নিজস্ব প্রতিবেদক:
লোভনীয় অফার দিয়ে গ্রাহকদের কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে লাপাত্তা হওয়া ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ‘আকাশ নীল’ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মশিউর রহমান ও প্রতিষ্ঠানের পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান রনিকে ফরিদপুর ও রাজধানী থেকে গ্রেপ্তার করেছে র্যাব।
গত রাতে র্যাব সদর দপ্তরের গোয়েন্দা শাখা, র্যাব-২ এবং র্যাব-৮ এর যৌথ অভিযানে ফরিদপুর থেকে আকাশ নীলের এমডি মো. মশিউর রহমান ওরফে সাদ্দাম (২৮), এবং পরিচালক ইফতেখাইরুজ্জামান রনি (৩২) কে রাজধানী থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। অভিযানে ২টি মোবাইল ফোন, ২টি ল্যাপটপ এবং ১টি প্রাইভেটকার উদ্ধার করা হয়েছে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেপ্তারকৃতরা গ্রাহকদের সঙ্গে প্রতারণার বিভিন্ন বিষয়াদি ও কৌশল স্বীকার করেছে।
গত ১৮ মার্চ অর্থ আত্মসাতের অভিযোগে এক ভুক্তভোগী ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান ‘আকাশনীল’ এর এমডি এবং ডিরেক্টরসহ মোট ৯ জনের এর বিরুদ্ধে শেরে বাংলা নগর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, আকাশ নীলের কারসাজির মূলহোতা মশিউর। ২০১৯ সালে আকাশ নীল কোম্পানি নামে ওয়েবসাইট ও ফেসবুক পেইজ তৈরি করে এবং ট্রেড লাইসেন্স গ্রহণ করে। প্রথমে তারা রাজধানীর কাঠাল বাগান এলাকায় একটি অফিস চালু করে নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র এবং কৃষকদের কাছ থেকে শাকসবজি কিনে অনলাইনে হোম ডেলিভারি দেওয়ার ব্যবসা শুরু করে। তবে করোনা মহামারির কারণে ব্যবসা সচল রাখতে পারেননি। ২০১৯ সাল থেকে ২০২১ এর মে মাস পর্যন্ত ব্যবসা না করার কারণে যে পুঁজি দিয়ে অফিস সাজিয়ে ছিল তাতে ক্ষতির সম্মুখীন হয়।
পরবর্তীতে মানুষের কাছ থেকে বিভিন্ন ভাবে বেশি মুনাফার লোভ দেখিয়ে অর্থ নিয়ে মশিউর কোম্পানিকে লিমিটেড কোম্পানিতে রূপান্তরিত করে কাঠাল বাগান থেকে পান্থপথে স্থানান্তরিত করে। তার লিমিটেড কোম্পানি ছিল পরিবার কেন্দ্রিক ব্যবসা যাতে তার নিজের নামে ৭৭ শতাংশ, বোনের নামে ১০ শতাংশ, মায়ের নামে ৮ শতাংশ এবং তার স্ত্রীর নামে ৫ শতাংশ শেয়ার ছিল। ব্যবসায় মশিউর ছিল ম্যানেজিং ডিরেক্টর, মা ছিলেন চেয়ারম্যান এবং তার বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচিত বন্ধু ইফতেখাইরুজ্জামান রনি ছিলেন ডিরেক্টর।
পরবর্তীতে ইভ্যালিসহ অন্যান্য ই-কমার্স প্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন মোটর সাইকেলের অফার দিয়ে রমরমা ব্যবসা শুরু করলে মশিউর ২০২১ সালের জুন মাসে মোটর সাইকেল ভিত্তিক অফারে ব্যবসা দিয়ে পুনরায় তারা যাত্রা শুরু করে।
গ্রাহকদের আকৃষ্ট হওয়ার মূল কারণ ছিল স্বল্প মূল্যে বা ডিসকাউন্টে প্রতিটি মোটর সাইকেলে সর্বোচ্চ ৩০ শতাংশ পর্যন্ত মূল্য ছাড়। এই ডিসকাউন্টের জন্যই গ্রাহকরা আকৃষ্ট হতো এবং গ্রাহকদের আকৃষ্ট করার জন্য হোয়াটস অ্যাপ গ্রুপ মেইনটেন করতেন। গ্রুপে গ্রাহকদের আকৃষ্ট করার জন্য বিভিন্ন সময়ে আশার বাণী, লোভনীয় অফার এবং মোটিভেশনাল বক্তব্য প্রদান করতেন তিনি।
বিএসডি/ এলএল