নিজস্ব প্রতিবেদক:
রংপুরের পীরগঞ্জে স্ত্রীকে হত্যা করে আত্মহত্যার নাটক সাজিয়ে প্রায় দুই যুগ ধরে পালিয়ে থাকা যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত পলাতক আসামী খাজা মিয়া’কে র্যাব-১০ এর একটি অভিযানে রাজধানীর শাহবাগ এলাকা হতে গ্রেফতার করা হয় ।
উক্ত আসামী গত ০৫/১২/১৯৯৭খ্রিঃ তারিখ দিবাগত রাত আনুমানিক ০৩:০০ ঘটিকায় রংপুর জেলার পীরগঞ্জ থানার চাঁপাবাড়ী গ্রামে ধৃত আসামীর নিজ বসতবাড়ীর বসতঘরে তার স্ত্রী মুক্তা বেগমকে গলাটিপে শ্বাসরোধে হত্যা করেন। হত্যাকান্ড টি ধামাচাপা দিতে প্রথমে তিনি এই ঘটনাকে একটি আত্মহত্যা বলে চালিয়ে দিতে চেয়েছিলেন। পরবর্তীতে, ময়না তদন্তের রিপোর্টে গলাটিপে শ্বাসরোধে হত্যার বিষয়টি প্রকাশ পেলে তার বিরুদ্ধে পীরগঞ্জ থানার মামলা নং-০৭/৬৩, তারিখ- ১২/০৪/১৯৯৮, ধারা- ১৮৬০ সালের পেনাল কোডের ৩০২ ধারায় নিয়মিত হত্যা মামলা রুজু হয়। উক্ত মামলা রুজু হওয়ার সংবাদ পেয়ে খাজা মিয়া আত্মগোপনে চলে যায়।
ধৃত আসামির বিরুদ্ধে ১৮৬০ সালের পেনাল কোড আইনের ৩০২ ধারার অপরাধ প্রাথমিকভাবে সত্য প্রমাণিত হওয়ায় মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা পীরগঞ্জ থানার অভিযোগ পত্র নং-১৫৯, তারিখ-১৪/১০/১৯৯৮, ধারা-৩০২, পেনাল কোড বিজ্ঞ আদালতে দাখিল করেন।
পরবর্তীতে বিজ্ঞ আদালত আসামী খাজা মিয়ার অনুপস্থিতিতে বিচারকার্য শেষে গত ০১/১২/২০১৩ খ্রিঃ তারিখে আসামির বিরুদ্ধে ১৮৬০ সালের পেনাল কোড আইনের ৩০২ ধারার অপরাধ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণিত হওয়ায় তাকে যাবজ্জীবন সশ্রম কারাদন্ড ও ২০,০০০/- টাকা অর্থদন্ড অনাদায়ে আরও ১(এক) বছরের বিনাশ্রম কারাদন্ড প্রদান করেন।
অতঃপর রংপুর জেলার পীরগঞ্জ থানা পুলিশ উক্ত হত্যা মামলার আসামী খাজা মিয়াকে গ্রেফতারের জন্য র্যাব-১০ এর নিকট একটি অধিযাচনপত্র প্রেরণ করে। অধিযাচনপত্রের ভিত্তিতে র্যাব-১০ এর একটি আভিযানিক দল উক্ত আসামীকে গ্রেফতারের লক্ষে গোয়েন্দা নজরদারি বৃদ্ধি করে। এরই ধারাবাহিকতায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে গতকাল ২৩/০৮/২০২২ খ্রিঃ তারিখ রাজধানী ঢাকার শাহবাগ থানাধীন ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল এলকায় একটি অভিযান পরিচালনা করে রংপুর জেলার পীরগঞ্জ থানার মামলা নং-০৭/৬৩, তারিখ- ১২/০৪/১৯৯৮, ধারা- ১৮৬০ সালের পেনাল কোডের ৩০২ ধারা মামলার পলাতক আসামী মোঃ খাজা মিয়া (৪২)’কে গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতারকৃত আসামী উক্ত হত্যা কান্ডের সাথে তার সম্পৃক্ততার সত্যতা স্বীকার করে। গ্রেফতারকৃত আসামীকে সংশ্লিষ্ট থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে।
র্যাব প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকেই সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজ, জঙ্গি দমন, অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার, মাদক ও ছিনতাইকারীসহ বিভিন্ন অপরাধীদের গ্রেপ্তারে অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে। গোয়েন্দা নজরদারী ও আভিযানিক কার্যক্রমের ধারাবাহিকতায় অপরাধ নিয়ন্ত্রণে র্যাব ইতিমধ্যেই জনগণের আস্থা অর্জনে সক্ষম হয়েছে।
বিএসডি/এফএ