ফিচার ডেস্ক-
দরোজায় কড়া নাড়ছে ঈদুল আজহা। এরই মধ্যে অনেকেরই কোরবানির পশু কেনার কাজটিও শেষ হয়ে গেছে। এখন চলছে কোরবানির সরঞ্জাম গোছানো আর অন্যান্য প্রস্তুতি।
প্রস্তুতির শুরুতেই প্রয়োজনীয় সরঞ্জামগুলো রাখতে হবে আপনার হাতের নাগালে।
কোরবানির সরঞ্জাম
চাপাতি: কোরবানির পশু জবাইয়ের কাজে ব্যবহার করা হয় এটি। চামড়া ছাড়ানোর কাজেও লাগে চাপাতি। এটি আকারে তুলনামূলক বড়, তাই বহনের সময় সাবধানতা অবলম্বন করা উচিত।
দা: দা দুই ধরনের। একটি সাধারণ, অন্যটি রামদা। রামদা দিয়ে চাপাতির কাজও সম্পন্ন করা যায়। তবে সাধারণ দা মাংস বানানোর কাজে লাগে। এর সাইজ বা আকৃতি বিভিন্ন রকম হয়ে থাকে। এর হাতল কাঠ বা লোহার হতে পারে।
ছুরি-চাকু: পশুর চামড়া ছাড়ানোর জন্য ছুরি-চাকুর প্রয়োজনীয়তা অনেক। তবে চাকু যেন ধারালো হয়, সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। হাড় থেকে মাংস ছাড়াতে ছুরি ব্যবহার করা হয়। বাজারে নানা আকারের ছুরি-চাকু পাওয়া যায়।
চাটাই ও খাইট্টা: মাংস দ্রুত ও সুন্দর করে কাটার জন্য বর্তমানে গাছের গোলাকার কাঠ বা খাইট্টার ব্যবহার চোখে পড়ে। দা-বঁটি, ছুরির পাশাপাশি এ জিনিসগুলোও কোরবানিতে অপরিহার্য।
কোরবানির আগে
পশু কোরবানির স্থান নির্ধারণ করুন। কসাই ঠিক করে রাখুন। পশু কাটার জন্য ছুরি, দা প্রভৃতি ধার দেওয়ার ব্যবস্থা করুন। কোরবানির আগে পশুকে প্রচুর পরিমাণ পানি খাওয়াতে হবে। এতে জবাই করার পর চামড়া ছাড়াতে সুবিধা হবে।
জবাইয়ের প্রস্তুতি
নিজে জবাই করা উত্তম। নচেৎ জবাইয়ের জন্য সঠিক বিশ্বাসের মুসলমান নির্বাচিত করুন। জবাই করানোর ও গোশত বানানোর পারিশ্রমিক আগে থেকেই ফয়সালা করে নিন।
জবাই করার পর
ময়লা-আবর্জনা জমে যায়। স্থানটি পরিষ্কার না করলে পরিবেশ দূষিত হতে পারে। গন্ধ সৃষ্টি হতে পারে। জবাই করার স্থানে পানি ঢেলে রক্ত পরিষ্কার করতে হবে। রক্ত যেন শুকিয়ে না যায়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। হাড়গোড়, নাড়িভুঁড়ি, চামড়ার কাটা অংশ প্রভৃতি এক স্থানে জমা করে রাখতে হবে। এরপর নির্দিষ্ট স্থানে জড়ো করতে হবে যেন পরিচ্ছন্নকতার্মীরা নিয়ে যেতে পারেন। পরিচ্ছন্নতাকর্মীরা আসতে দেরি করলে কিংবা না এলে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানাতে হবে। অনেক জায়গায় পরিচ্ছন্নতাকর্মীর অভাব রয়েছে। এমন পরিস্থিতিতে সব ধরনের ময়লা-আবর্জনা এক সঙ্গে জড়ো করে মাটিতে গর্ত করে পুঁতে ফেলতে হবে। ফলে ময়লা-আবর্জনা দূর হবে, পরিবেশও দূষণ থেকে রক্ষা পাবে।
চামড়া ছাড়াতে
সঠিকভাবে পশুর চামড়া ছাড়াতে পারলে এর ন্যায্য দাম পাওয়া যায়। পশু জবাই করার পর দক্ষ লোক দিয়ে চামড়া ছাড়াতে হবে। অনেকে চামড়ার সঙ্গে লেগে থাকা মাংস বাঁচাতে গিয়ে চামড়া কেটে ফেলেন। এ ক্ষেত্রে সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। কারণ কাটা চামড়ার দাম ও মান তুলনামূলক কম।
কোরবানির পর
কোরবানির গোশত তিন ভাগ করা মোস্তাহাব। এক ভাগ আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধবকে উপহার দিন। এক ভাগ গরিব-মিসকিনকে দান করুন। এক ভাগ নিজের পরিবার-পরিজনদের জন্য রেখে দিন। জবাই করা, গোশত বানানো অথবা কোরবানি সংশ্লিষ্ট কোনো কাজে যারা সহযোগিতা করেছে- সে সবের বিনিময়ে পশুর কোনো অংশ তাদেরকে দেওয়া যাবে না। নগদ অর্থ দিয়ে বা অন্য কোনোভাবে তাদের পাওনা পরিশোধ করুন
কোরবানির পশুর গোশত, চর্বি, ভুড়ি বিক্রি করা বা পারিশ্রমিক হিসেবে দেওয়া জায়েজ নেই। যদি বিক্রি করা হয়ে থাকে তবে মূল্য দান করে দিতে হবে। ভিন্ন ধর্মাবলম্বীদের কোরবানির গোশত উপহার দেওয়া কিংবা দান করা জায়েজ।
বিএসডি/সাজ্জাদ