নিজস্ব প্রতিবেদক
ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটি ও আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটির দুই শিক্ষার্থীসহ বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনে যুক্ত তিনজনকে হত্যার ঘটনায় জড়িতদের গ্রেপ্তার এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতিতে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়ার দাবি জানিয়েছে জাতীয় নাগরিক কমিটি। একইসঙ্গে নিষিদ্ধঘোষিত সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার দাবি জানানো হয়েছে।
বুধবার (১৮ ডিসেম্বর) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এসব দাবি জানায় জাতীয় নাগরিক কমিটি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, আমরা অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে লক্ষ করছি যে সম্প্রতি ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের যোদ্ধারা প্রাণনাশের হুমকি, হামলা ও হত্যার শিকার হচ্ছেন। গত বৃহস্পতিবার আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশের শিক্ষার্থী ওয়াজেদ সীমান্ত নারায়ণগঞ্জে ছিনতাইকারীর ছুরিকাঘাতে আহত এবং পরবর্তী সময়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। একইদিনে গাজীপুরের কালিয়াকৈরে ইস্ট ওয়েস্ট ইউনিভার্সিটির শিক্ষার্থী তাজবীর হোসেন ছিনতাইকারীদের ছুরিকাঘাতে ঘটনাস্থলেই মৃত্যুবরণ করেন। মঙ্গলবার রাতে চট্টগ্রাম মহানগরীতে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম যোদ্ধা জসিম উদ্দিন স্থানীয় সন্ত্রাসীদের ছুরিকাঘাতের শিকার হন এবং চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন। এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনাগুলোর দুটিতে ইতিমধ্যে সাতজনকে গ্রেপ্তার করেছে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
এতে বলা হয়, এসব হত্যার ঘটনায় আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যথেষ্ট অবনতি পরিলক্ষিত হচ্ছে। আত্মপ্রকাশের পর থেকেই জাতীয় নাগরিক কমিটি বলে আসছে অভ্যুত্থান-পরবর্তী বাংলাদেশে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীকে মানুষের জানমাল রক্ষায় কার্যকর পদক্ষেপ নিতে হবে। চার মাস অতিবাহিত হওয়ার পরও এমন পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে আমরা উদ্বিগ্ন। নতুন বাংলাদেশে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়কে নাগরিকদের সার্বিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার দাবি জানাই।
বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়েছে, এছাড়াও আমরা অত্যন্ত উদ্বেগের সঙ্গে দেখতে পাচ্ছি ফ্যাসিবাদী হাসিনার দোসর গণহত্যাকারী আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ এবং এদের উচ্ছিষ্টভোগীরা এখনো দেশে ও বিদেশে সক্রিয় অবস্থায় রয়েছে। সাম্প্রতিক ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ফ্যাসিবাদের উচ্ছিষ্টভোগীদের দ্বারা ছাত্রহত্যার নির্দেশ প্রদান এবং গণহত্যাকারী ছাত্রলীগ কর্তৃক অভ্যুত্থানের শক্তি তরুণদের রক্ত চেয়ে বিবৃতি উক্ত ঘটনাগুলোর সঙ্গে তাদের সংশ্লিষ্টতাকে ইঙ্গিত করে। আমরা আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে এ বিষয়টি আমলে নিয়ে অনতিবিলম্বে হত্যার ঘটনাগুলোর তদন্তপূর্বক নেপথ্য তথ্য উদঘাটনের আহ্বান জানাই। পাশাপাশি নতুন বাংলাদেশে অবস্থানরত নিষিদ্ধ ফ্যাসিবাদী সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের দ্রুত আইনের আওতায় আনার জোর দাবি জানাই।
অন্যদিকে বুধবার বিকেলে এক সংবাদ সম্মেলনে জাতীয় নাগরিক কমিটির মুখপাত্র সামান্তা শারমিন বলেন, আমরা দেখছি নানা জায়গায় শিক্ষার্থী গুপ্ত হত্যা হচ্ছে। এটা অ্যাড্রেস করা খুবই জরুরি। গুপ্তহত্যার ব্যাপারে সরকার কী অবস্থান নেবে? কী ব্যবস্থা গ্রহণ করবে? ২৪ ঘণ্টা মধ্যে তাদেরকে জানাতে হবে।