আন্তর্জাতিক ডেস্ক
গ্রিনল্যান্ড ও পানামা খালের নিয়ন্ত্রণ নেওয়ার বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প যেন অনড়। একইসঙ্গে এ বিষয়ে তিনি হুমকিও দিয়ে চলেছেন।
মূলত গ্রিনল্যান্ড ও পানামা খালের নিয়ন্ত্রণ নিতে কিছুদিন আগে তিনি যে ইচ্ছাপোষণ করেছিলেন, সেখান থেকে সরে আসার কোনও লক্ষণও দেখা যাচ্ছে না। বরং ওই দুই এলাকাকে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য গুরুত্বপূর্ণ অভিহিত করে সেগুলোর নিয়ন্ত্রণ নিতে ক্রমাগত হুমকি দিয়ে যাচ্ছেন রিপাবলিকান এই নেতা।
এদিকে ট্রাম্পের হুমকি-ধামকির পরও ডেনমার্ক ও পানামা স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছে, তারা কোনও পরিস্থিতিতেই নিজেদের ভূমির মালিকানা ছাড়বে না। তাহলে ট্রাম্প ঠিক কীভাবে গ্রিনল্যান্ড এবং পানামা খালের নিয়ন্ত্রণ নেবেন?
তিনি কি সামরিক বা অর্থনৈতিক শক্তি ব্যবহার করে ভূখণ্ড দুটি দখল করার চিন্তা করছেন? সাংবাদিকরা প্রশ্ন করেছিলেন যুক্তরাষ্ট্রের নবনির্বাচিত প্রেসিডেন্টকে। জবাবে ট্রাম্প বলেন, “না, এই দুটির কোনোটির ব্যাপারেই আমি আপনাদের আশ্বস্ত করতে পারছি না। তবে আমি এটা বলতে পারি, (যুক্তরাষ্ট্রের) অর্থনৈতিক নিরাপত্তার জন্য ওই এলাকাগুলো আমাদের প্রয়োজন।”
মেক্সিকো উপসাগরের নাম পরিবর্তন করে “আমেরিকা উপসাগর” রাখার পরামর্শও দিয়েছেন নবনির্বাচিত এই মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
এদিকে গ্রিনল্যান্ড ও পানামা খালের বিষয়ে এই ধরনের মন্তব্য করাকে ট্রাম্পের আলোচনা এগিয়ে নেওয়ার একটি কৌশল বলে মনে করছেন অনেকে। অবশ্য পাশের দেশ কানাডাকেও যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে একীভূত করার প্রচেষ্টা চালাবেন কি না এমন প্রশ্নের জবাবে ট্রাম্প “অর্থনৈতিক শক্তি” কাজে লাগানোর কথা বলেছেন।
যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডার মধ্যকার সীমান্তকে “কৃত্রিমভাবে আঁকা লাইন” বলেও অভিহিত করেন ট্রাম্প। যুক্তরাষ্ট্রের জন্মের সময়েই ওই সীমানা নির্ধারণ করা হয়েছিল। কিন্তু ডোনাল্ড ট্রাম্প মনে করেন, যুক্তরাষ্টের অংশ হওয়া উচিৎ কানাডার।
ট্রাম্পের ভাষায়, “তাদের একটি (মার্কিন) অঙ্গরাজ্য হওয়া উচিৎ।”
নবনির্বাচিত এই মার্কিন প্রেসিডেন্ট বলেছেন, কানাডাকে রক্ষা করতে মার্কিন সরকার এতদিন কোটি কোটি ডলার খরচ করেছে। কানাডা থেকে মার্কিন সরকার এতদিন যে গাড়ি, কাঠ ও দুগ্ধজাত পণ্য আমদানি করেছে, সেটিরও সমালোচনা করেন তিনি।
তবে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে কানাডার একীভূত হওয়ার “কোনও সুযোগ নেই” বলে জানিয়েছেন দেশটির বিদায়ী প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। পদত্যাগের ঘোষণা দিলেও ট্রুডো এখনও প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করছেন।
এদিকে ট্রাম্প এমন এক সময় গ্রিনল্যান্ড ও পানামা খালের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে মন্তব্য করলেন, যার আগে তার ছেলে ডোনাল্ড ট্রাম্প জুনিয়র গ্রিনল্যান্ড সফর করেছেন। যদিও সফরের বিষয়ে জানতে চাইলে ট্রাম্প জুনিয়র সাংবাদিকদের বলেছিলেন, তিনি গ্রিনল্যান্ডের বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলার জন্য “ব্যক্তিগত সফরে” যাচ্ছেন।
আর ডেনমার্কের স্বায়ত্তশাসিত অঞ্চলটির সরকারি কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করার কোনও পরিকল্পনা নেই বলেও জানিয়েছিলেন তিনি।