বর্তমান সময় ডেস্ক:
নাম তার ইশা ইসমাইল। ছিলেন নারী। পরে পুরুষ হওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। যেই সিদ্ধান্ত সেই কাজ। বয়স তখন ১৯। রূপান্তরিত হলেন পুরুষে। ছয় বছর পর এখন আবার নারীতে ফিরে যেতে চলেছেন তিনি।
জানা গেছে, আমেরিকার মিশিগান অঙ্গরাজ্যের ডেট্রয়েটের বাসিন্দা ইশা ইসমাইল। নারী হিসেবে জন্মে নিজের শরীর এবং নারীত্বকে তিনি অপছন্দ করতে শুরু করেন। এখন ২৬ বছর বয়সী ইশা নিজেকে রূপান্তরকামী বলে ঘোষণা করেন ১৯ বছর বয়সেই। তখন থেকেই শুরু হয় তার পুরুষ হওয়ার প্রক্রিয়া।
প্রথমেই অস্ত্রোপচার করে নিজের শরীর থেকে স্তন দু’টি বাদ দেন ইশা। তিনি জানিয়েছেন, নিজেকে একজন সম্পূর্ণ পুরুষ হিসেবে দেখতে তিনি এতটাই আগ্রহী ছিলেন যে এ ব্যাপারে একটুও দেরি করতে চাননি। এরপর হরমোনের চিকিৎসাও শুরু করা হয়। পুরুষদেহে যে হরমোনের প্রভাব সবচেয়ে বেশি, সেই টেস্টোস্টেরন হরমোন নিয়মিত নিতে শুরু করেন তিনি।
১১ মাসের মধ্যেই তার শরীরে পুরুষ হওয়ার লক্ষণ প্রকট হতে শুরু করে। ইশা জানান, তার শারীরিক পরিবর্তনের প্রতি মুহূর্তই তিনি উপভোগ করেছেন। প্রতি মুহূর্তের রেকর্ডও রেখেছেন ছবি ও ভিডিওতে।
টানা ছ’বছর হরমোন চিকিৎসার পর পুরদস্তুর পুরুষ হয়ে ওঠেন তিনি। নিজের ছবি দিয়ে ইশা ইন্সটাগ্রামে লিখেছেন, জন্মগত পুরুষের সঙ্গে আমার তফাৎ করা যেত না তখন।
অথচ এই ইশাই ২০১৫ সালের আগে তার বয়সী আর পাঁচটি মেয়ের মতোই সাজগোজ প্রেমী তরুণী ছিলেন। এমনকি একজন প্রেমিকও ছিল তার।
পুরনো জীবনের বর্ণনা দিতে গিয়ে ইশা লিখেছিলেন, ছোটবেলায় আবার একটু ছেলে ছেলে ভাব থাকলেও পরের দিকে আমি কিন্তু একজন সাধারণ তরুণীই ছিলাম।
পরে পুরুষ হয়েও সুখী হতে পারছিলেন না ইশা। ২০২১ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে তার আচমকাই মনে হয়, তিনি পুরুষ জীবন আর চান না। এ কারণে তিনি হতাশায় ভুগতে থাকেন।
এই হতাশাবোধ থেকেই আবার শরীর বদলানোর সিদ্ধান্ত নেন ইশা। টেস্টোস্টেরন হরমোন নেওয়া বন্ধ করে দেন ইশা। সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন আবার ফিরবেন পুরনো শরীরে। জন্মসূত্রে পাওয়া নারীদেহই প্রয়োজন তার।
আপাতত সেই প্রক্রিয়াই শুরু করেছেন ইশা। ৬ বছর ধরে পুরুষ হয়ে এবার ফের নারীত্বে ফিরছেন তিনি। হরমোনের চিকিৎসা বন্ধ করার কয়েক মাসের মধ্যেই নারীত্ব অনুভবও করছেন বলে জানিয়েছেন ওই রূপান্তরকামী।
এখন ইশা চান, তার মতো যারা নিজেদের পরিচয় নিয়ে দ্বিধাগ্রস্ত তাদের তিনি সাহায্য করবেন। তবে একজন দ্বিধাগ্রস্ত রূপান্তরকামী হিসেবে ইশার পরামর্শ সত্যিই তারা নেবেন কি না বা নিলেও ভবিষ্যতে সিদ্ধান্ত বদলাতে হবে সেটাই প্রশ্ন!