নিজস্ব প্রতিবেদক:
বিএনপি নেতাদেরকে দেশবিরোধী ষড়যন্ত্রের পথ পরিহার করার আহ্বান জানিয়েছেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহণ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের।
তিনি বলেন, খালেদা জিয়ার চিকিৎসা নিয়ে বিএনপি নেতারা যে রাজনৈতিক কূটচাল চেলেছিল এবং বিষয়টি নিয়ে জনগণকে জিম্মি করার যে অপচেষ্টায় লিপ্ত হয়েছিল- তা ব্যর্থতায় পর্যবসিত হয়েছে। একইসঙ্গে দেশের ভাবমূর্তি নষ্টে বিদেশে লবিস্ট নিয়োগের মধ্য দিয়ে বাংলাদেশের ক্ষতি সাধনের যে অপকৌশল তারা গ্রহণ করেছিল, তাদের সে ষড়যন্ত্রও ব্যর্থ হয়েছে।
শনিবার সন্ধ্যায় এক বিবৃতিতে এসব কথা বলেন ক্ষমতাসীন দলের সাধারণ সম্পাদক।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বাংলাদেশের জনগণ কোনো গোষ্ঠীর স্বার্থ রক্ষায় ত্রিশ লাখ শহিদের রক্তের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব কখনো ক্ষুন্ন হতে দেয়নি; দেবেও না। জাতীয় ও আন্তর্জাতিক অঙ্গনে তাদের সব ষড়যন্ত্র ব্যর্থ হওয়ায় বিএনপি নেতারা আজ চরম হতাশার চোরাবালিতে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে। সেই হতাশার ভূত দেশের জনগণের ওপর চাপিয়ে দেওয়ার পাঁয়তারা চালাচ্ছে।
বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীরের বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়ে বিবৃতিতে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, সফল শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বে এক সময়ের মঙ্গা-খরা দুর্যোগ-দুর্ভিক্ষ কবলিত বাংলাদেশ আজ খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জন করেছে। বিএনপি-জামায়াত অশুভ জোট আমলে যেখানে উত্তরবঙ্গের মঙ্গাপীড়িত অসংখ্য মানুষকে না খেয়ে মরতে হয়েছে- সামান্য বন্যাসহ অন্যান্য প্রাকৃতিক দুর্যোগে মানুষকে অভুক্ত থেকে ধুঁকে ধুঁকে মরতে হয়েছে; সেখানে শেখ হাসিনার দূরদর্শী পদক্ষেপে দেশে খাদ্য ও পুষ্টি নিরাপত্তা নিশ্চিত হয়েছে।
তিনি বলেন, কৃষিবান্ধব নীতি এবং কৃষিখাতে গবেষণায় সরকারি সহযোগিতার কারণে খাদ্যশস্যসহ কৃষিপণ্য উৎপাদন বহু গুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। ২০০৯ সালে যেখানে খাদ্যশস্য উৎপাদন ছিল মাত্র ৩২৮.৯৬ লাখ মেট্রিক টন, সেখানে ফসলি জমির পরিমাণ কমে যাওয়ার পরও বর্তমানে খাদ্যশস্য উৎপাদন ৪৫৫.০৫ লাখ মেট্রিক টনে উন্নীত হয়েছে। বাংলাদেশ আজ বিশ্বে ধান, সবজি ও পেঁয়াজ উৎপাদনে তৃতীয়, আলু ও আম উৎপাদনে সপ্তম এবং পেয়ারা উৎপাদনে অষ্টম স্থানে রয়েছে। আমাদের কৃষি এখন ‘জীবন নির্বাহী’ হতে ‘বাণিজ্যিক’ কৃষিতে রূপান্তরিত হচ্ছে। ‘রপ্তানিমুখী কৃষি অর্থনীতি’ গড়ে উঠছে।
বিবৃতিতে মন্ত্রী আরও বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে কেবল কৃষিখাতেই উন্নতি সাধিত হয়নি; গত ১৩ বছরে কৃষি খাতের মতো আর্থ-সামাজিক সব সূচকে বাংলাদেশের প্রশংসনীয় অগ্রগতি অর্জিত হয়েছে। বাংলাদেশের অর্থনীতির আকার বহুগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে। বৈশ্বিক মহামারি করোনার সময়েও বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধি ছিল সন্তোষজনক। মাথাপিছু আয় ২৫৫৪ ডলারে উন্নীত হয়েছে। অর্থনৈতিক উন্নয়নের ফলে জনগণের ক্রয় ক্ষমতা বৃদ্ধি পেয়েছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি-জামায়াত অশুভ জোট শাসনামলের চরম খাদ্য ঘাটতি ও পুষ্টি নিরাপত্তাহীনতার দুঃসহ স্মৃতি দেশবাসী ভুলে যায়নি। এমনকি সে সময় সারের দাবিতে আন্দোলনরত কৃষককে গুলি করে হত্যা করা হয়। চাঁপাইনবাবগঞ্জের কানসাটে বিদ্যুতের দাবিতে আন্দোলন করায় জনগণকে গুলি করে হত্যা করা হয়। রাষ্ট্র পরিচালনায় বিএনপি ফ্যাসিবাদী নীতি গ্রহণ করেছিল। বিরোধী দলসহ জনগণের ওপর অত্যাচার-নির্যাতনের স্টিম রোলার চালিয়েছিল। রাষ্ট্র পরিচালনায় বিএনপি জনগণের দাবির প্রতি তোয়াক্কা না করে লুটপাটতন্ত্রের রাজত্ব কায়েম করেছিল। আজ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে জনগণের সুবিধা-অসুবিধা বিবেচনায় নিয়ে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনা ও ব্যবস্থাপনার মধ্য দিয়ে রাষ্ট্র পরিচালিত হচ্ছে। তাই বাংলাদেশে এখন কোনো খাদ্যাভাব দেখা যায় না।