নিজস্ব প্রতিবেদক:
পদ্মা সেতুর ফলে দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ আর অবহেলিত থাকবে না বলে মন্তব্য করেছেন প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘এই সেতুর ফলে পদ্মার ওপারের মানুষ আর অবহেলিত থাকবে না। সেতুর কারণে দেশের ২১টি জেলার মানুষের জীবনের উন্নতি হবে। ব্যবসা-বাণিজ্যে প্রসার হবে। তারা নির্বিঘ্নে যাতায়াত করতে পারবে। এখন পদ্মা পাড়ি দেওয়ার ঝুঁকি নিতে হবে না। রাজধানীর সঙ্গে সহজে যোগাযোগ স্থাপন করতে পারবে এই অঞ্চলের মানুষ।’
পরিবেশ যেন কোনোভাবে ক্ষতিগ্রস্ত না হয় সেক্ষেত্রে পদ্মা সেতুতে পর্যাপ্ত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হয়েছে বলে জানান প্রধানমন্ত্রী।
প্রত্যাশিত জিডিপির চাইতে পদ্মা সেতু দেশের জিডিপিতে আরও ভূমিকা রাখবে বলে আশা প্রকাশ করেছেন সরকারপ্রধান।
শেখ হাসিনা বলেন, ‘পদ্মা সেতু দেশের শিল্পায়নের গতি আরও ত্বরান্বিত করবে। আঞ্চলিক বাণিজ্যে ভূমিকা রাখবে এই সেতু। দক্ষিণাঞ্চলে বিদ্যুৎ কেন্দ্র থেকে শুরু করে যা যা প্রয়োজন আমরা সব করেছি। এই বছরের শেষ নাগাদ আমাদের কর্ণফুলীর তলদেশে টানেল, বঙ্গবন্ধু টানেল সেটা সম্পন্ন হবে। মেট্রোরেল সেটাও একটা অংশ সম্পন্ন হবে। ২০২৩ সালের প্রথমার্ধ্বে রূপপুর পারমাণবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন শুরু হবে। ঢাকা এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ের কাজ দ্রুত এগিয়ে যাচ্ছে সেটাও ২০২৪ সালের মধ্যে। পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মধ্যে বিদ্যুৎ উৎপাদন শুরু হয়েছে। সেখানে আরও বিদ্যুৎ উৎপাদনের সুযোগ রয়েছে। কাজেই সার্বিক দিক থেকে আমাদের অর্থনীতি আরও গতিশীল হবে, দেশের মানুষ উন্নত জীবন পাবে।’
সরকারপ্রধান আরও বলেন, ‘দেশের মানুষের ওপর ভরসা রেখে ‘৭৫ সালের পর যখন ছয় বছর রিফিউজি হিসেবে বিদেশে থাকতে হয়েছিল, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ আমাকে সভাপতি নির্বাচিত করেছিল বলেই আমি দেশে ফিরে এসেছিলাম, আসতে পেরেছিলাম। তখন অনেক বাধা ছিল কিন্তু এসেছিলাম একটি লক্ষ্য সামনে রেখে। এই বাংলাদেশে যে বাংলাদেশে আমার বাবা স্বাধীন করে গেছেন, এই বাংলাদেশে এভাবে অবহেলিত থাকতে পারে না।’
শেখ হাসিনা বলেন, ‘আজকে বাংলাদেশের মাথাপিছু আয় ২৫৯৪ মার্কিন ডলার। বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছে। আমরা প্রতি ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দিতে সক্ষম হয়েছি। আজকে ডিজিটাল বাংলাদেশ গড়ে তুলেছেন প্রত্যন্ত অঞ্চল পর্যন্ত আমরা ব্রডব্যান্ড পৌঁছে দিয়েছি, বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট-১ উৎক্ষেপন করেছি, বাংলাদেশ উন্নয়নশীল দেশ হিসেবে মর্যাদা পেয়েছে। জাতিসংঘ ঘোষিত এসডিজি ২০৩০ এর মধ্যে আমরা বাস্তবায়ন করতে সক্ষম হব।’
এর আগে সকাল ১০টার কিছু আগে ঢাকার তেজগাঁওয়ের পুরাতন বিমানবন্দর থেকে হেলিকপ্টারযোগে মাওয়ায় পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। এরপর সুধী সমাবেশে যোগ দেন।
মাওয়া প্রান্তে সব কর্মসূচিতে অংশ নেওয়ার পর সড়ক পথে জাজিরা প্রান্তে যাবেন সরকারপ্রধান। সেখানে গিয়ে শিবচর উপজেলার কাঁঠালবাড়ির উদ্দেশে সড়কপথে যাত্রা করবেন। পরে কাঁঠালবাড়িতে আওয়ামী লীগের জনসভায় অংশ নেবেন সরকারপ্রধান।
বিএসডি/ফয়সাল