নিজস্ব প্রতিবেদক
চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলায় দেশের সর্ববৃহৎ সার কারখানা চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেডসহ (সিইউএফএল) বিভিন্ন সরকারি দপ্তর এলাকায় শোডাউন দিচ্ছে বিএনপির একটি গ্রুপের নেতাকর্মীরা। ঠিকাদারি ব্যবসা নিয়ন্ত্রণে নিতে রাজপথ বাদ দিয়ে এসব এলাকায় মিছিল করা হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। যদিও মিছিলের নেতৃত্ব দেওয়া বিএনপি নেতাকর্মীদের দাবি নিয়ন্ত্রণে নিতে নয়, চাঁদাবাজি বন্ধে তারা এ তৎপরতা চালাচ্ছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার (২৬ সেপ্টেম্বর) দিনভর রাষ্ট্রায়ত্ত সিউএফএল কারখানার জেটি এলাকায় মিছিল করেছে বিএনপি নেতাকর্মীরা। এতে জেটি এলাকায় আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে এবং কাজ থেকে বিরত থাকে বেশিরভাগ শ্রমিক।
জেটি এলাকায় মূলত সার লোড-আনলোড করার কাজ চলে। সপ্তাহখানেক ধরে আনোয়ারা উপজেলা পরিষদ এলাকা, কাফকো ও কোরিয়ান ইপিজেড এলাকায় ঘন ঘন মিছিল করছে বিএনপি নেতাকর্মীরা। এসময় স্লোগান দেওয়া হচ্ছে— হেলাল ভাইয়ের ঘোষণা চাঁদাবাজি চলবে না, আনোয়ারার মাটি হেলাল ভাইয়ের ঘাঁটি।
স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীরা জানান, হেলাল উদ্দিন একসময় আনোয়ারা উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য সচিব ছিলেন। উপজেলার আরেক বিএনপি নেতা হুমায়ুন কবিরকে ছুরিকাঘাতের অভিযোগে তিনি দল থেকে বহিষ্কার হয়েছিলেন। ওই ঘটনায় তার বিরুদ্ধে মামলাও হয়েছিল। যেটি চট্টগ্রাম আদালতে বিচারাধীন রয়েছে। পরবর্তীতে তদবির করে দলের প্রাথমিক সদস্যপদ ফিরে পান হেলাল উদ্দিন। যদিও বর্তমানে তিনি নিজেকে সদস্য সচিব বলে পরিচয় দিচ্ছেন। এ পরিচয়ে তিনি অংশ নিচ্ছেন নানা অনুষ্ঠানে। শোডাউন দিচ্ছেন বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে। এসব আয়োজনের ব্যানারে নিজের পদবি হিসেবে আনোয়ারা উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব উল্লেখ করছেন তিনি।
কয়েকজন শ্রমিক নেতা জানান, বিএনপি নেতা হেলালের অনুসারীরা মূলত বর্তমান ঠিকাদার আওয়ামী লীগ নেতা সাবেক ভূমিমন্ত্রীর ছোট ভাই আনিসুজ্জামান চৌধুরী রনির ব্যবসায়িক পার্টনার আজিজের ব্যবসা দখলে নিতে চেষ্টা চালাচ্ছে। ইতোমধ্যে তারা আজিজের বেশ কিছু ব্যবসা দখলেও নিয়েছেন।
এ বিষয়ে বিএনপি নেতা হেলাল উদ্দিন বলেন, সরকারি কারখানা সিইউএফএল এবং বিভিন্ন দপ্তরে বিএনপির পরিচয় দিয়ে চাঁদাবাজির অভিযোগ আসছে। এ কারণে আমরা ওই এলাকাগুলোতে শোডাউন দিচ্ছি। আমাদের নেতা তারেক রহমানের ঘোষণা, চাঁদাবাজি চলবে না। তাই আমি এলাকায় শোডাউন দিচ্ছি যেন কেউ চাঁদাবাজির সুযোগ না পায়। আমার মোবাইল নম্বরও দিয়ে দিচ্ছি, যেন সরাসরি আমাকে অভিযোগ করতে পারে।
এ বিষয়ে সিইউএফএলের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মিজানুর রহমান বলেন, জেটি এলাকায় মিছিল-মিটিং করেছে বিভিন্ন গ্রুপ। পট-পরিবর্তনের পর আগের ঠিকাদাররা গা ঢাকা দিয়েছে। এ সুযোগে তাদের জায়গায় আসতে চায় বিভিন্ন গ্রুপ। তবে আমাদের কারখানার কাজে কোনো ধরনের ব্যাঘাত এখনো ঘটেনি। এমন হলে আমরা সেনাবাহিনীর সহায়তা নেব।