বিদেশের মাটিতে দক্ষতার সাথে বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করতে হবে:
বিএমইটি মহাপরিচালক
মাজিদ আহম্মেদ
বিদেশের মাটিতে দক্ষতার সাথে নিজের বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করতে হবে বলে মন্তব্য করেছেন জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরোর মহাপরিচালক সালেহ আহমদ মোজাফফর৷ রাজধানীর উত্তরার তুরাগে দক্ষিণ কোরিয়াগামী দক্ষ কর্মীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে সোমবার (২৯ জানুয়ারি) এসডিসি ওভারসিজ ট্রেনি এন্ড টেস্টিং সেন্টার থেকে দক্ষিণ কোরিয়াগামী দক্ষ কর্মীদের সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে ভার্চুয়ালি যুক্ত হয়ে এসব কথা বলেন তিনি৷ কর্মীদের সংবর্ধনা দিয়েছেন এসডিসি ওভারসিজ ট্রেনিং এন্ড টেস্টিং সেন্টার। ট্রেনিং শেষে দক্ষ কর্মীদের হাতে তাদের পাসপোর্ট, ভিসা ও টিকেট তুলে দেন প্রতিষ্ঠানটি
বিএমইটি মহাপরিচালক বলেন, কোরিয়ানরা তাদের অফিসে কাজ বাদ দিয়ে কোন গল্প বা আড্ডা দিবেন না৷ এটা তাদের আচরনের সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়৷ যারা প্রশিক্ষণ নিয়ে দক্ষ দেশের বাহিরে যাচ্ছেন তারা একটা ভিন্ন সমাজ ও সংস্কৃতিতে যাচ্ছেন৷ মনে রাখতে হবে সেখানে আপনার মানসিকতা অনুযায়ী সবকিছু প্রত্যাশা করা উচিত হবে না৷ আপনারা যে দেশে যাচ্ছেন সে দেশের সংস্কৃতিকে সম্মান করবেন৷ তিনি আরো বলেন, কোরিয়ান কর্মস্থলে সবাই যে প্রত্যাশিত মালিক পাবেন তা কিন্তু নয়৷ বিদেশে সর্বোচ্চ ধৈয্য ধারণ করতে হবে৷ কখনো হতাশ হবেন না৷ নিজের সেরাটা দিয়ে কাজ করবেন৷ তাদের রীতিনীতির সাথে নিজেকে মানিয়ে নিতে চেষ্টা করবেন৷ সব রকম পরিস্থিতিতে খাপ খাওয়ানোর মানসিকতা রাখতে হবে৷
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দৈনিক বর্তমান সময়ের সম্পাদক ও প্রকাশক মো: কবির আহমেদ বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির অক্সিজেনের অন্যতম উপাদান রেমিট্যান্স৷ এই রেমিট্যান্স যোদ্ধারাই দেশ ও জাতির সম্পদ৷ যারা দক্ষ হয়ে কোরিয়া যাচ্ছেন তারা দেশের প্রতিনিধিত্ব করবেন৷ আমি আশা করছি আপনারা বাংলাদেশের মান সমুন্নত রাখার পাশাপাশি দেশের অর্থনৈতিক সমৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবেন৷
কবির আহম্মেদ বলেন, আমরা যখন দক্ষ হবো তখনই কর্মস্থল আমাকে যথাযোগ্য মর্যাদা ও উপযুক্ত সম্মানী দিবে৷ কিন্তু অদক্ষ হয়ে বিদেশ গেলে আমাদের মোট সময়ের থেকে বড় একটি অংশ সে দেশের ভাষা, আচরণ ও কাজের দক্ষতা অর্জন করতেই শেষ হয়ে যায় ৷ আর যদি ভাষা না জানেন বা কাজ না জানেন তাহলে আপনার ইচ্ছা অনুভূতি কিংবা আপনার দায়িত্ব কোন কিছুই পালন করতে পারবেন না ৷ তিনি আরো বলেন দক্ষ হয়ে বিদেশ গেলে অর্থ ও সম্মান দু’ই মিলে ।
বিশেষ অতিথির বক্তব্য এশিয়া ফেডারেশন অব কোরিয়ান বিজনেস এর ভাইস চেয়ারম্যান পার্ক সং ওয়াং বলেন, আজকের অনুষ্ঠানে আপনাদের দেখে আনন্দিত হলাম৷ আগামীকাল (আজ) যে ২৪ জন কোরিয়া যাচ্ছেন তাদের স্বপ্ন বাস্তবায়ন হতে যাচ্ছে৷ আপনার ড্রিম কোরিয়া এখন বাস্তবে রুপ নিচ্ছে৷ দক্ষিণ কোরিয়া ও বাংলাদেশের মধ্যে দক্ষ শ্রমিক প্রেরণের এই প্রক্রিয়া প্রায় ৩০ বছর হয়েছে৷ এই পর্যন্ত বাংলাদেশ থেকে যত শ্রমিক কোরিয়া গেছেন তাদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বেসিক স্যালারিতে আপনারা যাচ্ছেন। E-7-3 ভিসা কোরিয়ার সরকারের দক্ষ কর্মীদের স্থায়ী বসবাসের জন্য একটি বিশেষ ভিসা। একজন কর্মী চাহিলে একটি নির্দিষ্ট সময়ের পর পরিবার নিতে এবং স্থায়ী বসবাস করতে পারবে। এমনকি চাইলে সেখানে বিয়েও করতে পারবে।
সং ওয়াং আরো বলেন, বর্তমানে পৃথিবী দ্রুত পরিবর্তন হচ্ছে৷ আজকাল রোবট ও আর্টিফিশিয়াল ইনটেলিজেন্স অনেক কাজ করছে৷ তবে আপনারা যে কাজে যাচ্ছেন সেখানে মানুষের বিকল্প নেই৷ আমরা বাংলাদেশ-কোরিয়া সম্পর্কের ৫০ বছর অতিক্রম করেছি৷ আগামীতে দুই দেশের সম্পর্ক আরও অটুট হবে আমার প্রত্যাশা৷ আপনারা যে কাজটি শিখে যাচ্ছেন কোরিয়ায় গিয়ে সে কাজটির সেরাটা দিতে চেষ্টা করবেন৷ সেখানে আপনারা আপনাদের কাজের মূল্যায়ন পাবেন৷
এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন, জনশক্তি, কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) এর মহাপরিচালক সালেহ আহমদ মোজাফফর, কোরিয়ান বিজনেস অব এশিয়া ফেডারেশনের ভাইস চেয়ারম্যান পার্ক সং ওয়াং, এসডিসি ওভারসিজ ট্রেনিং এন্ড টেস্টিং সেন্টারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আলমগীর কবির সহ কোরিয়ার অনেক কর্মকর্তারা।
উল্লেখ্য এসডিসি ওভারসিজ ট্রেনি এন্ড টেস্টিং সেন্টার প্রথম ধাপে 36 জন শ্রমিক প্রেরণ করছেন এবং দ্বিতীয় ধাপে (আজ) ২৪ জন দক্ষ শ্রমিক প্রেরণ করছেন ৷ তৃতীয় ধাপে আরও ৪ জন ই-৭ ভিসায় কোরিয়া যুক্ত হবেন ৷
বিএসডি / এলএম