খেলাধূলা প্রতিনিধি:
কিন্তু এ রকমই যদি কথা হয়ে থাকবে, বিমানবন্দরে ও রকম কথা কেন বললেন? সাকিবের কাছে এই প্রশ্নেরও সরাসরি উত্তর নেই, ‘আমি তো বলিনি দক্ষিণ আফ্রিকা যাব না। বলেছি দুই দিন পর এটা নিয়ে আলোচনা হবে। এই দুই দিন আমি ভাবব, আশা করি বিসিবিও ভাববে। সিদ্ধান্ত হবে আলোচনার পর।’ সাকিব অবশ্য বলেছেন, মানসিক অবসাদের কারণে যে তিনি দক্ষিণ আফ্রিকা সফর নিয়ে নতুন করে ভাবছেন, সেটি নিয়ে বিসিবি সভাপতির সঙ্গে তাঁর এখনো কথা হয়নি।
সাকিবের যে বক্তব্যের কারণে তাঁর দক্ষিণ আফ্রিকায় যাওয়া নিয়ে আবার ধোঁয়াশা, সেটির সূত্রপাত বিমানবন্দরে সাংবাদিকদের সামনে তাঁরই দেওয়া ওই বক্তব্যে। যেখানে সাকিব হয়ে পড়েছিলেন কিছুটা আবেগপ্রবণ, যে আবেগে তিনি ভেঙে পড়েছিলেন এর আগে বিসিবির ক্রিকেট পরিচালনা প্রধান জালাল ইউনুসের সঙ্গে মুঠোফোনে হওয়া এক আলোচনাতেও।
বিমানবন্দরে সাকিবই জানিয়েছেন, জালাল ইউনুসের সঙ্গে বিষয়টি নিয়ে তাঁর কথা হয়েছে। পরে জালাল ইউনুস প্রথম আলোকে বলেছেন সে আলোচনার বিস্তারিত, ‘আমাকে সাকিব ফোন করে বলেছে তার মন খুব খারাপ। সে খেলার মতো অবস্থায় নেই। নিজের পুরোটা দিতে পারছে না। এ সময় সে খেললে দেশ ও দলের জন্য খারাপ হবে। দক্ষিণ আফ্রিকায় ওয়ানডে সিরিজটা না খেললে টেস্টে হয়তো মনোযোগ ফিরে পাবে। আমি তাকে বলেছি, তুমি সময় না–ও। দুই দিন ভাব। তারপর সিদ্ধান্ত নাও।’
ক্রিকেট পরিচালনা প্রধানের কথার সূত্র ধরেই সাকিব বলেছেন, তাঁর যাওয়া নিয়ে দুই দিন পর সিদ্ধান্ত হবে। সাকিবের সে কথায়ও আছে দক্ষিণ আফ্রিকায় ওয়ানডে খেলতে না চাওয়ার কথা। বলেছেন, ওয়ানডে সিরিজে না খেললে হয়তো মানসিক সমস্যাটা কাটিয়ে উঠে টেস্ট সিরিজে খেলতে পারবেন তিনি। ১৫ দিনের বিশ্রাম তাঁকে মানসিকভাবে চাঙা করে তুলতে পারে।
সাকিবকে বাংলাদেশের ক্রিকেটের ‘লৌহমানব’ বললে বোধ হয় খুব বেশি ভুল বলা হবে না। যেকোনো পরিস্থিতিতেই ভেঙে না পড়ার মানসিকতার কারণেই বিশেষণটা দাবি করতে পারেন তিনি। কিন্তু কাল সেই সাকিবের আবেগই যেন একটু বল্গা হারাল!
বিমানবন্দরে সাকিব বলছিলেন, ‘আফগানিস্তান সিরিজে আমার মনে হয়েছে আমি একজন প্যাসেঞ্জার। আমি যেটা হয়ে কখনোই থাকতে চাই না। আমি খেলাটা একদমই উপভোগ করতে পারিনি, পুরো সিরিজটাই, টি-টোয়েন্টি এবং ওয়ানডে। আমার মনে হয় এমন মানসিকতা নিয়ে দক্ষিণ আফ্রিকা সিরিজে খেলাটা ঠিক হবে না।’ উল্টো তাঁর নাকি এটাই মনে হচ্ছে যে এ অবস্থায় খেললে দলের ক্ষতিই করবেন তিনি, ‘আমার নিজের প্রতি নিজের যে প্রত্যাশা, মানুষের যে প্রত্যাশা, সেটা যদি আমি পূরণ করতে না পারি, তাহলে দলে থাকাটা খুবই দুঃখজনক হবে। এটা আমার সতীর্থদের সঙ্গে প্রতারণা করার মতো হবে।’
সাকিবের ভাবনার জগতে আর কোনো ওলটপালট হয় কি না দেখা যাক। তার আগপর্যন্ত আরেকটা প্রশ্নের উত্তরের জন্যও অপেক্ষায় থাকতে হবে। দক্ষিণ আফ্রিকা সফরে সাকিব যাবেন কি যাবেন না, সে সিদ্ধান্ত শেষ পর্যন্ত নেবে কে? বিসিবি, নাকি সাকিব নিজেই?
বিএসডি/ এফএস