পাবনা প্রতিনিধি:
পাবনার চাটমোহর উপজেলার পূরান ধানবিলার শুকুর আলী মন্ডল এর ছেলে নুরুল ইসলাম হত্যার ঘটনায় মামলাটির আসামি শ্রী রবীন্দ্রনাথ হালদার পিতা, ভূপেন্দ্রনাথ হালদার সাং বামন গ্রাম থানা চাটমোহর জেলা পাবনা এর বিরুদ্ধে দণ্ডবিধি ৩০২, ২০১ ধারার অভিযোগ সন্দেহাতিত ভাবে প্রমাণিত হয় আসামিকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও বিশ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়।
আসামি পলাতক রয়েছেন। ০৪/০৭/২০২২ইং তারিখ সোমবার দুপুর ১২টার দিকে পাবনার বিশেষ জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক মো. আহসান তারেক এ রায় ঘোষণা করেন। নিহত নুরুল ইসলাম উপজেলার পুরানধানবিলা গ্রামের শুকুর আলী মন্ডল এর ছেলে।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট দেওয়ান মজনুল হক। আসামিপক্ষের আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট শামসুল হুদা।
মামলার এজাহার বাদী সেলিম মন্ডল বলেন আমার ভাই নুরুল ইসলাম আনুমানিক ১০ বছর পূর্বে বিবাহ করেন। তার স্ত্রীর সাবিনা তাকে ৭/৮ মাস পূর্বে তালাক প্রদান করেন। আমার ভাই দীর্ঘদিন যাবত ভ্যান চালাইয়া জীবন যাপন করিত। প্রতিদিনের ন্যায় গত ১০/১০/২০১২ তারিখ দুপুর আনুমানিক বারো ঘটিকার সময় ধানের উদ্দেশ্যে বাড়ি হতে বাইর হয় আর বাড়িতে ফিরে আসে না। আমি আমার মা বাবা ও ভাই সহ আমার মেজ ভাইয়ের খোঁজ করি কিন্তু তাকে না পাওয়ায় গত ১৪/১০/২০১৩ তারিখ রাতে আনুমানিক ৮টার সময় চাটমোহর থানায় আসি এবং থানার ওসি সাহেবের নিকট আমার ভাই নিখোঁজ হওয়ার সংবাদ জানায় ওসি সাহেব ১৪/১০/২০১২ তারিখে দৈনিক চলনবিল নামক পত্রিকায় প্রকাশিত একজন যুবকের লাশ দেখিয়া বলেন যে ভাঙ্গুড়া থানা এলাকায় একজন যুবকের লাশ পাওয়া গেছে আমি ও আমার বড় ভাই আব্দুল মজিদ পত্রিকা সাফাই স্পষ্ট যুবকের লাশ দেখিয়া চিনিতে না পারিয়া এবং আমার ভাইয়ের লাশের মতো দেখা যায় অনুমান করিয়া রাত্রে থানায় যাই এবং শরৎ নগর রেল স্টেশনের পাশে যে লাশটি পাওয়া গিয়েছে ওই লাশের ছবি দেখার জন্য ওসি সাহেবকে অনুরোধ করি। ওসি সাহেব ওই লাশের ছবি দেখাইলে উক্ত ছবি দেখিয়া আমার মেজ ভাই নুরুল ইসলাম চিনতে পারিয়া রাত্রেই বাড়ি চলে আসি আমার ভাইয়ের লাশ ভাঙ্গুরা থানা এলাকায় পাওয়া গিয়েছে । লাস্ট ভাঙ্গুরা থানার পুলিশ পোসমাডাম করিয়া উক্ত লাশ পাবনা আনজুমান মফিদুল ইসলাম কবরস্থানে দাফন করিয়াছে আমার গ্রামের লোকজনকে জানায় ।
১৫/১০/২০১২ ইং তারিখ দুপুর আনুমানিক ১২টার সময় আমার গ্রামে ১/ কোরমান আলী পিতা-মৃত জব্বার মন্ডল ।২/ মোহাম্মদ রিয়াজুল ইসলাম পিতা মৃত হিরো সর্দারের নিকট জানতে পারি যে ১০/১০/২০১২ইং তারিখ দুপুর আনুমানিক ১২টার সময় রবীন্দ্রনাথ হাওলাদার পিতা গোপেশ্বর হাওলাদার সাং -বামন গ্রাম থানা চাটমোহর জেলা পাবনা তাহার বাড়ি দক্ষিণ গ্রামীণ ব্যাংকের সামনে পাকা রাস্তা হইতে আমার ভাইয়ের ভ্যান চালিয়া রেল বাজারের দিকে গিয়েছে উক্ত কথা জানতে পারিয়া আমার ও আমার পরিবারের লোকজনের উক্ত রবীন্দ্রনাথ হাওলাদারের প্রতি সন্দেহ হইলে তাকে এবং থানায় সংবাদ দেই থানা বাজারে আসলে পুলিশের সহায়তায় উক্ত রবীন্দ্রনাথ হাওলাদারকে থানায় নিয়ে আসি থানায় আমার ভাই মসজিদ প্রতিবেশী আব্দুস সালাম পিতা মৃত আব্দুস জলিল আব্দুল মজিদ পিতা কেয়ামত উদ্দিন মোল্লাদের উপস্থিতিতে রবীন্দ্রনাথকে আমার ভাইয়ের কথা জিজ্ঞেস করিলে সে আমার ভাই নুরুল ইসলাম ভ্যান ভাড়া করিয়া ভাঙ্গুরা লইয়া যায় এবং আমার ভাইয়ের ভ্যান চুরি করার জন্য তাকে পেপসির মধ্যে বিষ জাতীয় পদার্থ মিশ্রিত করিয়া তাকে খাওয়াইয়া হত্যা করে। লাশ গুম করার উদ্দেশ্যে আমার ভাইয়ের লাশ শরৎনগর স্টেশন এর পাশে ফেলিয়া রাখিয়া ভ্যান চুরি করিয়া চাটমহল চলে আসে এবং ১/ মোঃ শুকুর আলী (৩০) , পিতামৃত আব্দুল কাদের । ২ / মোহাম্মদ আতাহার আলী (৫০), পিতা মৃত জয়েন প্রাং উভয় সং নিয়তিগাছা থানা চাটমোহর জেলা পাবনা নিকট ২৫০০ টাকা ভ্যান বিক্রয় করিয়াছে বলিয়া শিকার করে তখন আমি ও আমার ভাই মজিদ চাটমোহর থানা পুলিশের সহায়তায় আতাহার আলীর বাড়ির রোটান হইতে আমার ভাইয়ের চুরি যাওয়া ভ্যান উদ্ধার করিয়া থানায় নিয়ে আসি ।
এঘটনায় নিহতের ভাই সেলিম মন্ডল পাবনার চাটমোহর থানায় অজ্ঞাত ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলার তদন্ত শেষে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করে পুলিশ। স্বাক্ষীর স্বাক্ষ্যগ্রহণসহ দীর্ঘ শুনানির পর আজ আদালত হত্যার সঙ্গে সরাসরি জড়িত ১ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড আদেশ দেন। এই রায়ে এ মামলার বাদী সেলিম মন্ডল সন্তোষ প্রকাশ করে বলেন আসামি পলাতক আছে তাকে দ্রুত গ্রেফতারের মাধ্যমে রায় বাস্তবায়নের দাবি জানাই । এই মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ সন্তুষ্ট।
বিএসডি/ এমআর