ফিচার ডেস্ক -
বহু বছর ধরেই বিজ্ঞানীরা অক্লান্ত গবেষণা ও মহাকাশে একের পর এক অভিযান পরিচালনা করে আসছেন মানুষের বসবাসের জন্য পৃথিবীর বিকল্প গ্রহের সন্ধানে। আর সেই সন্ধানের তালিকায় প্রথমেই যে গ্রহটিকে গুরুত্ব দিচ্ছেন বিজ্ঞানীরা, তা হলো লাল গ্রহ হিসেবে পরিচিত মঙ্গল গ্রহ।
মঙ্গল গ্রহে মানুষের বসবাসের সম্ভাবনা জানতে গ্রহটিতে অতীতে প্রাণের অস্তিত্ব ছিল কিনা, বা বর্তমানে আছে কিনা, সেটা নিয়ে কয়েক দশক ধরে গবেষণা চালাচ্ছেন নাসার মহাকাশ বিজ্ঞানীরা।বেশ কয়েকটি মিশন থেকে ইতিমধ্যে এটা পরিষ্কার হয়ে গেছে যে, মঙ্গল গ্রহের পরিবেশে মিথেন গ্যাস রয়েছে। কিন্তু সেখানে রহস্যময় এই মিথেন কোথায় তৈরি হচ্ছে তা এতদিন জানা ছিল না।মিথেন গ্যাস উদগিরণ হচ্ছে এমন একটি স্থান এবার শনাক্ত করা গেছে বলে দাবি করেছেন বিজ্ঞানীরা। মিথেন গ্যাস প্রায়ই অনুজীবের মাধ্যমে তৈরি হয়ে থাকে। সুতরাং গ্রহটিতে মিথেন গ্যাসের এই উৎস আবিষ্কার সেখানে প্রাণের অস্তিত্বের সম্ভাবনারই ইঙ্গিত দিচ্ছে।
মঙ্গল গ্রহের ‘গেল ক্রেটার’ নামক একটি বিশাল গহ্বরে ২০১২ সাল থেকে কাজ করছে নাসার রোবটযান কিউরিসিটি রোভার। এই রোভারের একটি যন্ত্রাংশ ওই এলাকার আশেপাশে মিথেন গ্যাসের পরিমাণ পরিমাপের কাজ করছে এবং ৬ বার মিথেনের সন্ধান পেয়েছে। সেই মিথেনের উৎস এবার শনাক্ত করা সম্ভব হয়েছে বলে মনে করছেন গবেষকরা।ক্যালিফোর্নিয়া ইনস্টিটিউট অব টেকনোলজির গবেষকদের মতে, কিউরিসিটি রোভার থেকে মাত্র কয়েক ডজন মাইল দূরেই মিথেনের উৎসটি থাকতে পারে।
তাঁদের গবেষণাপত্রে বলা হয়েছে, ‘কিউরিসিটি রোভারের পশ্চিম এবং দক্ষিণ-পশ্চিম দিকে মিথেন গ্যাসের উদগিরণ অঞ্চল হতে পারে, এর অবস্থান উত্তর-পশ্চিম ক্রেটারের পৃষ্ঠের নিচে। আর এটা একটা কাকতালীয় ব্যাপার যে, কিউরিসিটি রোভার যে এলাকায় অবতরণ করেছিল, তার পাশেই সক্রিয় মিথেন গ্যাসের অঞ্চল রয়েছে।’ নতুন এই আবিষ্কার বিজ্ঞানী মহলে তুমুল শোরগোল ফেলেছে। কারণ পৃথিবীতে প্রায় সব মিথেনেরই জৈবিক উৎস রয়েছে। সুতরাং এই আবিষ্কার মঙ্গল গ্রহের ওই এলাকায় প্রাণ থাকার জোড়ালো সম্ভাবনা সামনে এনে দিয়েছে।কানাডার ইয়র্ক ইউনিভার্সিটির মহাকাশ বিজ্ঞানী ড. জন মুরের মতে, মঙ্গল গ্রহে মিথেনের আয়ুষ্কাল ৩০০ বছর বা তার বেশি হতে পারে।’ সুতরাং মঙ্গলগ্রহে মিথেনের উৎস পাওয়া যাওয়ার মানে গত ৩০০ বছরের মধ্যেই সেখানে প্রাণ টিমটিম করছিল। তার ওপর বিজ্ঞানীদের ধারণা, গ্রহটিতে এখনো কিছু মিথেন উৎপন্ন হয়ে চলেছে। নতুন এই গবেষণা এখনো পিয়ার-রিভিউ জার্নালে প্রকাশ করা হয়নি।
বিএসডি/এমএম