নিজস্ব প্রতিবেদক
একটি অপশক্তি জুলাই বিপ্লবকে প্রতিবিপ্লবে পরিণত করার চক্রান্তে লিপ্ত বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবিরের কেন্দ্রীয় সভাপতি মঞ্জুরুল ইসলাম।
শনিবার (৭ ডিসেম্বর) দুপুরে রাজধানীর শাহবাগে অবস্থিত জাতীয় জাদুঘরের কবি সুফিয়া কামাল মিলনায়তনে এই প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আয়োজন করে ছাত্রশিবির। জাতীয় চেতনায় জুলাইকে চিরভাস্বর রাখার লক্ষ্যে ‘ফ্রেমেবন্দি ৩৬ জুলাই : অভ্যুত্থানের পূর্বাপর’ শীর্ষক দুদিনব্যাপী ফ্যাসিবাদবিরোধী আলোকচিত্র প্রদর্শনীর উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে এ মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, শহীদদের সেই ত্যাগ এবং আহত ও পঙ্গুত্ববরণকারীদের আত্মত্যাগকে যথাযথ স্বীকৃতি দিতে যেন অনেকেরই দ্বিধা রয়েছে। যে আন্দোলনে মা তার সন্তানকে শহীদ করার স্বপ্ন নিয়ে মাঠে নেমেছিলেন, সেই চেতনা আজ অনেকেই ধারণ করতে পারছে না।
শিবির সভাপতি বলেন, বিপ্লব-উত্তর এই বাস্তবতায় সেই আত্মত্যাগের স্পিরিটকে ধরে রাখাই এখন সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে মঞ্জুরুল ইসলাম বলেন, শহীদ আবু সাঈদ, মুগ্ধ, ওয়াসিম, শান্তদের আত্মত্যাগে সূচনা হয়েছিল চব্বিশের ফ্যাসিবাদকে এদেশ থেকে বিতাড়িত করার সংগ্রামের। চব্বিশের আন্দোলন ছিল সব দলমত নির্বিশেষে ছাত্রজনতার এক অভূতপূর্ব বিপ্লব, যেখানে কোনো একক দলের নয়, বরং পুরো জাতির সম্মিলিত প্রচেষ্টায় বিজয় অর্জিত হয়েছিল।
ইসলামী ছাত্রশিবির সভাপতি মঞ্জুরুল বলেন, ১৭৫৭ সাল থেকে ১৯৪৭ পর্যন্ত আমাদের এই উপমহাদেশে, বিশেষ করে বাংলায়, সাহিত্য-সংস্কৃতির চর্চা এবং দেশের অগ্রগতি ও উন্নয়নের পথে সবচেয়ে বড় প্রতিবন্ধকতা ছিল ব্রিটিশসহ একটি আদিপত্যবাদী শক্তি। তারা এখনও আমাদের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্বে হস্তক্ষেপের নীলনকশা করেই যাচ্ছে।
তিনি আরো বলেন, চব্বিশের গণঅভ্যুত্থানের আগে মিডিয়ার স্বাধীনতা বলতে কিছুই ছিল না। মানুষের কথা বলার স্বাধীনতা ছিল রুদ্ধ। মত প্রকাশের সুযোগ থেকে মানুষকে বঞ্চিত করে রাখা হয়েছিল। যখন আমরা, বিশেষ করে ইসলামী ছাত্রশিবির এবং ফ্যাসিবাদবিরোধী শক্তি, তাদের বিরুদ্ধে কথা বলেছি, তখনই জুলুম, নির্যাতন এবং নিপীড়নের সম্মুখীন হয়েছি।
ছাত্রশিবিরের সেক্রেটারি জেনারেল জাহিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে চব্বিশের আন্দোলনের অভিজ্ঞতা ও স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য রাখেন শহীদ আদিলের বাবা আবুল কালাম, মোহাম্মদপুর বাসস্ট্যান্ডে পেটে গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হেলাল উদ্দিন এবং আন্দোলন চলাকালীন গ্রেপ্তার হওয়া আলোচিত হাসনাতুল ইসলাম ফাইয়াজ।
প্রদর্শনীটি ৭ ও ৮ ডিসেম্বর বেলা ১১টা থেকে সন্ধ্যা ৭টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে।