নিজস্ব প্রতিবেদক:
কক্সবাজারের টেকনাফের মেরিন ড্রাইভ সড়কের শামলাপুর তল্লাশি চৌকিতে ২০২০ সালের ৩১ জুলাই রাতে পুলিশের গুলিতে নিহত হন মেজর সিনহা মো. রাশেদ খান (অব.)। এ ঘটনায়, র্যাবের তদন্ত ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় গঠিত তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনে সেদিনের ঘটনার নানা তথ্য উঠে আসে। গতকাল আদালতের রায়ে বলা হয়েছে পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড।
মেজর (অব.) সিনহা তাঁর ‘জাস্ট গো’ ইউটিউব চ্যানেলের জন্য ভ্রমণবিষয়ক ডকুমেন্টারি ফিল্ম তৈরির জন্য ৩ জুলাই কক্সাবাজারে যান।
সেখানে তাঁর সঙ্গী ছিলেন স্টামফোর্ট বিশ্ববিদ্যালয়ের দুই শিক্ষার্থী শিপ্রা দেবনাথ ও সাহেদুল ইসলাম সিফাত। তাঁরা মেরিন ড্রাইভের নিলিমা রিসোর্টে উঠে বিভিন্ন স্থানে ভিডিও ধারণ করছিলেন। ঘটনার দিন তাঁরা শিপ্রাকে হোটেলে রেখে টেকনাফে মারিশবুনিয়া এলাকার পাহাড়ে ভিডিওচিত্র ধারণ করতে যান। সেখান থেকে ফেরার পথে শামলাপুরে এপিবিএনের তল্লাশি চৌকিতে পুলিশ তাঁকে গুলি করে। পরিদর্শক লিয়াকত একে একে সিনহাকে চারটি গুলি করেছিলেন। আর টেকনাফ থানার ওসি ফোনে তাঁকে নির্দেশনা দেন।
সিনহার নিথর দেহ যখন রাস্তায় পড়েছিল, তখন ওসি প্রদীপ সেখানে গিয়ে বুট জুতা দিয়ে লাথি মেরে মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার চেষ্টা করেন। প্রথমে তাঁরা সিনহাকে ডাকাত বলে প্রচার করেন। অভিযুক্ত পুলিশ সদস্যরা তাঁর হোটেল রুম তল্লাশি করে সহযোগীদের বিরুদ্ধে মামলা দিয়ে জেলে পাঠান। পরে র্যাবের তদন্তে উঠে আসে বিনা উসকানিতে উদ্দেশ্যমূলকভাবে গুলি করে হত্যার বর্ণনা। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে ঘটনার পূর্ণ বিবরণের সঙ্গে অনেক প্রশ্ন আসে সামনে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়, পাহাড় থেকে নেমে শামলাপুর তল্লাশি চৌকিতে আসার আগে সিনহা বিজিবির একটি চৌকিতে থেমেছিলেন। বিজিবির সদস্যরা সিনহার পরিচয় জানার পর তাঁকে স্যালুট করেছিলেন। সেখান থেকে ছয় কিলোমিটার আসার পর শামলাপুর তল্লাশি চৌকি, যেখানে সিনহাকে গুলি করা হয়। সিনহার গাড়ি তল্লাশি চৌকিতে এলে কনস্টেবল রাজীব সংকেত দেন। গাড়ি থেমে যায়। বাঁ দিকের কাচ নামিয়ে সিনহা পরিচয় দিলে এসআই শাজাহান পেছনে সরে যান। গাড়ি আবার চলতে শুরু করে। এরপর লিয়াকত এসে ব্যারিকেড দিয়ে পিস্তল তাক করেন।
সিনহাকে গুলি করার ২০ থেকে ২৫ মিনিট পর প্রদীপ ঘটনাস্থলে আসেন। এর আগে সিনহাকে হাসপাতালে পাঠানোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। প্রদীপ আসার ২২ মিনিট পর সিনহাকে ট্রাকে তোলা হয়।
বিএসডি/ এলএল