নিজস্ব প্রতিবেদক,
পটুয়াখালীর দশমিনায় আট বছরের শিশু শাকিল হোসেন হত্যা মামলায় নিহতের বাবা ফাঁসির দণ্ডপ্রাপ্ত শহিদ রাড়ীর সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আপিল বিভাগ। একইসঙ্গে তাকে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে আরও দুইবছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
আজ মঙ্গলবার প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনের নেতৃত্বে আপিল বিভাগের ছয় বিচারপতির বেঞ্চ এ রায় দেন।
আসামি শহিদ রাড়ীকে অবিলম্বে কনডেম সেল থেকে বের করে সাধারণ সেলে রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি তাকে সাজার ক্ষেত্রে রেয়াদ সংক্রান্ত আইনের সকল সুবিধা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আদালতে নিহতের বাবা শহিদ রাড়ীর পক্ষে রাষ্ট্র নিযুক্ত আইনজীবী ছিলেন অ্যাডভোকেট হেলাল উদ্দিন মোল্লা। রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল বিশ্বজিৎ দেবনাথ।
মামলা বিবরণে জানা যায়,প্রলয়ঙ্করী ঘূর্ণিঝড় সিডরে নিজের বাড়ি-ঘর ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় শ্বশুরবাড়িতে আশ্রয় নেন শহিদ রাড়ী। পটুয়াখালীর দশমিনা উপজেলার চরগুনি গ্রামে ঘরজামাই হিসেবে থাকতে শুরু করেন। এ অবস্থায় শ্বশুরবাড়ি থেকে অন্য ভায়রার টাকা চুরির অভিযোগে শহিদ রাড়ীকে মারধর করা হয়। এর জেরে রাগে-ক্ষোভে নিজের ছেলেকে দুই কিলোমিটার দূরে নিয়ে যান শহিদ। সেদিন ছিল ২০০৮ সালের ২২ মে। ওই রাতে নিজের শিশু পুত্রকে হত্যা করেন শহিদ রাড়ী। এরপর বাড়িতে ফিরে স্ত্রীকে চাপ দেন ছেলের জন্য। এ অবস্থায় পরদিন ছেলের লাশ উদ্ধার হওয়ায় শহিদ রাড়ীকে আটক করে পুলিশে দেওয়া হয়। ২৩ মে মামলা হয়। পরদিনই হত্যার কথা স্বীকার করে ১৬৪ ধারায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দী দেন শহিদ রাড়ী।
এরপর পুলিশ এ মামলায় অভিযোগপত্র দাখিল করেন। এ মামলায় পটুয়াখালীর আদালত ২০০৯ সালের ১৪ মে শহিদ রাড়ীকে মৃত্যুদণ্ড দেয়। এই রায় অনুমোদনের জন্য হাইকোর্টে ডেথ রেফারেন্স পাঠানো হয়। আর নিম্ন আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করেন আসামি। উভয় আবেদনের ওপর শুনানি শেষে ২০১৪ সালের ১৮ জুন হাইকোর্ট শহিদ রাড়ীর মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। এ রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করেন শহিদ রাড়ী। এ আপিলের ওপর শুনানি শেষে শহিদ রাড়ীর সাজা কমিয়ে যাবজ্জীবন দণ্ড দিলেন সর্বোচ্চ আদালত।
বিএসডি/এমএম