নিজস্ব প্রতিবেদক:
চুয়াডাঙ্গায় মাত্র ৩ দিনের ব্যবধানে কুপিয়ে ও বিষ প্রয়োগ করে ১৫টি কুকুরসহ ৫টি বনবিড়াল ও একটি বিড়াল হত্যার ঘটনা ঘটেছে। এর ব্যাপক সমালোচনা হচ্ছে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে। এমন নির্মম কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার দাবিও উঠেছে।
স্থানীয়দের কাছ থেকে জানান যায়, সর্বশেষ গতকাল বুধবার সন্ধ্যায় সদর উপজেলার দীননাথপুর গ্রামে একটি মা বনবিড়ালসহ তার ৪টি শাবককে কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এর আগে সোমবারে বিষ মেশানো পাউরুটি খেয়ে ১৫টি কুকুর ও ১টি বিড়ালের মৃত্যু হয়।
বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চুয়াডাঙ্গা বন বিভাগের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা জাকির হোসেন।
এই বন কর্মকতা জানান, দীননাথপুর গ্রামের মাদরাসাপাড়ার নুর ইসলামের ছেলে সৌদি প্রবাসী বিল্লাল হোসেনের খড়ির ঘরে ১টি মা বনবিড়ার আশ্রয় নিয়েছিল। সেখানে সে ৪টি সাবকের জন্ম দেয়। বুধবার বিকেলে এগুলো বাড়ির লোকজনের নজরে আসে।
জাকির হোসেনের ভাষ্য, বিষয়টি প্রতিবেশীদের জানান বিল্লাল হোসেনের স্ত্রী নূরী বেগম। পরে প্রতিবেশী আবুল কাশেম, তার ছেলে রোকন আলী ও আবু হোসেনের ছেলে রবিউল ইসলাম ধারালো হাসুয়া দিয়ে মা বনবিড়ালসহ ৪ শাবককে কুপিয়ে হত্যা করে । হত্যার পর এগুলোর মরদেহ মাটিতে পুঁতে ফেলা হয়।
আজ বৃহস্পতিবার বন বিভাগের পক্ষ থেকে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করার কথার আছে। এই ঘটনায় মামলার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে বলে জানান জাকির হোসেন।
এদিকে গত সোমবার জেলার আলমডাঙ্গা উপজেলার সোনাতনপুর গ্রামে পাউরুটিতে বিষ মিশিয়ে মা ও বাচ্চাসহ ১৫টি কুকুর ও বিড়াল হত্যা করেন স্থানীয় কীটনাশক ব্যবসায়ী আব্বাস আলী। এ ঘটনায় বুধবার রাতে আলমডাঙ্গা থানায় একটি সাধারণ ডায়রি (জিডি) করেছেন উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা আব্দুল্লাহিল কাফি।
কাফি জানান, কয়েকদিন আগে আব্বাস আলীর বাড়িতে একটি পানির পাত্রে মুখ দেয় ১টি কুকুর। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে পাউরুটিতে বিষ মিশিয়ে এলাকার ১৪টি কুকুরকে খেতে দেন তিনি। এতে ওই দিনেই একে একে ১৪টি কুকুর ও ১টি বিড়ালের মৃত্যু হয়। মঙ্গলবার রাতে আরও ১টি কুকুর মারা যায়।
বিষ প্রয়োগে কুকুর হত্যার কথা স্বীকার করে ব্যবসায়ী আব্বাস আলী সাংবাদিকদের বলেন, ‘কুকুরগুলো খুব বিরক্ত করতো্য। তাই বিষ দিয়ে মেরে ফেলেছি’।
এ ঘটনায় পরিবেশবাদী সংগঠন ‘কেয়ার ফর আনক্লেইমড বিস্ট’- এর সভাপতি বখতিয়ার হামিদ বিপুল বলেন, ‘ঘটনাগুলো চরম নির্মম। অভিযুক্তদের আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দেয়া উচিৎ’।
এ সংক্রান্ত অভিযোগ পাওয়ার কথা জানিয়ে আলমডাঙা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুল ইসলাম বলেন, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে’।
বিএসডি/ এলএল