নিজস্ব প্রতিবেদক
মাধ্যমিকের সদ্য প্রকাশিত সপ্তম শ্রেণির ‘বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়’ বিষয়ে মুক্তিযুদ্ধে মহান শহীদের সংখ্যা জানাতে ৩০ লাখের পরিবর্তে ‘লাখো’ শব্দটি ব্যবহার করা হয়েছে। পাঠ্য বইটিতে আগে মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের কথা উল্লেখ ছিল।
জানা গেছে, সপ্তম শ্রেণির ‘বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়’ বইটি শিক্ষার্থীরা প্রথম হাতে পান ২০১২ শিক্ষাবর্ষে। ২০১৪ সালে সেটির প্রথম পরিমার্জন হয়। তারপর ২০১৭ ও ২০২০ সালে আরও দুই দফা পরিমার্জন হয়। তবে ২০২৩ শিক্ষাবর্ষে বইটি বাদ দেওয়া হয়। ওই বইটির প্রথম অধ্যায়ে বাংলাদেশের স্বাধীনতা সংগ্রাম অধ্যায়ের শেষদিকে লেখা ছিল, ‘৩০ লক্ষ শহীদের রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ পৃথিবীর বুকে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। ২০২৪ সালে নতুন শিক্ষাক্রমের আওতায় একই শ্রেণির জন্য ‘ইতিহাস ও সামাজিক বিজ্ঞান’ নামে যে বইটি চালু করা হয় সেটিতেও ৩০ লাখ শহিদের কথা উল্লেখ ছিল।
এনসিটিবির ওয়েবসাইট থেকে চলতি শিক্ষাবর্ষ অর্থাৎ ২০২৫ সালের সপ্তম শ্রেণির ‘বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়’ বইটির প্রথম অধ্যায়ে ‘বাংলাদেশের মুক্তিসংগ্রাম’ শীর্ষক অধ্যায়ের শেষ দিকে লেখা আছে, ‘লাখো শহীদের রক্তের বিনিময়ে বাংলাদেশ পৃথিবীর বুকে স্বাধীন ও সার্বভৌম রাষ্ট্র হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে।
যদিও তৃতীয় শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয়, ষষ্ঠ এবং নবম-দশম শ্রেণির একই বিষয়ের বইয়ে সুনির্দিষ্টভাবে মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা উল্লেখ করা হয়নি। তবে প্রাথমিকের চতুর্থ ও পঞ্চম এবং মাধ্যমিকের অষ্টম শ্রেণির বইয়ে মুক্তিযুদ্ধ অধ্যায়ের লেখায় ৩০ লাখ শহীদের কথা উল্লেখ রয়েছে। চতুর্থ শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইটিতে লেখা রয়েছে, ১৯৭১ সালের ১৬ই ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট নয় মাস মুক্তিযুদ্ধ চলে। এ যুদ্ধে ত্রিশ লক্ষ মানুষ শহীদ হন, অসংখ্য মানুষ পঙ্গু হন, অনেকেই ঘরবাড়ি হারান।
পঞ্চম শ্রেণির বইয়ে ২৫ মার্চের গণহত্যা নিয়ে লেখা একটি অনুচ্ছেদের মধ্যে মুক্তিযুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের বিষয়টি তুলে ধরা হয়েছে। তাছাড়া অষ্টম শ্রেণির বাংলাদেশ ও বিশ্বপরিচয় বইয়েও ৩০ লাখ শহীদের কথা উল্লেখ রয়েছে।
মুক্তিযুদ্ধে শহীদের সংখ্যা নিয়ে পাঠ্যবইগুলোতে এমন বৈপরীত্যে সম্পর্কে জানতে চাইলে এনসিটিবির চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. এ কে এম রিয়াজুল হাসান বলেন, বিষয়টি আমাদের নজরে এসেছে। একেক বইয়ে একেক রকম তথ্য কীভাবে আসলো তা যাচাই করা হচ্ছে।
তিনি আরও বলেন, প্রত্যেকটি বিষয়ের কাজ করার জন্য বিষয়ভিত্তিক বিশেষজ্ঞদের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল। তারা পরিমার্জনের কাজ করেছেন। কোথাও যদি কোনো ত্রুটি পরিলক্ষিত হয়, তা সংশোধনী দেওয়া হবে।