করোনাভাইরাসের সংক্রমণ নিয়ন্ত্রণে রাখতে সরকারঘোষিত বিধিনিষেধের কারণে রাজধানী ঢাকার গাবতলী থেকে দূরপাল্লার যানবাহন চলাচল বন্ধ আছে। তবে অনেক যাত্রী বলছেন, তাঁরা যান চলাচল বন্ধ থাকার বিষয়টি জানেন না। কেউ কেউ ঢাকার বাইরে যেতে না পেরে ফিরে যাচ্ছেন। কেউ আবার বিকল্প উপায়ে গন্তব্যে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। গাবতলী কিংবা সাভারের আশপাশে যাঁদের গন্তব্য ছিল, তাঁরা হেঁটে আমিনবাজার সেতু পার হয়ে বাস ধরার চেষ্টা করছেন।
গাবতলী বাস টার্মিনাল এলাকায় আজ সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, এখান থেকে দূরপাল্লার যান চলাচল বন্ধ আছে। টার্মিনাল কার্যত ফাঁকা, টিকিট কাউন্টারগুলোও বন্ধ রয়েছে। ঢাকার বাইরে যাওয়ার উদ্দেশ্যে আসা বাসগুলোকে গাবতলী পশুর হাটের সামনে থেকে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। ঢাকায় প্রবেশের উদ্দেশ্যে দূরপাল্লার যেসব যানবাহন আসছে, সেগুলোকে আমিনবাজার বাসস্ট্যান্ড থেকে ঘুরিয়ে দেওয়া হচ্ছে।
রাজধানীকে সারা দেশ থেকে অনেকটা বিচ্ছিন্ন করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। ঢাকার আশপাশের চারটি জেলাসহ মোট সাতটি জেলায় জরুরি সেবা ছাড়া সব ধরনের চলাচল ও কার্যক্রম বন্ধ থাকবে। এমন বিধিনিষেধ আজ মঙ্গলবার সকাল ছয়টা থেকে শুরু হয়েছে। এটি চলবে ৩০ জুন মধ্যরাত পর্যন্ত।
বিভিন্ন গন্তব্যে যাওয়ার উদ্দেশ্যে গাবতলী বাস টার্মিনালে আসা যাত্রীদের অনেকেই জানতেন না যে আজ যানবাহন বন্ধ থাকবে। টার্মিনালে এসে বিপাকে পড়া এসব মানুষ এখন বিকল্প উপায়ে প্রাইভেট কার কিংবা মোটরসাইকেলে করে গন্তব্যে যাচ্ছেন।
নোয়াখালী থেকে শ্বশুরবাড়ি সিরাজগঞ্জে যাওয়ার উদ্দেশ্যে সপরিবারে গাবতলী বাস টার্মিনালে এসেছেন আল আমিন। সঙ্গে ছিলেন তাঁর স্ত্রী শাবানা, শ্যালক বিপ্লব ও আট মাস বয়সী ছেলে আরাফাত। কথা বলে জানা গেল, আল আমিন নোয়াখালীর পল্লী বিদ্যুৎ অফিসে চাকরি করেন। অসুস্থ শ্বশুরকে দেখতে সিরাজগঞ্জে যাওয়ার উদ্দেশ্যে গতকাল সোমবার রাতে নোয়াখালী থেকে লঞ্চে করে রওনা হন। সকালে রাজধানী ঢাকার সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনালে এসে পৌঁছান। সেখান থেকে যান কমলাপুরে। ট্রেনে যাওয়ার চেষ্টা করলেও শুধু একটি টিকিট কিনতে পারেন। এ কারণে ট্রেনেও যেতে পারেননি তাঁরা। এরপর গাবতলী এসেও দেখেন দূরপাল্লার যানবাহন চলছে না। এখন প্রাইভেট কার বা মাইক্রোবাস ভাড়া করে গাবতলী-আমিনবাজার পার হবেন বলে ভাবছেন।
সরকারঘোষিত বিধিনিষেধের আওতায় থাকা সাত জেলা হলো মানিকগঞ্জ, নারায়ণগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, গাজীপুর, মাদারীপুর, রাজবাড়ী ও গোপালগঞ্জ। এসব জেলায় ঢাকা থেকে দূরপাল্লার বাস চলবে না। দূরের যাত্রার ট্রেন চললেও এই সাত জেলায় থামবে না। ঢাকা থেকে যাত্রীবাহী নৌযানও চলবে না। এর ফলে নয় দিন কার্যত যোগাযোগবিচ্ছিন্ন থাকবে রাজধানী।