পিরোজপুর-৩ (মঠবাড়িয়া) আসনের সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির (জাপা) কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান রুস্তম আলী ফরাজীর দলীয় মনোনয়ন নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। জাতীয় পার্টিতে রওশান এরশাদ ও জি এম কাদেরের দ্বন্দ্বের কারণে মনোনয়ন পাওয়া নিয়ে বিপাকে পড়েছেন এই নেতা। রুস্তম আলী ফরাজী জাপার রাজনীতিতে রওশন এরশাদপন্থী হিসেবে পরিচিত।
রুস্তম আলী ফরাজী পিরোজপুর-৩ আসন থেকে চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তিনি ছাড়াও জাতীয় পার্টির দলীয় মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করে জমা দিয়েছেন দলের চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাসরেকুল আজম। এ আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় মনোনয়ন চেয়েছেন ১৬ জন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, পিরোজপুর-৩ আসনে একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে (২০১৮ সালে) আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী ছিল না। আওয়ামী লীগ আসনটি জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেয়। নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী রুস্তম আলী ফরাজী বিজয়ী হন। তিনি ১৯৯৬ সালের ১২ জুনের নির্বাচনে প্রথম জাতীয় পার্টি থেকে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ সালে তিনি জাতীয় পার্টি ছেড়ে বিএনপিতে যোগ দিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তিনি বিএনপির মনোনয়ন বঞ্চিত হয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়ে পরাজিত হন। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের আনোয়ার হোসেন বিজয়ী হন। ২০১৪ সালে রুস্তম আলী ফরাজী স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আনোয়ার হোসেনকে পরাজিত করে বিজয়ী হন। এরপর তিনি জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে তিনি জাতীয় পার্টির প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে বিজয়ী হন।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, রুস্তম আলী ফরাজীকে এবার দলীয় মনোনয়ন পেতে প্রতিদ্বন্দ্বীর মুখোমুখি হতে হচ্ছে। জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাসরেকুল আজম দলীয় মনোনয়ন পেতে খুব তৎপর। এ কারণে রুস্তম আলী ফরাজীর মনোনয়ন অনিশ্চিত হয়ে পড়েছে।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাসরেকুল আজম বলেন, ‘আমি ছাত্রজীবন থেকে জাতীয় পার্টির রাজনীতি করে আসছি। গত জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রুস্তম আলী ফরাজীকে বিজয়ী করতে কাজ করেছি। এবার আমাদের পার্টির তৃণমূলের নেতা-কর্মীদের দাবির কারণে আমি দলীয় মনোনয়ন চাচ্ছি।’
জাতীয় পার্টির এক নেতা নাম প্রকাশ না করার শর্তে প্রথম আলোকে বলেন, রুস্তম আলী ফরাজী সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পর দলীয় কর্মসূচিতে অংশ নিতেন না। দলীয় কর্মকাণ্ডে নিষ্ক্রিয় থাকায় দলের সঙ্গে তাঁর সম্পর্ক খারাপ যাচ্ছিল, বিশেষ করে দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদের সংসদ সদস্য রুস্তম আলী ফরাজীর ওপর ক্ষুব্ধ। তাঁকে রওশন এরশাদপন্থী হিসেবে বিবেচনা করা হয়। তবে উপজেলা ও পৌর জাতীয় পার্টির সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকসহ স্থানীয় নেতাদের বড় একটি অংশ রুস্তম আলী ফরাজীর পক্ষে আছেন।
মঠবাড়িয়া পৌর জাতীয় পার্টির সভাপতি ফারুক হোসেন বলেন, রুস্তম আলী ফরাজী আবারও দলীয় মনোনয়ন পাবেন। তিনি চারবার নির্বাচিত সংসদ সদস্য। এ আসন জাতীয় পার্টিকে ধরে রাখতে হলে রুস্তম আলী ফরাজীর বিকল্প জনপ্রিয় প্রার্থী নেই।
রুস্তম আলী ফরাজী বলেন, ‘আমি জাতীয় পার্টির প্রার্থী হওয়ার জন্য দলের মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করে জমা দিয়েছি। আশা করছি, আমি মনোনয়ন পাব।’
বিএসডি / মোঃ নাইমুর রাহমান