আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
শ্রীলংকায় জ্বালানি সংকট তীব্র আকার ধারণ করেছে। সারাদিন ধরে লাইনে দাঁড়িয়েও মিলছে না জ্বালানি। বিদ্যুৎ সংকটে দেশের মানুষ আলোর জন্য নির্ভর করছে মোমবাতির ওপর।
এই অবস্থায় জ্বালানির তীব্র সংকটের মধ্যে জলবিদ্যুৎ উৎপাদনও কমে যাওয়ায় দেশজুড়ে প্রতিদিন রেকর্ড ১০ ঘণ্টা করে বিদ্যুৎ সংযোগ বন্ধ রাখার ঘোষণা দিয়েছে শ্রীলংকা। বার্তা সংস্থা এএফপি বুধবার এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে।
১৯৪৮ সালে স্বাধীনতা লাভের পর এই প্রথম সবচেয়ে বাজে অর্থনৈতিক সংকটের মুখোমুখি হয়েছে শ্রীলংকা। আমদানির বিল পরিশোধে প্রয়োজনীয় বিদেশি মুদ্রার তীব্র ঘাটতিই এর প্রধান কারণ বলে জানা গেছে।
গত কয়েক মাস ধরেই টানাটানিতে চলছে শ্রীলংকার সরকার। দেনার বোঝায় মুখ থেঁতলে পড়েছে রাজকোষ। বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ তলানিতে। তেল নেই, খাবার নেই। থেমে থেমেই বিদ্যুৎ বিভ্রাট। আধা ঘণ্টা থাকে তো ২ ঘণ্টা উধাও! জ্বালানি চাহিদা পূরণে আমদানি করবে সেই পথও বন্ধ-রিজার্ভ নেই! এমন অবস্থায় একেবারে নিরুপায় হয়েই সত্তর-আশির দশকের হারিকেন, কুপিবাতি আর কাঠ-কয়লার ইস্ত্রির যুগে ফিরে গেছে স্থানীয়রা।
এখানেও ভোগান্তি! অভাবের দেশে সবকিছুই যেন ধরাছোঁয়ার বাইরে! হাল আমলে এসেও চড়া দামে কিনতে হচ্ছে সেকালের পণ্য! নুয়ারা এলিয়া জেলার হ্যাটনের ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, প্রায় ৫০ বছর পর হঠাৎই বেড়ে গেছে কেরোসিনের বাতি ও কাঠ-কয়লার আয়রনের দাম। একটি কাচের চিমনির দাম বেড়ে দাঁড়িয়েছে এক হাজার ৫০০ শ্রীলংকান রুপি। আর কাঠ-কয়লার আয়রন মেশিন বিক্রি হচ্ছে ৯০০ রুপিতে। হারিকেনের চাহিদাও বেড়েছে। স্থানীয় বাজারে সরবরাহের অভাবে পণ্যটির সংকটও তৈরি হয়েছে। শ্রীলংকার নাগরিকরা বলছেন, ১৯৪৮ সালে স্বাধীনতার পর এমন বিপর্যয়ের মুখে পড়েনি দেশটির অর্থনীতি। শুধু বিদ্যুৎ বিভ্রাট নয়, গ্যাস-পানির তীব্র সংকট দেখা দিয়েছে দেশটিতে।
বিএসডি/ এমআর