পাবনা প্রতিনিধি:
পাবনা জেলার সদর উপজেলার ভাড়ারা ইউনিয়নের নির্বাচন আগামী ১৫ জুন। এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে ভাঁড়ারা ইউনিয়নের
সাধারণ ভোটারদের মাঝে ব্যাপক উৎসাহ-উদ্দীপনা ও আশঙ্কাও বিরাজ করছে। ভাঁড়ারা ইউনিয়ন পরিষদে বিগত ২০ বছর যাবৎ
চেয়ারম্যান হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন আবু সাঈদ খান। ২০ বছর দায়িত্ব পালন কালীন সময় নানা অপকর্ম ও হত্যাযজ্ঞের মতো ঘটনা ঘটিয়ে বিতরকের শীর্ষে রয়েছেন সাঈদ খান।
এদিকে সুলতান মাহমুদ নামে একজন স্বতন্ত্র প্রার্থী বিগত কয়েক বার নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করলেও পরাজিত হন । এবার নির্বাচনে তিনি ঘোড়া মার্কা প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। পাবনা সদর উপজেলা ১০টি ইউনিয়নে একযোগে নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের ঘোষণা দেয় সেই সময় ভাড়ারা ইউপি নির্বাচনে ৩ জন চেয়ারম্যান প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। তাদের মধ্যে একজন আনারস প্রতীক নিয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। কিন্তু আবু সাঈদ খান গং এর দ্বারা নিহত হলে নির্বাচন স্থগিত হয় পরবর্তীতে নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করা হয় ১৫জুন ২০২২ইং।
এ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে শুধু ভাঁড়ারা ইউনিয়ন বাসী নয় পুরো পাবনা সদর বসবাসকারী সকল মহলের বৃষ্টি এখন ভাড়ারা ইউনিয়ন নির্বাচনের দিকে। প্রত্যেকেরই একটাই প্রশ্ন কে হচ্ছেন ভাড়ারা ইউপি পিতা? ভাড়ারা ইউনিয়ন নির্বাচনে সাধারণ ভোটারদের মতামত যাচাইয়ের জন্য সরেজমিনে গেলে দেখা যায় সাধারণ মানুষের মাঝে নানা জল্পনা-কল্পনা ও আতঙ্কের ছাপ। কেউ বলছে ভোট দিতে পারব না আগেই ভোট হয়ে যাবে আবার কেউ বলছে এবারের ভোট আমরা সঠিকভাবে দিতে পারব কারণ বর্তমান পুলিশ সুপার পদোন্নতি প্রাপ্ত অতিরিক্ত ডিআইজি মহিবুল ইসলাম খান আমাদের কথা দিয়েছেন এবার সুষ্ঠু নিরপেক্ষন ভোট হবে আমরা নিজের ভোট নিজে দিতে পারব। নির্ভীক এবং সাহসী এই পুলিশ সুপারের প্রতি এলাকার সাধারন মানুষের দৃঢ় আস্থা রয়েছে ।
নলদা , হলুদবাড়ী সহ বেশকিছু এলাকায় গেলে সাধারণ মানুষ ক্যামেরার সামনে কোনো বক্তব্য দিতে রাজি হননি। তারা বলেছেন আমাদেরকে এই এলাকায় বসবাস করতে হবে আপনাদের সাথে কোন কথা বলে বিপদ ডেকে আনতে চাই না। আমরা নলদা ভোটকেন্দ্রে ভোট দিতে যাওয়ার আগেই সাঈদের লোকজন ভোট নিয়ে নেয়। আমাদের ভোট দিতে হয়না। তবে এবার নাকি পুলিশ সুপার কথা দিয়েছে সুষ্ঠু নিরপেক্ষ ভোট হবে। দেখি যদি পরিবেশ ভালো থাকে তাহলে ভোট দিতে যাব। সাধারণ মানুষের মাঝে এমন আতঙ্ক ভাবিয়ে তুলেছে সচেতন মহলকে। খরবাগান দড়িভাউডাঙ্গা সহ আরও প্রত্যন্ত অঞ্চলের সাধারণ ভোটারদের সঙ্গে কথা বললে একটা বিষয় দাবি উঠেছে এবারের নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হতে হবে।
মাননীয় পুলিশ সুপারসহ প্রশাসনের সকল মহলের কাছে এলাকার সাধারণ ভোটারদের একটাই দাবি আমার ভোট আমি দেবো দেখে শুনে বুঝে দিব। সাধারণ মানুষ ভোটকেন্দ্রে যাবে,যার যার ভোট সেই সেই প্রয়োগ করবে কোনো স্বার্থান্বেষী মহল যেন তাদের এই ভোটাধিকার ছিনতাই করে নিতে না পারে। সে ব্যাপারে প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেছে সাধারণ ভোটাররা। সাইদ খান বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় প্রতীক নৌকা প্রতীক বরাদ্দ পেলেও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের সাথে তেমন কোনো যোগাযোগ নাই। এমনটাই দাবি করলেন ইউনিয়নের ৪,৫,৬ নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি। তিনি বলেন সাঈদ খান আওমীলীগ করে আমরা আওয়ামী লীগ করি আমরাই প্রকৃত আওয়ামীলীগ ।
সাঈদ খান হাসাই রাজাকারের ছেলে তাকে বারবার নৌকা প্রতীক বরাদ্দ দেওয়া হয়। সে স্থানীয় কোন আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মী সঙ্গে যোগাযোগ রাখে না। সে বলে বন্দুক যার ক্ষমতা তার। আমরা যারা আওয়ামী লীগ করি আমরা আওয়ামী লীগ রাজনীতি করি আমরা গণতন্ত্র বিশ্বাস করি। ভাড়ার ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সকল অঙ্গ সংগঠন সহ সাধারন মানুষ সাঈদ খান এর অত্যাচার অতিষ্ঠ হয়ে সুলতান মাহমুদকে নির্বাচিত করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছি।
আমরা এই বন্দুকের রাজনীতি পছন্দ করিনা গণতন্ত্রে বিশ্বাস করি। বর্তমান পুলিশ সুপার পদোন্নতি প্রাপ্ত এডিশনাল ডিআইজি মহিবুল ইসলাম খান আমাদের আশ্বস্ত করেছেন এবারের নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হবে। কোন বাহিনীর সাধারণ ভোটারের ভোট ছিনতাই করতে পারবে না। আপনারা নিশ্চিন্তে নির্বিঘ্নে শান্ত পরিবেশে যার যার ভোট সেই সেই ভোটকেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিতে পারবেন।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায় ভারারার প্রত্যেকটি বাজার ঘাট ও চৌরাস্তার মোড়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সতর্ক অবস্থান যাতে করে কোনো স্বার্থান্বেষী মহল আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি করতে না পারে এবং সাধারণ মানুষের জানমালের ক্ষতি করতে না পারে। এতে সাধারণ মানুষের মনে আগামী১৫জুন তারিখের নির্বাচনে ভোট দিতে পারবে বলে আশা জেগে উঠেছে। রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব ও সচেতন মহলের দাবি আগামী ১৫জুন ভাড়ারা ইউনিয়নের নির্বাচন অবাধ সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ হোক।
বিএসডি/ এমআর