নিজস্ব প্রতিবেদক,
সরকার পবিত্র ঈদুল আজহাকে সামনে রেখে শর্তসাপেক্ষে সব ধরনের যানবাহন চলাচল উন্মুক্ত করে দিলেও নৌ ও সড়কপথে স্বাস্থ্যবিধি একেবারেই মানা হচ্ছে না। সেই সঙ্গে নির্দেশনা উপেক্ষা করে লঞ্চ, বাসসহ বিভিন্ন ধরনের নৌ ও সড়কযানে যাত্রীদের কাছ থেকে আদায় করা হচ্ছে দ্বিগুণ ভাড়া।
বেসরকারি সংগঠন গ্রিন ক্লাব অব বাংলাদেশ (জিসিবি) এবং নৌ, সড়ক ও রেলপথ রক্ষা জাতীয় কমিটির যৌথ পর্যবেক্ষণে এ তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। স্বাস্থ্যবিধি লঙ্ঘিত হলেও ঢাকার সদরঘাট টার্মিনাল থেকে দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলে চলাচলকারী কিছুসংখ্যক বিলাসবহুল লঞ্চে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে না বলে জানিয়েছে পরিবেশ ও নাগরিক অধিকার সংরক্ষণবিষয়ক এ দুটি সংগঠন।
শনিবার (১৭ জুলাই) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়, ১৫ ও ১৬ জুলাই দুই দিন রাজধানী ঢাকার গাবতলী, মহাখালী, ফুলবাড়িয়া (গুলিস্তান), কমলাপুর টিটিপাড়া ও সায়েদাবাদ বাস টার্মিনাল, মালিবাগ ও কল্যাণপুরসহ বিভিন্নস্থানের বাস কাউন্টার, কমলাপুর রেলস্টেশন, সদরঘাট লঞ্চ টার্মিনাল এবং শিমুলিয়া ও পাটুরিয়া ফেরিঘাটে তারা পর্যবেক্ষণ চালিয়েছে। এতে জানা গেছে, কমলাপুর রেলস্টেশন ছাড়া অন্য কোথায়ও স্বাস্থ্যবিধি মানা হচ্ছে না। ন্যুনতম শারীরিক দূরত্বও তো বজায় রাখা হচ্ছে না; এমনকি যাত্রীদের একটি বড় অংশ মাস্ক ব্যবহার কিংবা দীর্ঘ সময় পরপরও হ্যান্ড স্যানিটাইজারও ব্যবহার করছেন না। সব বাসেই আসন সংখ্যা পূর্ণ করে যাত্রী বহন করা হচ্ছে। আর লঞ্চের ডেক ও ছাদে যাত্রী নেওয়া হচ্ছে গাদাগাদি করে।
পর্যবেক্ষণ প্রতিবেদনে বলা হয়, সরকার সংক্রমণ এড়াতে যাত্রীদের শারীরিক দূরত্ব বজায় রাখার জন্য পরিবহন মালিকদের ৬০ শতাংশ ভাড়া বৃদ্ধির সুযোগ দিয়ে এসব যানবাহনে নির্ধারিত আসন সংখ্যার অর্ধেক যাত্রী বহনের কঠিন শর্ত আরোপ করে। কিন্তু বাস এবং অধিকাংশ লঞ্চে ৬০ শতাংশের স্থলে ১০০ শতাংশ বেশি ভাড়া আদায় করছে। অন্যদিকে অর্ধেক যাত্রী বহনের শর্ত লঙ্ঘন করে সকল বাসে আসন সংখ্যার সমপরিমাণ এবং লঞ্চে দ্বিগুণেরও বেশি যাত্রী বহন করছে। এছাড়া শিমুলিয়া-বাংলাবাজার ও পাটুরিয়া-দৌলতদিয়া নৌপথে ছোট লঞ্চগুলোতে এবং ফেরিতে গাদাগাদি করে যাত্রী বহন করা হচ্ছে। তবে সদরঘাট থেকে চলাচলকারী কিছুসংখ্যক বিলাসবহুল লঞ্চে বাড়তি ভাড়া নেওয়া হচ্ছে না।
এ প্রসঙ্গে গ্রিন ক্লাব অব বাংলাদেশের (জিসিবি) সাধারণ সম্পাদক আশীষ কুমার দে জানান, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী সর্বত্র তৎপর রয়েছে। কিন্তু দীর্ঘদিনে লকডাউনের পর সব ধরনের যানবাহন চলাচল শুরু করায় ঈদকে সামনে রেখে মানুষ বাড়ি ছুটছে। এছাড়া স্বল্প সময়ে বিপুলসংখ্যক মানুষ পরিবহনে সক্ষমতা আমাদের দেশে নেই। এসব কারণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া অত্যন্ত কষ্টকর। এছাড়া স্বাভাবিক সময়েও ঈদের আগে ঘরমুখী মানুষের কয়েকগুণ বেশি চাপ থাকে। তবে অতিরিক্ত ভাড়া আদায় বন্ধ এবং মাস্ক ও স্যানিটাইজার ব্যবহার নিশ্চিত করতে প্রশাসনকে কঠোর হওয়া উচিত বলে মন্তব্য করেন তিনি।
বিএসডি/এমএম