সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করা নিয়ে পাকিস্তানের ষড়যন্ত্র প্রকাশ হয়ে গিয়েছে। ডিডব্লিউ নিউজের প্রকাশিত এক ডকুমেন্টরিতে দেখা গিয়েছে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে সন্ত্রাসী কর্মকান্ডের সঙ্গে ইসলামপন্থী দেশটির মধ্যে একটি যোগসূত্র রয়েছে। সম্প্রতি ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এ এএনআই’র এক প্রতিবেদনে এ খবর দিয়েছে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়- লন্ডনের কেবিনেট অফিস ব্রিফিং রুম (সিওবিআর) সাবেক সিক্রেট সার্ভিস কোঅর্ডিনেটর রিচার্ড কেম্প বলেছেন, ‘বিশ্বজুড়ে বিভিন্ন সন্ত্রাসবাদী হামলায় প্রত্যক্ষ অথবা পরোক্ষভাবে পাকিস্তানের ইন্টেলিজেন্স সার্ভিস আইএসআই (ইন্টার-সার্ভিস ইন্টেলিজেন্স) জড়িত ছিলো।’
ডিডব্লিউয়ের ডকুমেন্টরিতে রিচার্ড বলেন, ‘পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী শক্তি অর্জন ও বজায় রাখতে আইএসআইয়ের আগ্রহের বিষয়ে কোন প্রশ্ন নেই। বরং আপনি বিশ্বব্যাপি সন্ত্রাসী হামলার বিষয়ে প্রত্যক্ষ বা পরোক্ষভাবে সংযোগের বিষয়টিই খুঁজে পাওয়া যাবে। সুতরাং তারা হচ্ছে পশ্চিমাদের বিরুদ্ধে সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ডের প্রধান সুবিধাবাদি, সমর্থক ও পরিচালক।’
ডকুমেন্টরাটিতে দেখা যায়, ২০০১ সালে বিশ্ব বাণিজ্য কেন্দ্রে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় প্রায় তিন হাজার মানুষের প্রাণহানী হয়। এ হামলার জন্য পাকিস্তান বংশোদ্ভুত ডেভিড হেডলিকে দায়ী করা হয়। এ ছাড়া ২০০৮ সালে মুম্বাই হামলার পাশাপাশি আরও কিছু হামলার পেছনেও পাকিস্তানভিত্তিক সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার নাম রয়েছে।
তবে পাকিস্তান বরাবরই লস্কর-ই-তৈয়বাকে নিয়ে সমালোচনা এবং একে সন্ত্রাসী সংগঠন বলে অস্বীকার করে আসছে। প্রেসিডেন্ট পারভেজ মোশাররফের সময়ে দেশটির ইন্টেলিজেন্স এজেন্সি সন্ত্রাসী সংগঠন লস্কর-ই-তৈয়বার সঙ্গে সহযোগিতা আরও বৃদ্ধি করেছে। মোশাররফ বর্তমানে সংযুক্ত আরব আমিরাতে (ইউএই) নির্বাসনে রয়েছেন। এই ডকুমেন্টরি নির্মাতাদের তিনি বলেন,‘আপনারা কীভাবে তাদের সন্ত্রাসী বলেন; আমি তাদের ‘মোজাহিদিন’ বলি। লস্কর-ই-তৈয়বা (এলইটি) বিশ্বের সবচেয়ে সেরা এনজিও।’
সন্ত্রাসবাদ বিষয়ক বিশেষজ্ঞ ও নিরাপত্তা বিশ্লেষক সৃজন গোহেল বলেন, ‘এটি শুধুমাত্র গুরুত্বপূর্ণ নয় যে উগ্রপন্থী হয়ে ওঠা ব্যাক্তিরা শুধুমাত্র ইন্টেলিজেন্স সংস্থার সমর্থন পেয়েছে বরং তারা পাকিস্তান ও লিবিয়ার রাষ্ট্রীয় কর্মকাণ্ডের সঙ্গেও যুক্ত।’
২০০৮, ২০১২ এবং ২০১৫ সালসহ এ পর্যন্ত সন্ত্রাসবিরোধী আর্থিক সংস্থা এফএটিএফের ধূসর তালিকায় পাকিস্তানের নাম রয়েছে। দেশটি মুদ্রা পাচার ও সন্ত্রাসবাদে অর্থায়ন বন্ধে দেশটি ধারাবাহিকভাবে ব্যর্থ। যেখানে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনী দেশের পাশাপাশি দেশের বাইরের সব রাজনৈতিক ও ব্যবসায়িক বিষয়গুলো নিয়ন্ত্রণ এবং ব্যবস্থাপনা করে থাকে।
গত এক দশকে পাকিস্তান সেনাবাহিনী আফগানিস্তান থেকে শুরু করে কাশ্মীর উপত্যকায় জিহাদি কর্মকাণ্ডে অর্থায়ন করে আসছে। আশির দশকে সোভিয়েত-জিহাদবিরোধী কার্যক্রমের পাশাপাশি কাশ্মীরের সংঘর্ষে অর্থের অবাধ সরবরাহ করা হয়েছে। এ অর্থ মাদক পাচারের মাধ্যমে সংগৃহীত হয়।