নিজস্ব প্রতিবেদক:
বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন (বিএফডিসি) প্রাঙ্গণ কঠোর নিরাপত্তার চাদরে মুড়ে শুরু হয়েছে বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির ২০২২-২৪ মেয়াদের দ্বিবার্ষিক নির্বাচন।
শুক্রবার সকাল সোয়া ৯টা থেকে শুরু হয়ে ভোটগ্রহণ চলবে বিকেল ৫টা পর্যন্ত। সকাল থেকে এফডিসির প্রবেশ পথে দেখা গেছে কঠোর নিরাপত্তা। ভোটারদের পাশাপাশি গণমাধ্যম কর্মীদের এন্ট্রি পাস, ভোটার কার্ড দেখিয়ে তারপর প্রবেশ করানো হচ্ছে।
এমন নিরাপত্তা বলয়ের ভেতর দিয়ে এফডিসিতে প্রবেশকে ‘একরকম যুদ্ধ’ বলছেন সভাপতি প্রার্থী অভিনেতা ইলিয়াস কাঞ্চন। এদিন ৯টা ১৬ মিনিটে নিজের ভোট দেন ইলিয়াস কাঞ্চন।
নির্বাচন নিয়ে ইলিয়াস কাঞ্চন বলেন, ‘আশা করি দিনভর শিল্পীরা আনন্দ নিয়েই ভোট দিতে পারবেন। এফডিসিতে ভোটের পরিবেশ নিয়ে আমি সন্তুষ্ট।’
শিল্পী সমিতির নির্বাচনে পূর্ণাঙ্গ প্যানেল নিয়ে নির্বাচন করছে দুটি প্যানেল। প্যানেল দুটো হল, ইলিয়াস কাঞ্চন-নিপুণ আক্তার এবং মিশা সওদাগর-জায়েদ খান। এই দুই প্যানেলের মধ্যে হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হবে বলে মনে করছেন চলচ্চিত্র শিল্পীরা। তারা বলছেন, অন্যান্যবারের চেয়ে এবার শিল্পী সমিতির নির্বাচন অনেক বেশি মনযোগ কেড়েছে।
ইলিয়াস কাঞ্চন সভাপতি ও নিপুণ আক্তার সাধারণ সম্পাদক পদে নির্বাচন করছেন। এ প্যানেল থেকে সহ-সভাপতি পদে চিত্রনায়ক রিয়াজ আহমেদ ও ডি.এ তায়েব, সহ-সাধারণ সম্পাদক চিত্রনায়ক সাইমন সাদিক, সাংগঠনিক সম্পাদক অভিনেত্রী শাহনুর, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক চিত্রনায়ক নিরব হোসেন, দপ্তর ও প্রচার সম্পাদক অভিনেতা আরমান, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া সম্পাদক চিত্রনায়ক মামনুন হাসান ইমন ও কোষাধ্যক্ষ পদে নির্বাচন করবেন অভিনেতা আজাদ খান নির্বাচনে প্রার্থী হয়েছেন।
এই প্যানেলের কার্যকরী পরিষদের সদস্য পদে প্রার্থী হচ্ছেন অমিত হাসান, চিত্রনায়ক ফেরদৌস, চিত্রনায়ক শাকিল খান, অভিনেতা নানা শাহ, কমেডিয়ান আফজাল শরীফ, খল-অভিনেতা সাংকো পাঞ্জা, অভিনেত্রী জেসমীন, চিত্রনায়িকা কেয়া, পরীমনি, খল-অভিনেতা গাঙ্গুয়া ও সীমানা।
অপর প্যানেলে সভাপতি পদে মিশা সওদাগর ও সাধারণ সম্পাদক পদে জায়েদ খান। এই প্যানেলে সহ-সভাপতি পদে লড়ছেন মনোয়ার হোসেন ডিপজল ও রুবেল, সহ-সাধারণ সম্পাদক সুব্রত, সাংগঠনিক সম্পাদক আলেকজান্ডার বো, আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক জয় চৌধুরী, দপ্তর ও প্রচার সম্পাদক জেকে আলমগীর, সংস্কৃতি ও ক্রীড়া সম্পাদক জাকির হোসেন, কোষাধ্যক্ষ ফরহাদ।
এই প্যানেলের কার্যকরী পরিষদের সদস্য পদে প্রার্থী হচ্ছেন রোজিনা, অঞ্জনা, সুচরিতা, অরুনা বিশ্বাস, মৌসুমী, আসিফ ইকবাল, বাপ্পারাজ, আলীরাজ, নাদের খান ও হাসান জাহাঙ্গীর।
এছাড়াও কার্যনির্বাহী সদস্য পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়েছেন ডন ও হরবোলা।
শুক্রবার সকাল ৯টা থেকে এফডিসির আর্টিস্ট স্টাডিরুমে শুরু হয় ভোটদান পর্ব, বিকেল ৫টা পর্যন্ত চলবে ভোট গ্রহণ। নামাজ ও মধ্যাহ্নভোজের জন্য বেলা ১টা থেকে ২টা পর্যন্ত বিরতি থাকবে ভোটগ্রহণে। এবারের নির্বাচনে ভোটার সংখ্যা ৪২৮ জন।
এর আগে গত ৮ জানুয়ারি এই নির্বাচনের খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশ করা হয়। সেই তালিকা সংশোধন করে ১০ জানুয়ারি চূড়ান্ত ভোটার তালিকা প্রকাশ।
১১ জানুয়ারি মনোনয়নপত্র সংগ্রহ শুরু করেন চলচ্চিত্র শিল্পীরা। মনোনয়নপত্র প্রত্যাহারের শেষ দিন ছিল ১৫ জানুয়ারি। চূড়ান্ত প্রার্থী তালিকা প্রকাশ করা হয় ১৬ জানুয়ারি।
শিল্পী সমিতি জানিয়েছে, শুক্রবার নির্বাচনের ফলাফলের বিরুদ্ধে নির্বাচনী আপিল বোর্ডের কাছে আবেদন করা যাবে। ৫ হাজার টাকা জমা দিয়ে আপত্তি দাখিলের শেষ তারিখ ২৯ জানুয়ারি। চূড়ান্ত সংশোধিত ফলাফল দেওয়া হবে ৩০ জানুয়ারি। নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফল ঘোষণার সাত দিনের মধ্যে বিদায়ী পরিষদ নবনির্বাচিত পরিষদের কাছে দায়িত্ব বুঝিয়ে দেবে।
এ বছর চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতি নির্বাচনের নির্বাচন কমিশনের প্রধান পীরজাদা শহীদুল হারুন এবং সদস্য বজলুর রশিদ চৌধুরী ও বিএইচ নিশান। আপিল বোর্ডের প্রধান হিসেবে আছেন সোহানুর রহমান সোহান, মোহাম্মদ হাসান ও মোহাম্মদ হোসেন জেমী।
সমিতির নির্বাচন ঘিরে শিল্পীদের মিলনমেলায় পরিণত হয়েছে এফডিসি। চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির নির্বাচনী প্রচারণা শেষ হলেও দুই প্যানেলের প্রার্থীরা নির্বাচনী নানা কর্মকাণ্ডে এখনও ব্যস্ত সময় পার করছেন।
দুই প্যানেলের প্রার্থীরা বলছেন, ভোটাররা যাকে ভালো মনে করবেন তাকেই ভোট দেবেন। ফলাফল যা হোক না কেন, এই শিল্পের উন্নয়নের জন্য কাজ করবেন সবাই মিলেমিশে। শিল্পী সমিতির মূল লক্ষ্য এফডিসি, চলচ্চিত্র ও শিল্পীদের উন্নয়ন।
বিএসডি/ এলএল