প্রতিবাদ সমাবেশ ও অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নেওয়া শিক্ষকেরা বলেন, সব আন্দোলনের যৌক্তিক দাবি থাকতে হবে। শিক্ষার্থীরা বিভিন্ন যৌক্তিক দাবি নিয়ে আন্দোলন করবেন, এটাই কাম্য। এতে শিক্ষকদের সমর্থন থাকবে। কিন্তু প্রতিবাদের ভাষা হতে হবে শালীন। শিক্ষার্থীরা শিক্ষকদের সন্তানতুল্য। শিক্ষকেরা কখনোই শিক্ষার্থীদের বিপক্ষে নয়। আন্দোলনের নামে অযৌক্তিক দাবি তুলে সেখান থেকে শিক্ষকদের চরিত্র নিয়ে ‘কটূক্তি’ করা হবে, এগুলো কোনোভাবেই কাম্য নয়।
শিক্ষক ও শিক্ষার্থীদের সম্পর্ক অভিভাবক ও সন্তানদের মতো হতে হবে উল্লেখ করে সমাবেশে শিক্ষকেরা আরও বলেন, শিক্ষার্থীদের এমন মন্তব্য কোনোভাবে কাম্য কিংবা গ্রহণযোগ্য নয়। শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সমাধান হোক। সেটি আলোচনার মাধ্যমে সম্ভব। এ সময় আলোচনার মাধ্যমে সংকটের সমাধানের জন্য আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতি আহ্বান জানান তাঁরা।
শিক্ষকদের এই কর্মসূচিতে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক জসিম উদ্দিন, লাইলা আশরাফুন, ইংরেজি বিভাগের অধ্যাপক হিমাদ্রী শেখর রায়, সমাজকর্ম বিভাগের অধ্যাপক মিজানুর রহমান, গণিত বিভাগের অধ্যাপক চন্দ্রনী নাগ, ইন্ডাস্ট্রিয়াল অ্যান্ড প্রোডাকশন ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের জাহিদ হাসান প্রমুখ।
গত সোমবার থেকে ক্যাম্পাসে অবস্থান নিয়ে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা। উপাচার্যকে পদত্যাগের জন্য আজ দুপুর ১২টা পর্যন্ত সময় বেঁধে দিয়েছেন তাঁরা। তবে পূর্বঘোষণা অনুযায়ী এর মধ্যে পদত্যাগ না করায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ২৪ শিক্ষার্থী আমরণ অনশনে বসেছেন।
সাধারণ শিক্ষার্থীরা জানান, দীর্ঘদিন বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকার পরও মেসভাড়ায় কোনো ছাড় না দেওয়াসহ একাধিক ‘অন্যায্য’ সিদ্ধান্তে অনেক দিন ধরে তাঁরা ক্ষুব্ধ ছিলেন। হলের ছাত্রীদের বিক্ষোভ শুরুর পর সেই ক্ষোভ শিক্ষার্থীদের মধ্যে আরও জোরালোভাবে ছড়িয়ে পড়ে।
এ আন্দোলনের সূত্রপাত গত বৃহস্পতিবার। ওই দিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তাঁর পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন হলের কয়েক শ ছাত্রী। গত শনিবার সন্ধ্যার দিকে ছাত্রলীগ হলের ছাত্রীদের ওপর হামলা চালায়। পরদিন বিকেলে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি ভবনে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন। তখন পুলিশ শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা ও তাঁদের লক্ষ্য করে শটগানের গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। ওই দিন রাত সাড়ে আটটার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ও শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার ঘোষণা দিলেও শিক্ষার্থীরা তা উপেক্ষা করে উপাচার্যের পদত্যাগ চেয়ে আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছেন। শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ঢাকা, রাজশাহী, জাহাঙ্গীরনগর, খুলনা ও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে বিক্ষোভ করেছেন শিক্ষার্থীরা।
বিএসডি/ এলএল