টানা কয়েকদিনের ভারী বর্ষণে তিস্তার পানি বেড়ে ডালিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার কাছাকাছি প্রবাহিত হচ্ছে। পানি নিয়ন্ত্রণে ব্যারেজের ৪৪টি জলকপাট খুলে দেওয়া হয়েছে। এতে তিস্তা চরের মানুষ আতঙ্কিত হয়ে পড়ছেন। পাশাপাশি তিস্তা চর এলাকায় কয়েক হাজার একর আমন ক্ষেত পানির নিচে তলিয়ে যাওয়ার আশঙ্কা করছেন কৃষকরা।
সোমবার (২৪ সেপ্টেম্বর) বিকেল ৩টায় দেশের বৃহত্তম সেচ প্রকল্প লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার তিস্তা ব্যারেজ ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি প্রবাহ রেকর্ড করা হয় ৫২ দশমিক ৭ মিটার (স্বাভাবিক ৫২ দশমিক ১৫ মিটার)। যা বিপৎসীমার ৮ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে।
স্থানীয়রা জানান, লালমনিরহাট জেলা ও তার পার্শ্ববর্তী অঞ্চলে গত শনিবার সকাল থেকে রোববার বিকেল পর্যন্ত টানা ভারি বৃষ্টি হয়েছে। বৃষ্টির পানিতে ডুবে গেছে ফসলের ক্ষেত থেকে খেলার মাঠসহ সর্বত্রই। চার দিকে শুধু পানি আর পানি। বৃষ্টির কারণে লালমনিরহাটের সকল নদ নদীর পানি প্রবাহ বেড়েছে। রোববার পানি বেড়ে বিকেল ৩টায় ডালিয়া পয়েন্টে তিস্তার পানি বিপৎসীমার ৮ সেন্টিমিটার নীচ দিয়ে প্রবাহিত হয়। টানা ভারি বর্ষণের কারণে ডালিয়া পয়েন্টে পানিপ্রবাহ বেড়েছে বলে জানিয়েছে ব্যারেজ কর্তৃপক্ষ।
নদীপাড়ের মানুষজন জানায়, পানি বেড়ে যাওয়ার কারণে তিস্তা নদীর বাম তীরে লালমনিরহাট জেলার নদী তীরবর্তী নিম্নাঞ্চলগুলো প্লাবিত হয়েছে। বন্যায় শঙ্কায় চিন্তিত তিস্তাপাড়ের মানুষ। চলতি মৌসুমে কয়েক দফায় বন্যা হলেও তা বেশি সময় স্থায়ী ছিল না। মৌসুমের শেষদিকে বড় বন্যার আশঙ্কা করছেন নদী পাড়ের মানুষ।
তিস্তা নদী লালমনিরহাট জেলার দক্ষিণ পশ্চিম দিয়ে প্রবাহিত। জেলার সবকয়টি উপজেলার উপর দিয়ে বয়ে চলা তিস্তা নদীতে বন্যা দেখা দিলে তা পুরো জেলাকে দুর্ভোগে ফেলে। তিস্তা পাড়ে বন্যা হলে জেলার ৫টি উপজেলা বন্যা কবলিত হয়ে পড়ে। সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় হাতীবান্ধা উপজেলা।
লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী শুনীল কুমার বলেন, টানা ভারি বর্ষণে তিস্তা নদীর পানি প্রবাহ বেড়েছে। সবগুলো জলকপাট খুলে পানি প্রবাহ নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। ২৪ ঘণ্টায় আরও তিস্তার পানি বাড়ার সম্ভাবনা রয়েছে।
বিএস/এলএম