহ-দফতর সম্পাদক মুহাম্মদ মুনির হোসেন, মহিলা দলের সভাপতি মহিলা আফরোজা আব্বাস প্রমুখ।
বিএসডি/এসএ