নিজস্ব প্রতিবেদকঃ
দেশব্যাপী লাগাতার অবরোধ ও রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ব্যাবসায়িক মন্দা কাটাতে সাপ্তাহিক বন্ধের দিনেও দোকান খুলেছেন নিউমার্কেটের কিছু ব্যবসায়ী ও দোকানিরা। তারা বলছেন, মাসের শুরু থেকেই অবরোধের কারণে কাঙ্ক্ষিত ক্রেতার দেখা না পাওয়ায় টানাপোড়েন শুরু হয়েছে। তাই অনেকটা বাধ্য হয়েই সাপ্তাহিক ছুটির দিনেও দোকান খুলে ক্রেতার আশায় বসে আছেন তারা।
মঙ্গলবার (৭ নভেম্বর) দুপুরে এমনটিই জানান সায়েন্স ল্যাবরেটরি, নিউমার্কেট ও এলিফ্যান্ট রোডসহ আশেপাশের বিভিন্ন মার্কেটের ব্যবসায়ীরা।
সরেজমিনে দেখা যায়, মিরপুর রোডের গোল্ডেন গেট শপিং সেন্টার, খান প্লাজা, কাদের অর্কেড, প্রিয়াঙ্গন শপিং সেন্টার, বাইতুল মামুর জামে মসজিদ মার্কেট, বদরুদ্দোজা সুপার মার্কেট, নেহার ভবন, নুরজাহান সুপার মার্কেট, চন্দ্রিমা সুপার মার্কেট, নূর ম্যানশন সুপার মার্কেট ও নিউ সুপার মার্কেটের সামনের বেশ কিছু দোকান খোলা রয়েছে। যদিও ক্রেতার উপস্থিতি একেবারে নেই বললেই চলে।
এদিন এসব মার্কেট এলাকা একেবারেই ফাঁকা দেখা গেছে। স্থানীয় ও আশেপাশে বসবাস করেন এমন মানুষজন ছাড়া তেমন কাওকেই দেখা যায়নি। অধিকাংশ দোকানের কর্মচারীরাই অবসর ও অলস সময় পার করছেন। কাউকে দোকানের ভেতরে বসে বসে খোশগল্প করতেও দেখা যায়। একইসঙ্গে ফুটপাতেও তেমন কোনো মানুষের উপস্থিতি দেখা যায়নি। ফুটপাতের ভাসমান দোকানিদেরও অলস সময় পার করতে দেখা গেছে।
প্রিয়াঙ্গন শপিং সেন্টারের শহীদ ফ্যাশনের কর্মচারী নাজমুল ইসলাম বলেন, সকাল থেকে দোকান খোলা থাকলেও তেমন কোনো ক্রেতা আসেনি। একেবারেই ফাঁকা সময় পার করছি। মূলত এ এলাকায় মঙ্গলবার সাপ্তাহিক বন্ধের বিষয়টি সবাই জানে, তাই কেউ আসেনি। তবে অন্য সময় বন্ধের দিনে দোকান খুললেও বেশ কিছু মানুষজন আসত। আজ তেমনটা নেই। একেবারেই ফাঁকা। হয়ত বিকেলের পর কিছুটা বিক্রি হতে পারে।
নূরজাহান মার্কেটের ব্যবসায়ী আমিরুল ইসলাম বলেন, হরতাল-অবরোধে মাসের শেষ ও শুরুতেই বড় ধরনের হোঁচট খেতে হয়েছে। মানুষজন ভয়ে ঘর থেকে বের হতে চায় না। একেবারেই ক্রেতা নেই। দৈনিক বিক্রির ভারসাম্য বজায় না থাকলে আমাদের ব্যবসা করা কঠিন হয়ে যাবে। এখনো অনেকেই দোকান ভাড়া পরিশোধ করতে পারেনি। ধার-দেনা শুরু করতে হয়েছে। এই সময়টা মৌসুম পরিবর্তনের সময়। ব্যবসাটা ধরতে না পারলে ক্ষতি হয়ে যাবে।
তবে, বেচা-কেনার পরিস্থিতি এমন চলতে থাকলে সাপ্তাহিক বন্ধের দিন নিউমার্কেট খোলা রাখা হবে কি না, এ ব্যাপারে এই সপ্তাহে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান নিউমার্কেট ব্যবসায়ী সমিতির সভাপতি ডা. দেওয়ান আমিনুল ইসলাম শাহীন। তিনি বলেন, অবরোধের কারণে ক্ষতি পোষাতে বন্ধের দিনেও মার্কেটে দোকান খোলা রাখার বিষয়ে সিদ্ধান্ত হয়নি। তবে এই পরিস্থিতি চলতে থাকলে সবার সঙ্গে আলোচনায় বসে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এমন সিদ্ধান্ত এলে আনুষ্ঠানিকভাবে জানিয়ে দেব।
বিএসডি/আরপি