নিজস্ব প্রতিবেদক:
শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (শাবিপ্রবি) উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে আমরণ অনশন কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষার্থীরা। এ নিয়ে সৃষ্ট উদ্ভূত পরিস্থিতিতে বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষকদের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে বসছেন শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি।
শনিবার সন্ধ্যা সাড়ে ৬টায় রাজধানীর হেয়ার রোডে শিক্ষামন্ত্রীর বাসায় এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে বলে সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ তথ্য কর্মকর্তা আবুল খায়ের।
সূত্রে জানা গেছে বিশ্ববিদ্যালয়টির প্রতিনিধি দলের পাঁচ শিক্ষকের সঙ্গে বসছেন মন্ত্রী। তারা হলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক তুলসি কুমার দাশ, সাধারণ সম্পাদক মহিবুল আলম, ফিজিক্যাল সায়েন্স অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. রাশেদ তালুকদার, অ্যাপ্লাইড সায়েন্স অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. আরিফুল ইসলাম ও বাণিজ্য অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. খায়েরুল ইসলাম রুবেল। এর আগে শুক্রবার রাতে শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে ঢাকায় আসেন তারা।
শনিবার বিকেলে রাজধানীতে এক অনুষ্ঠানে শিক্ষামন্ত্রী সাংবাদিকদের বলেছিলেন, তিনি আন্দোলনকারী এবং শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনায় বসতে চান। তিনি আরও বলেছিলেন, ‘আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ের নিজস্ব বিষয়ে সরাসরি হস্তক্ষেপ করতে চাই না। তবে সেখানে আমাদের শিক্ষার্থীরা অনশন করছেন, কেউ কেউ কিছুটা অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে গেছে। আমি এখন ডাক্তারের সঙ্গে কথা বলেছি, কারও কোনো আশঙ্কাজনক কিছু নেই। যারা এখনও অনশন চালিয়ে যাচ্ছে, তাদের দু-তিনজনকে হয়ত স্যালাইন দেওয়া হচ্ছে। তাদের সঙ্গে আমি কথা বলেছি। আমি চাই, তাদের একটি প্রতিনিধি দল যদি পাঠাতে পারে। তারাও আসতে পারে। যত দ্রুত সম্ভব তারা এলে আলাপ-আলোচনা করতে চাই। শিক্ষক সমিতির নেতাদের সঙ্গেও একটু আলাপ করতে চাই।’ আলাপ-আলোচনার মাধ্যমেও যেকোনো সংকট মোকাবিলা করা সম্ভব বলে মনে করেন দীপু মনি।
উপাচার্য ফরিদ উদ্দিন আহমেদের পদত্যাগের দাবিতে এক সপ্তাহ ধরে উত্তাল শাহজালাল বিশ্ববিদ্যালয়। সর্বশেষ গত বুধবার উপাচার্যের বাসার সামনে আমরণ অনশনে বসেন ২৪ শিক্ষার্থী। এরমধ্যে একজনের বাবা হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ায় তিনি অনশন শুরুর পরের দিনই বাড়ি চলে যান। বাকি ২৩ অনশনকারীর মধ্যে এখন ১৫ জন হাসপাতালে ভর্তি আছেন। বাকি আট শিক্ষার্থী উপাচার্যের বাসভবনের সামনে অনশন চালিয়ে যাচ্ছেন। তাদের শরীরে স্যালাইন পুশ করেছেন চিকিৎসকরা।
শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের সূত্রপাত হয় ১৩ জানুয়ারি। ওই দিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের বেগম সিরাজুন্নেসা চৌধুরী হলের প্রাধ্যক্ষ জাফরিন আহমেদের বিরুদ্ধে অসদাচরণের অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগসহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন হলের কয়েকশ ছাত্রী। ১৫ জানুয়ারি সন্ধ্যায় ছাত্রীদের এই আন্দোলনে হামলা চালায় ছাত্রলীগ।
পরের দিন বিকেলে শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়ের আইসিটি ভবনে উপাচার্যকে অবরুদ্ধ করেন। তখন শিক্ষার্থীদের লাঠিপেটা ও তাদের লক্ষ্য করে শটগানের গুলি ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে পুলিশ। এরপর ওই দিন রাতে বিশ্ববিদ্যালয় অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ও শিক্ষার্থীদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেয় কর্তৃপক্ষ। কিন্তু শিক্ষার্থীরা তা উপেক্ষা করে উপাচার্যের পদত্যাগের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেন।
বিএসডি/ এলএল