১৯৮৯ সাল থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত ৩২ বছর ধরে পলিত হয়ে আসা বিশ্ব জনসংখ্যা দিবসের মূল উদ্দেশ্য ছিলো অপুষ্টি,বেকারত্ব, অপর্যাপ্ত শিক্ষা ব্যবস্থা,স্বাস্থ্যবিধি সম্পর্কে নূন্যতম জ্ঞান এবং মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি।
যাতে করে মানুষ পৃথিবীর বুকে আরো কয়েক কোটি বছর নিশ্চিতেই বসবাস করতে পারে।তবে, বাংলাদেশের প্রক্ষাপটে এই চিত্রগুলোর বিপরীতমুখী প্রভাবই লক্ষ্যনীয় এবং দুঃখজনক হলেও সত্য যে, এই উদ্দেশ্যগুলো বাস্তবতার রূপ খুব ক্ষ্মীণ।
বর্তমানে সর্বশেষ আদমশুমারি অনুযায়ী বাংলাদেশে মোট জনসংখ্যা ১৪ কোটি ৯৭ লাখ ৭২ হাজার ৩৬৪ জন। প্রতি বর্গ কিলোমিটারে প্রায় ১১১৬ জন লোক বসবাস করে, যা সারা পৃথিবীতে সর্বোচ্চ। জনসংখ্যা বৃদ্ধির হার ১.৩৩% । দিনকে দিন এই ছোট্ট দেশটিতে যা হুলকিস্বরূপ হয়ে দাঁড়িয়েছে। এই বৃদ্ধির হার গতানুগতিক ধারায় বেড়েই চলেছে যার ফলশ্রুতিতে, সারাদেশে দারিদ্র্যতার হার,বেকারত্বের হার বৃদ্ধি পাচ্ছে। যে পরিমাণ মানুষ বৃদ্ধি পাচ্ছে সে তুলনায় কিন্তু খাদ্য, বাসস্থানের পর্যাপ্ত যোগান পরিলক্ষিত হচ্ছে না। এতে করে খাদ্য সংকটের সঙ্গে সঙ্গে, প্রকৃতির ওপর পড়ছে বিরূপ প্রতিক্রিয়া। জনসংখ্যা দিবসের মূল উদ্দেশ্যই ছিলো মানুষকে সচেতন করা। ঠিক কতোটুকু বাস্তবায়িত হচ্ছে তা??? জনসংখ্যা দিবসের গুরুত্ব কতজন মানুষ জানেন?? সকলে কি সমান গুরুত্ব দিয়ে দেখেন এই বিষয়েগুলো?? এই প্রশ্নগুলো কিন্তু থেকেই যাচ্ছে। তাই নাগরিক দায়িত্ব হিসেবে এই জনসংখ্যার বৃদ্ধির ভালো এবং মন্দ দুইটি দিকই তুলতে ধরতে হবে দেশের সকল শ্রেণির মানুষের কাছে। সচেতন করতে হবে জন্মনিয়ন্ত্রণ পদ্ধতিগুলোর ব্যবহার সম্পর্কে। যথাযথ জ্ঞান, সচেতনতা,বাল্যবিবাহ রোধ,সুষ্ঠু শিক্ষাই পারবে মানুষের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টি করতে। এতে করে, দেশের ওপর জনসংখ্যার মাত্রাতিরিক্ত চাপ এবং প্রকৃতির ওপর করা অমানবিক অত্যাচারগুলো কিছু হলেও কমিয়ে আনা সম্ভব হবে।
আসুন এই জনসংখ্যা দিবসে আমরা সকলের মধ্যে সচেতনতা সৃষ্টির ধাপ এগিয়ে দেই। কারণ আমাদের দেশ রক্ষা করার দায়িত্বটা কিন্তু আমাদেরই।
লেখক- আনিকা তাহ্সিন অর্না
শিক্ষার্থী, ব্যবস্থাপনা বিভাগ,জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়