দেশের তৈরি পোশাক খাতের কর্মশক্তির স্বাস্থ্য ও সুস্থতার জন্য গৃহীত পদক্ষেপগুলোকে টেকসই করতে বিভিন্ন সংস্থার পারস্পরিক সহযোগিতা খুবই জরুরি বলে মন্তব্য করেছেন আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) বাংলাদেশের পরিচালক তুমো পুতিয়েনাইন।
বুধবার (২০ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর গুলশানের একটি হোটেলে আয়োজিত ‘কর্মশক্তির স্বাস্থ্য ও সুস্থতা বৃদ্ধিকরণ’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে তিনি এসব কথা বলেন।
ইন্টিগ্রাল গ্লোবাল, বিজিএমইএ ও জেসিএম ফাউন্ডেশনের সহায়তায় আয়াত অ্যাডুকেশন এ গোলবৈঠকের আয়োজন করে।
অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) বাংলাদেশে নিযুক্ত রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি, বিজিএমইএ’র সভাপতি ও জায়ান্ট গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফারুক হাসান, জেসিএম ফাউন্ডেশনের সভাপতি ও কর্মসূচী পরিচালক ড. লিলিয়ান লু, কেয়ার বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর রামেশ সিং, আইএলও’র প্রধান কারিগরি উপদেষ্টা সৈয়দ সাদ হোসেন জিলানী, আমান গ্রুপ অব কোম্পানিজ-এর ভাইস চেয়ারম্যান তাহসিন আমান, কার্লাস অ্যান্ড স্টিচ লি.-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাঈম ইমরান সেলিম, ড্রেসম্যান গ্রুপের পরিচালক মাসেদ আর আব্দুল্লাহ, অনন্ত গ্রুপের পরিচালক সৈয়দ ইসতিয়াক আলম, এইচ অ্যান্ড এম-এর রিজিওনাল কান্ট্রি ম্যানেজার জিয়াউর রহমান, বিজিএমইএ’র পরিচালক আসিফ ইব্রাহিম, এইচ অ্যান্ড এম-এর রিজিওনাল কান্ট্রি ম্যানেজার জিয়াউর রহমান, ইন্টেগ্রাল গ্লোবাল হেলথ-এর জনস্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞ জেনা বুটল্ফ ইউনিভার্সিটি অব পেনিনসিলভানিয়া-এর ক্লিনিক্যাল মেডিসিন বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. নাহরীন আহমেদ প্রমুখ।
অনুষ্ঠানটি যৌথভাবে সঞ্চালনা করেন আয়াত অ্যাডুকেশন-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) নুসরাত আমান ও ইন্টেগ্রাল গ্লোবালের প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক নাবিল আহমেদ।
বাংলাদেশে নিযুক্ত ইইউ রাষ্ট্রদূত চার্লস হোয়াইটলি বলেন, কর্মীদের মানুষিক ও শারীরিক সুস্থতায় গুরুত্বারোপের পাশাপাশি উপযুক্ত ডাটাবেজ তৈরি করে তৈরি পোশাক খাতকে ডিজিটালাইজেশনের আওতায় নিয়ে আসা খুবই জরুরি। এটা শিল্প-কারখানার পরিবেশ উন্নত করা ও কর্মীদের উপযুক্ত সহায়তা দেওয়ার ক্ষেত্রে একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়।
আইএলও-এর বাংলাদেশের পরিচালক তুমো পুতিয়েনাইন বলেন, পোশাক খাতের জনবলের জন্য বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান কর্তৃক গৃহীত পদক্ষেপগুলোকে আরও গণতান্ত্রিক করতে হবে এবং স্বাস্থ্য সেবা গ্রহণের ক্ষেত্রে যেসব বাধা আছে তা কমাতে হবে।
তিনি বলেন, অনেক প্রতিষ্ঠান কর্মীদের ভ্যাকসিন প্রদান, স্বাস্থ্য ও সুস্থতা, প্রয়োজনীয় খাদ্য ও পুষ্টি সরবরাহসহ বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে, যা প্রশংসাযোগ্য। আমরাও (আইএলও) কর্মীদের সুস্থতা নিশ্চিত করার জন্য এসব উদ্যোগের পরিমাপযোগ্যতা ও অনুকরণের ওপর গুরুত্বারোপ করি।
বিজিএমইএ’র সভাপতি ফারুক হাসান তার বক্তব্যে আইএলও-এর প্রতিনিধির বক্তব্যকে সমর্থন জানিয়ে বলেন, কর্মীদের স্বাস্থ্য ও সুস্থতা আমাদের কাছে সবচেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ। এক্ষেত্রে তৈরি পোশাক খাতের শিল্প কলকারখানায় গত এক দশকে আমরা বড় পরিবর্তন এনেছি। বিশ্বের অন্যতম গ্রিন ফ্যাক্টরির পাশাপাশি শতাধিক উন্নতমানের কারখানাও আমাদের দেশে এখন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে।
ইন্টিগ্রাল গ্লোবালের প্রতিষ্ঠাতা নাবিল আহমেদ অনুষ্ঠানের মূল প্রবন্ধে আয়াত অ্যাডুকেশন ও আইজির বিস্তারিত কার্যক্রম তুলে ধরে তিনি বলেন, ৩টি টেক্সটাইল ও ৬টি তৈরি পোশাক কারখানার প্রায় ৩০ হাজার কর্মীকে নিয়ে এ দুই প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে কার্যক্রম পরিচালনা করছে। স্বাস্থ্য শিক্ষা ও সচেতনতা তৈরির কারণে কারখানার কর্মীদের মধ্যে মাস্ক পড়ার প্রবণতা ৫১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে এবং যথাযথভাবে হাত ধোয়ার প্রবণতাও উল্লেখযোগ্যহারে বেড়েছে।
আয়াত অ্যাডুকেশন-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা (সিইও) নুসরাত আমান বলেন, পোশাক খাতের কর্মীদের প্রতিনিয়ত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য শুধু বাইরের আর্থিক সহায়তার ওপর নির্ভর করে থাকলে হবে না। আমাদের সবার পারস্পরিক সহযোগিতায় কর্মীদের সুস্থতা নিশ্চিত করতে হবে। আয়াত অ্যাডুকেশন বিজিএমইএ ও আরএমজি কর্মীদের জন্য ডিজিটাল টুলকিট প্রণয়নের কাজ করছে, যেখানে তাদের স্বাস্থ্য, সুস্থতা ও প্রতিরক্ষামুলক সেবার তথ্য থাকবে।
জেসিএম (জন সি মার্টিন) ফাউন্ডেশনের সভাপতি ও কর্মসূচী পরিচালক ড. লিলিয়ান লু বলেন, পোশাক কারখানায় পরিবর্তন, উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি করতে কমিউনিটি ও স্টেকহোল্ডার ইচ্ছাশক্তি এবং কর্মীদের সহায়তা খুবই গুরুত্বপূর্ণ।
বিএস/এলএম