আন্তর্জাতিক ডেস্ক
লেবাননের দক্ষিণাঞ্চলে একটি পৌরসভা ভবনে হামলা চালিয়েছে ইসরায়েল। এতে ১৬ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ওই পৌরসভার মেয়রও রয়েছেন। বর্বর এই হামলায় আহত হয়েছেন আরও অর্ধশতাধিক মানুষ।
হামলার সময় মেয়র সেখানে বৈঠক করছিলেন এবং হামলায় পৌর সদর দপ্তর ধ্বংস হয়ে গেছে। বৃহস্পতিবার (১৭ অক্টোবর) পৃথক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স এবং সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বুধবার ইসরায়েলি বিমান হামলায় দক্ষিণ লেবাননের একটি প্রধান শহরে পৌর সদর দপ্তর ধ্বংস হয়ে গেছে। এতে মেয়রসহ ১৬ জন নিহত হয়েছেন।
গত মাসের শেষের দিকে লেবাননে ইসরায়েলি বিমান হামলা শুরু হওয়ার পর থেকে দেশটির রাষ্ট্রীয় কোনও ভবনে এটিই সবচেয়ে বড় হামলা।
লেবাননের কর্মকর্তারা এই হামলার নিন্দা করেছেন। প্রাদেশিক রাজধানী নাবাতিহে হওয়া এই হামলায় ৫০ জনেরও বেশি লোক আহত হয়েছেন। দেশটির কর্মকর্তারা অভিযোগ করেছেন, এই হামলা প্রমাণ করে, সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহর বিরুদ্ধে ইসরায়েলের অভিযানে এখন লেবানন রাষ্ট্রকেও লক্ষ্যবস্তু করা হচ্ছে।
লেবাননের তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী নাজিব মিকাতি এই হামলার নিন্দা জানিয়ে বলেছেন, ইসরায়েল “ইচ্ছাকৃতভাবে” কাউন্সিলের বৈঠকে হামলা করেছে। তিনি বলেছেন, শহরের পরিষেবা এবং ত্রাণ পরিস্থিতি নিয়ে পৌরসভা ভবনে আলোচনা করার সময় ইসরায়েলিরা ইচ্ছাকৃতভাবে মিউনিসিপ্যাল কাউন্সিলের সভাকে লক্ষ্যবস্তু করে হামলা চালায়।
লেবাননে জাতিসংঘের মিশন (ইউএনআইএফআইএল) বলেছে, তাদের শান্তিরক্ষীরা বুধবার সকালে দক্ষিণ লেবাননের কেফার কেলার কাছে তাদের ওয়াচটাওয়ারে ইসরায়েলি ট্যাংক থেকে গুলি ছুড়তে দেখেছেন। এতে দুটি ক্যামেরা ধ্বংস হয়েছে এবং টাওয়ারটি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলেও ইউনিফিল জানিয়েছে।
অবশ্য ইউনিফিলের বিবৃতির বিষয়ে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর কাছ থেকে তাৎক্ষণিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
এদিকে লেবাননে জাতিসংঘের বিশেষ সমন্বয়কারী দক্ষিণাঞ্চলীয় শহর নাবাতিহে পৌরসভা ভবনগুলোতে বিমান হামলায় মেয়র এবং আরও ১৫ জনকে হত্যার ঘটনায় ইসরায়েলের সমালোচনা করেছেন।
জেনাইন হেনিস-প্লাসচের্ট মেয়র আহমেদ কাহিলের হত্যাকাণ্ডকে “উদ্বেগজনক” বলে অভিহিত করেছেন এবং বলেছেন, আন্তর্জাতিক মানবিক আইনের লঙ্ঘন “সম্পূর্ণভাবে অগ্রহণযোগ্য”।
বুধবারের এই হামলায় নিহতদের মধ্যে অন্তত পাঁচজন পৌরসভার কর্মীও রয়েছেন যারা ওই এলাকায় থাকা বেসামরিক লোকদের সহায়তার সমন্বয়কারী ছিলেন বলে নাবাতিহের গভর্নর হাওয়াইদা তুর্ক বিবিসিকে বলেছেন।
তবে ইসরায়েলি সামরিক বাহিনীর একজন মুখপাত্র বলেছেন, তাদের বাহিনী ওই এলাকায় কয়েক ডজন হিজবুল্লাহ যোদ্ধাকে লক্ষ্যবস্তুকে করে অভিযান চালিয়েছে এবং ইরান-সমর্থিত এই গোষ্ঠীর ব্যবহৃত একটি টানেল ধ্বংস করেছে।