নিজস্ব প্রতিবেদক
বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) এমদাদ উল বারী বলেছেন, গ্রাহকের ডাটা প্রটেকশন গুরুত্বপূর্ণ। এজন্য একটা চলনসই আইন প্রয়োজন হবে।
সোমবার (২৮ অক্টোবর) আগারগাঁওয়ের বিটিআরসি ভবনে ডিজিটাল সেবা উদ্যোক্তাদের নিয়ে আয়োজিত গোলটেবিল আলোচনায় তিনি এ কথা বলেন।
চেয়ারম্যান বলেন, বিদ্যমান টেলিযোগাযোগ আইনে মন্ত্রণালয় থেকে পূর্বানুমোদন নিতে হয় বিধায় লাইসেন্স প্রদানে বিলম্ব হয়। সেক্ষেত্রে লাইসেন্স অথরিটি থাকা দরকার বিটিআরসির কাছে। পলিসি তৈরি করবে মন্ত্রণালয় এবং আইন তৈরি করবে সংসদ। আন্তর্জাতিক টেলিযোগাযোগ ইউনিয়ন (আইটিউ) নিয়মানুযায়ী কোনো গ্রাহক তিনমাসে একবার ডাটা ব্যবহার করলে তাকে ব্যবহারকারী ধরা হয়।
অনুষ্ঠানে তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিভাগের সচিব শীষ হায়দার চৌধুরী বলেন, দেশে ডিজিটাল ডিভাইড কমে আসছে ধীরে ধীরে। সেজন্য টেলিযোগাযোগ খাতের জন্য সরকার-একাডেমিয়া ও খাত সংশ্লিষ্টদের মধ্যে একটা সহযোগিতা প্রয়োজন। আইসিটি বিভাগ ডিজিটাল সচেতনতা তৈরিতে কাজ করছে।
অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান চালডালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ওয়াসিফ আলিম। তিনি বলেন, ভারতে ই-কমার্স বাজার ৭৫ বিলিয়ন ডলার। অন্যদিকে বাংলাদেশ ১.৩ বিলিয়ন এবং ইন্দোনেশিয়ার ৪৫ বিলিয়ন ডলার। বাংলাদেশে ৬০ লাখ অনলাইন গ্রাহক রয়েছে, অন্যদিকে ভারতের ১৫ কোটি আর ইন্দোনেশিয়ার ৪ কোটি অনলাইন কাস্টমার রয়েছে।
বিডিজবস ডটকম-এর প্রতিষ্ঠাতা ও প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা একেএম ফাহিম মাশরুর বলেন, ব্রডব্যান্ডের মতো মোবাইল ডাটার দামও কমিয়ে আনা প্রয়োজন এবং ব্রডব্যান্ডের মতো আনলিমিটেড মাসিক মোবাইল ডাটা মূল্য সর্বোচ্চ ৫০০ টাকার মধ্যে আনা উচিত। মোবাইল অপারেটর কর্তৃক কিস্তিতে স্মার্টফোন কেনার সুযোগ দিলে স্মার্টফোন ব্যবহারকারী বাড়বে।
ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান দারাজ লিমিটেডের চিফ কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার এএইচএম হাসিনুল কুদ্দুস রুশো বলেন, গ্রাহককে এসএসএম দেওয়ার ক্ষেত্রে এসএমই প্রতিষ্ঠানগুলোকে ছাড় দেওয়া প্রয়োজন। এক্ষেত্রে মোবাইল অপারেটরগুলো একবছর মেয়াদি চুক্তিবদ্ধ হয়ে কম খরচে সাবস্পিক্রপশ সুবিধা প্রদান করতে পারে। যারা বেশি এসএমএস ব্যবহার করে তাদের জন্য ছাড় বেশি দেওয়া যেতে পারে।
বাংলালিংকের চিফ কর্পোরেট অ্যাফেয়ার্স অফিসার তাইমুর রহমান বলেন, যদি বছরে শতকরা ১০ শতাংশ ইন্টারনেট ব্যবহার বাড়ে তাহলে তা জিডিপিতে ১.৮ শতাংশ ভূমিকা রাখে।
ভয়েস সেবা থেকে আয় কমছে জানিয়ে তিনি বলেন, মোবাইল অপারেটরদেরকেও ডিজিটাল সার্ভিস দেওয়ার সুযোগ দিতে হবে। এজন্য ভার্টিকেল ইন্ট্রেগ্রেশন অব পলিসি করার ওপর তাগিদ দেন তিনি।
বিটিআরসির স্পেকট্রাম বিভাগের মহাপরিচালক ব্রিগেডিয়ার জেনারেল মোহাম্মদ মনিরুজ্জামান জুয়েল বলেন, স্মার্টফোনের ব্যবহার বাড়াতে বিটিআরসি কাজ করছে। এনইআইআর সিস্টেম চালু করতে কয়েকমাস সময় লাগবে উল্লেখ করে তিনি বলেন, মোবাইল ইন্টারনেটের গতি বাড়াতে অপারেটরদেরকে বিদম্যান স্পেকট্রাম যথাযথ ব্যবহার করতে বলা হয়েছে।
গোলটেবিল বৈঠকে বিটিআরসির ভাইস-চেয়ারম্যান, কমিশনার, মহাপরিচালক এবং ডিজিটাল সেবা প্রদানকারী প্রায় ৩০টি প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিরা উপস্থিত থেকে তাদের মতামত দেন।